ভিডিও: হংকং এ ছেলে বন্ধুকে বিচার করা হয় তাঁর আবাসন দেখে

সম্পত্তির আকাশচুম্বি দামের কারণে জীবন ধারণের জন্য হংকং বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থান। একজন বহিরাগতের জন্য এখানকার সম্পত্তির মূল্য সত্যিই খুব অযৌক্তিক অংক। স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে এটি অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতো। এমন এক দুঃস্বপ্ন যা জীবনের প্রতিটি দিকের উপর প্রভাব ফেলে। এমনকি মাঝে মাঝে মানুষের সম্পর্কের উপরও তা প্রভাব বিস্তার করে।

এই দুঃস্বপ্নটি “বান্ধবী আপনাকে রাতের খাবার খাওয়াতে বাড়িতে নিয়ে আসে” [ম্যান্ডারিন] শিরোনামের একটি অনলাইন ছোট গল্পের মাধ্যমে চিত্রিত করা হয়েছে। বেনামী ছদ্মনামের অধীনে গোল্ডেন গডফাদার নামক একটি জনপ্রিয় অনলাইন ফোরামে গল্পটি চিত্রিত করা হয়েছে। এ বছরের শুরুতে ফোরামটির নাম ছিল গোল্ডেন ফোরাম।

এই গল্পটির দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে রনি চাউ পরে গল্পটিকে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের আকারে রূপ দিয়েছেন। তিনি একজন রাজনৈতিক ধারাভাষ্য ভিডিও প্রযোজক। তাঁর বানানো স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নাম “সরকারি আবাসন, ব্যক্তি-মালিকানাধীন এ্যাপার্টমেন্ট, ব্যক্তিগত এ্যাপার্টমেন্ট”। চলচ্চিত্রটি হংকং এ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। 

হংকং এ চীনা পরিবারের কিছু গৎবাঁধা দৃশ্যের মধ্য দিয়ে ভিডিওটি শুরু করা হয়েছে। এখানে দেখা যায়, মা আশা করেন তাঁর মেয়েটি তুলনামূলক ধনী একজন প্রেমিক বাছাই করে তাঁর জীবনকে আরও উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যাবে। যেহেতু হংকং এ একজন মানুষের স্থানীয় ঠিকানা তাঁর অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটায়, তাই এই ভিডিওটিতে মা তাঁর মেয়েটির প্রেমিককে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করে যে, সে কোথায় থাকে। এখানে তিনটি দৃশ্য আছে –সরকারি আবাসন, ব্যক্তি-মালিকানার পরিকল্পনার অধীন সরকারি ভর্তুকি দেয়া আবাসন এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন এ্যাপার্টমেন্ট। মেয়েটির মা সে অনুযায়ী তাঁর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন।

খুব অল্প সময়ের মাঝে ভিডিওটি ১ লক্ষেরও বেশি বার দেখা হয়েছে এবং অনেকে অনেক ধরণের মন্তব্য করেছেন। চিরাচরিত বস্তুবাদী “চীনা মাকে” নিয়ে মজা করে ভিডিওটিতে যখন মানুষের মাঝের সম্পর্কগুলোকে খুব বেশি বাড়িয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে, তখন অনেক নেটিজেনই বিশ্বাস করছেন যে গল্পটিতে বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছেঃ 

কেএইচএল১ইউ১০০১০১৬: উদ্ভট সত্য…

এ্যালান অং: খুব বাস্তববাদী…

জেমস চোউ২: যেহেতু এটা সত্যি, তাই এটা বেশ দুঃখজনক এবং মজার। একজন মানুষ কোথায় থাকে এবং কি করে তা দিয়ে হংকং এর লোকেরা অন্য লোকেদেরকে বিচার করে থাকে…  

আঞ্জেলিনা লো, যিনি এই ভিডিওটিতে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তিনি এটা জানতে খুবই আগ্রহী যে তাঁর মেয়ের ছেলে বন্ধু কোথায় থাকে ? ইউটিউব থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। 

এঞ্জেলিনা লো এখানে “মায়ের” ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তিনি হংকং এর একজন অভিজ্ঞ অভিনয় শিল্পী। ইউটিউবে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছেনঃ 

ডব্লিউএইচঅং২৮৮১: এই ছেলেটির বলা উচিৎ ছিলঃ না আমি আপনার মেয়েকে পছন্দ করি না। কারন, আপনি একজন বেয়াদব লোভী মহিলা।  

এবিসিনোমান০১১: তারা লোভী মহিলা নন। যেহেতু হংকং’এ একটি এ্যাপার্টমেন্টের দাম অযৌক্তিকভাবে এতো বেশি যে একজন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এখানে মা শুধু চান তাঁর মেয়ে এমন কারও সাথে প্রেম করবে যার ব্যক্তিগত একটি এ্যাপার্টমেন্ট আছে অথবা নিদেন পক্ষে যার নিজের একটি এ্যাপার্টমেন্ট আছে। তিনি এমনটি চিন্তা করছেন যেন ভবিষ্যতে তাঁর মেয়েকে দুরবস্থায় পরতে না হয়। এটা খুব দুঃখজনক হলেও সত্যি। মায়ের এমন চিন্তার পেছনের উদ্দেশ্যটি ভাল। একটি এ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য টাকা জমাতে তাকে হয়তোবা অতীতে অনেক কষ্টকর পরিস্থিতে পড়তে হয়েছে। তিনি নিশ্চয়ই চান না তাঁর মেয়েকেও তাঁর মতো একই রকম কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হোক। খুব দুঃখজনক!!!!!!!!! 

টিএসজেড এনজি২: মিস লো একজন দুর্দান্ত অভিনেত্রী। একই চরিত্রে তিন ধরনের স্বরে অভিনয় করা। একজন মা হিসেবে তিনি তাঁর মেয়ের জন্য শুধুমাত্র একটি সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আশা করেছেন।  

তথাপি আমাদের সমাজ খুব গভীরভাবে পশ্চিমা সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যেখানে আমরা মানুষ হিসেবে আমাদের মৌলিক বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি।  

সচেতন হতে হলে এবং আমাদের সমাজকে শুদ্ধিকরণ করে আবার সঠিক পথে নিয়ে যেতে হলে আমাদের আরও লোক প্রয়োজন। 

মূল সমস্যা হচ্ছে, অবশ্যই সম্পত্তির এমন উন্মত্ত দাম। আর এর কারণ হল, বিনিয়োগের জন্য অর্থের সীমাহীন প্রবাহ এবং ফটকামূলক মূলধনের উপস্থিতিঃ 

আসুকা কেঃ আন্টিকে দোষ দিও না। আসল দোষ সরকারের! 

Exit mobile version