সামরিক আইন তুলে নেয়ার এক দিন পর দক্ষিণ থাইল্যান্ডে পাতানো শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

Thai Muslims gather in solidarity against army detention of  students. Photo from Free Voice, used with permission.

সামরিক বাহিনী কর্তৃক শিক্ষার্থীদের প্রতি শাস্তিমূলক আচরণের প্রতিবাদে সংহতি প্রকাশ করতে থাই মুসলমানেরা একত্রিত হয়েছেন। ছবি সূত্র ফ্রি ভয়েস, অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত হয়েছে।

থাইল্যান্ডে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জাতীয় পরিষদ সে দেশে জারি করা মার্শাল ল (সামরিক আইন) তুলে নেয়ার এক দিন পর সামরিক কর্মকর্তারা নারাধিওয়াস রাজকুমারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। সংঘাতে ক্ষতবিক্ষত নারাথিওয়াত প্রদেশে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত।  

গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের অতিসত্বর মুক্তি দেয়ার এবং পাতানি, ইয়ালা এবং নারাথিওয়াত অঞ্চলে ‘বহাল রাখা’ সামরিক আইন তুলে ফেলতে সামরিক জান্তার প্রতি দাবি জানিয়ে পাতানি শিক্ষার্থী এবং তরুণ ফেডারেশন (পারএমএএস) একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এ অঞ্চলগুলো সাধারণত মুসলিম প্রধান “দীর্ঘ দক্ষিণ” হিসেবে পরিচিত।  

গত কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহ, দারিদ্র্য এবং তীব্র মাত্রায় সামরিকীকরণের দরুন দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এই সংঘাতের ফলে অনেক বেসামরিক লোকের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেননা সরকারের সামরিক বাহিনী প্রায়ই এদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনীকে সমর্থন অথবা তাদের প্রতি সমবেদনা জানানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।

পাতানি শিক্ষার্থীরা এরপর “কণ্ঠস্বর মুক্ত কর” নামক একটি প্রচার মাধ্যম কার্যক্রম শুরু করে। গ্লোবাল ভয়েসেসকে জানানো হয়, নারাথিওয়াত রাজনাখারিন হাসপাতাল, কামপং তাকো’র, পলিটেকনিক কলেজ এবং লরং নারাকুলের বেশ কয়েকটি ছাত্রাবাসে সামরিক তল্লাশি চালিয়ে এই শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

সাজাপ্রাপ্ত এই শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো থাই সামরিক বাহিনীর জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে। ফ্রি ভয়েস এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া ছবি।

প্রচন্ড নিরাপত্তার মাঝে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জবাবের জন্য তাদের সন্ধানী সফর চালাতে হয়। ফ্রি ভয়েস এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া ছবি।

“কণ্ঠস্বর মুক্ত কর” কার্যক্রমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সাজাপ্রাপ্তদের নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষার্থী এবং তরুণেরা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদের মাঝে অনেকেই সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করার এবং তাদের মুক্তির জন্য আবেদন জানানোর চেষ্টা করেছেন। এটি আরও জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ ২০ জনের মাঝে ১১ জন শিক্ষার্থীকে জুলাপরন সামরিক শিবির, কাওতানিয়ং সামরিক শিবির এবং পিলেং (সামরিক) শিবিরে কারাদন্ড দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপ থাই সামরিক বাহিনীর কাছে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহসান চিকওয়ান পাতানির ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া ছবি।

শিক্ষার্থী এবং তরুণেরা সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছেন। ছবি সূত্র ফ্রি ভয়েস।

স্বাধীনতার জন্য র‍্যালি চলাকালীন একজন সামারিক কর্মকর্তার তোলা ছবি। ছবি সূত্র ফ্রি ভয়েস।

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ থেকে পাওয়া সমর্থন। হারমান্তো মুহাম্মাদের ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া ছবি।

যখন এ বিষয়ে জনগণের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছে, তখন ফ্রি ভয়েস বলেছে, শিক্ষার্থী সম্প্রদায়টি ব্যাংকক, এমনকি আশেপাশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকেও সমর্থন পেয়েছেঃ

এ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার আচেহ এবং মালয়েশিয়াতে আমরা ছোট কিন্তু সুবিচারের জন্য আন্দোলন আরও বেগবান হতে দেখেছি। আমরা আশা করছি, আমাদের সতীর্থ শিক্ষার্থীদের মুক্তি চেয়ে আরও বেশি দাবি জানানো হবে। 

অনেক অধিবাসী বিশেষকরে মুসলিম সম্প্রদায় সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে অন্যান্য প্রদেশের কাছ থেকে একঘরে বোধ করছে। সম্প্রদায়টি আগে যতোটা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ভীতি প্রদর্শনের মুখোমুখি হয়েছে তা যেন সাম্প্রতিক এই সাজাপ্রাপ্তির পর আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। বিদ্রোহী এবং সামরিক জান্তার মাঝে আসন্ন শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়াকে হয়তোবা এটি প্রভাবিত করতে পারে।

Exit mobile version