সময়ক্রম: সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে থাইল্যান্ডে ১৪ জনের জেল

Timeline of the struggle for democracy of the 14 activists.

১৪ আন্দোলনকারীর গণতন্ত্রের লড়াইয়ের সময়ক্রম। তৈরি করেছেন প্রাচাতাই।

মূল পোস্টটি থাইল্যান্ডের স্বাধীন সংবাদ ওয়েবসাইট প্রাচাতাই-এর। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর সাথে কনটেন্ট শেয়ারিং চুক্তির আওতায় পোস্টটি এখানে প্রকাশিত হয়েছে। সামরিক শাসনবিরোধী ১৪ আন্দোলনকারীকে আটক ও তাদের জেল-হাজতে পাঠানো নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদও তাদের মুক্তির দাবি করেছেন।

সামরিক আদালতে সাত বছরের জেল আর স্বৈরাচারী শাসক কর্তৃক নানা ধরনের হয়রানির ঝুঁকি সত্ত্বেও ১৪ জন আন্দোলনকারী রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। এদের বেশিরভাগই আবার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, নিও ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট (এনডিএম)-এর কর্মী। তাদের দাবি ছিল একটাই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

এই ১৪ আন্দোলনকারী হলেন:

১. রাংসিমান রোম
২. ওয়াসন সেথাসিট
৩. সংথাম কেউপানপ্রায়ুক
৪. ফায়ু বনসোপন
৫. আপিওয়াত সনতারারাক
৬. রাত্তাপন সুপসোপন
৭. সুপাচাই ফুক্লংপ্লই
৮. আবিসিট সুয়েবনাপা
৯. পানুপং শ্রীতানানুওয়াত
১০. সুওয়াইচা পিতাংকর্ন
১১. পাকর্ন আরেকুল
১২. জাতুপাট বুনপাত্তারারাকসা
১৩. পর্নচাই ইয়ানই
১৪. কনটিচা জানগ্রিউ

২২ মে ২০১৫

অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা থাইল্যান্ডের দু’টি স্থানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে। স্থান দু’টি হলো ব্যাংকক এবং খন কায়েন। উল্লেখ্য, এদিন ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর পিস অ্যান্ড অর্ডার (এনসিপিও) অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের শাসন ক্ষমতা দখল করেছিল।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকারী এবং শিক্ষার্থীরা ব্যাংকক আর্ট অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। এ সময়ে পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের উপর হামলা চালায়। পুলিশি হামলায় কমপক্ষে তিনজন আহত হন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সমাবেশ থেকে পুলিশ আরো ৩৭ জনকে ধরে নিয়ে জেল-হাজতে প্রেরণ করে। আটককারীদের সাহস দিতে ১০০ জনের বেশি আন্দোলনকারী পাথুমওয়ান পুলিশ স্টেশনের সামনে জড়ো হন। আটককৃতদের মধ্য থেকে ৮ জনকে শুনানির জন্য আদালতে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে মাত্র একজন জামিনে মুক্তি পান।

অন্যদিকে থন কায়েনে অভ্যুত্থান বার্ষিকীতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় মানবাধিকার এবং পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ডাও দিন। একদল শিক্ষার্থী সংগঠনটি পরিচালনা করে থাকেন। সেখান থেকে ৭ জন আন্দোলনকারীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। তবে পরের দিন সবাই জামিনে মুক্তি পান।

১৯ জুন ২০১৫

ডাও দিন সংগঠনের তিনজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে। তাদের আটকের পিছনে কারণ হলো, তারা এমন সব চিত্রাংকন করেছিলেন, যেখানে সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী বার্তা ছিল।

২৪ জুন ২০১৫

শান্তিপূর্ণ সমাবেশের উপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ব্যাংককের সামওয়ান জেলায় পাথুমওয়ান পুলিশ স্টেশনের কাছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।

তাদের সাথে পরে ডাও দিনের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়। তারা মূলত আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন দিতেই সেখানে গিয়েছিলেন। পরে তারা সবাই মিলে নিও ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট-এর ইশতেহার ঘোষণা করেন। সাধারণ জনগণকে আন্দোলনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের অভিযোগ প্রত্যাখান করেন।

রাতে সবাই চলে গেলে সমাবেশ থেকে ফেরার পথে পুলিশ একজন নারী আন্দোলনকারীকে আটক করে। তবে তার সুপারভাইজারের সাথে কথা বলে পুলিশ মেয়েটিকে ছেড়ে দেয়।

২৫ জুন ২০১৫

সুয়ান এনগুয়েন মী মা এলাকায় আন্দোলনকারীরা যখন সামরিক অভ্যুত্থান এবং সামরিক ফরমানবিরোধী ইশতেহার পড়ছিলেন তখন অফিসার এবং সাদা পোশাকে পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে রাখে। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেয়, তাদের যদি গ্রেফতার করা হয়, তাহলে তারা তা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে না। তারা বিকেল ৫টায় ব্যাংককের ডেমোক্রেসি মনুমেন্টের সামনে সবাইকে জড়ো হওয়ার আহবান জানায়।

২৬ জুন ২০১৫

সামরিক আদালত নিও ডেমোক্রেসি মুভমেন্টের ১৪ কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। সামরিক শাসকের জারি করা এনসিপিও অর্ডার নং ৩/২০১৫ এবং ভায়োলেটিং এনসিপিও অর্ডার নং ৭/২০১৪ ফরমানে পাঁচজনের বেশি ব্যক্তির রাজনৈতিক সমাবেশকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ১৪ জনকে ২২ মে ২০১৫-এ বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে আটক করা হয়েছিল। প্রথমে তাদের ফ্রা রাটচাওয়ান থানায় রাখা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের ব্যাংকক রেমান্ড প্রিজনে পাঠানো হয়।

২০১৫ সালের জুলাইয়ের তিন তারিখে আটককৃত ১৪ কর্মীর প্রতি সমর্থন দিতে “পোস্ট ইটস ফর ফ্রিডম” কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। সেখানে কয়েক হাজার থাই নাগরিক জড়ো হয়েছিলেন।

Exit mobile version