যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বিছানো লাল গালিচা

জর্ডান ভিত্তিক কারামা মানবাধিকার চলচ্চিত্র উৎসবের কারণে গাজার শুজা’ঈয়া এলাকায় বিছানো হয়েছে লাল গালিচা।

শুজা’ঈয়া এলাকাকে আবার শেজাইয়া নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে, যে এলাকাটিকে কারামা চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বেছে নেওয়ার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত প্রতীকী। এটা এই গাজা উপদ্বীপের অন্যতম এক দারিদ্র্য কবলিত এবং সবচেয়ে ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা, এবং গত গ্রীষ্মে গাজায় ইজরায়েলী সেনা অভিযানের সময় এখানেই শুজা’ঈয়া গণহত্যা সংঘঠিত হয়। ২০ জুলাই, ২০১৪-এ সংঘঠিত এই গণহত্যার ঘটনায় অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়।

কারামা (আরবী ভাষায় যার অর্থ হচ্ছে ‘মর্যাদা”) উৎসব, যা গতকাল (১৩ মে ২০১৫) শুরু হয়ে আজকে (১৪ ম৩ ২০১৫) শেষ হয়েছে, এই চলচ্চিত্র উৎসব নিজেকে বর্ণনা করছে এভাবে যে এটি এমন এক প্লাটফর্ম যা চলচ্চিত্রের মত শিল্পকে ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মত ঘটনাবলিকে তুলে ধরছে যেহেতু এই সমস্ত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিষয়গুলো বৃহত্তর জনতার সাথে চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিল্পী, একটিভিস্ট এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডার (অংশীদার) একত্রিত করে আন্ত সাংস্কৃতিক স্থাপনা তৈরীর এক মাধ্যম, যা জন সচেতনতা বৃদ্ধি ও তাদের সেই সমস্ত কাজে যুক্ত হতে উৎসাহ প্রদান করে, যে সব বিষয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ঘটনা নির্মূল করতে সক্ষম।

কারামা গাজা চলচ্চিত্র উৎসবে যে সমস্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে “আমি মানুষ” ( রাজান হাইকাল, জর্ডান/ জার্মানী), “বাগদাদের মেসি” (সাহিম ওমর খলিফা, ইরাক) এবং “রোশমিয়া” (সালিম আবু জাবাল, ফিলিস্তিন)।

লাল গালিচা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার চারপাশে রয়েছে গত গ্রীষ্মে সংঘঠিত ধ্বংসলীলার চিহ্ন। (সূত্র কারামা গাজা চলচ্চিত্র উৎসবের ফেসবুক পাতা)

গাজার নাগরিকরা কারামা চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত একটি চলচ্চিত্র উপভোগ করছে। (সূত্র কারামা গাজা চলচ্চিত্র উৎসবের ফেসবুক পাতা)

গাজা ভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক ড্যান কোহেন এই উৎসবকে, ফিলিস্তিনিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার এক প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছেন:

শুজা’ঈয়ার ধ্বংসস্তূপের মাঝে লাল গালিচা বিছানো হয়েছে। এই ধ্বংসলীলা থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার কি নিদারুণ এক প্রদর্শনী।

এই গণহত্যার কয়েক মাস পরে, ডেমোক্রেসি নাও (গণতন্ত্র এখনই) ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ সৃষ্টিকারী ইজরায়েলী নাগরিক এরান এফারাতি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে, যাকে এই শুজা'ঈয়ার গণহত্যার ঘটনার সাথে যুক্ত থাকা ইজরায়েলী সেনাদের গ্রহণ করা সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরী করা এক বিস্তারিত লেখা পোষ্ট করার পর ইজরায়েল গ্রেপ্তার করে। এফরাতি এই গণহত্যার বিষয়ে কথা বলেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২৩ বছর বয়স্ক সালেম খালেলি শামালাই-এর হত্যাকাণ্ড, যে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক সংহতি আন্দোলন (ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্ট) চলচ্চিত্রে ধারণ করেছে।

Exit mobile version