ইথিওপিয়ান সাংবাদিক রিয়ট আলেমুর কারা বন্দী অবস্থার ১,০০০ তম দিন

গত ১৬ মার্চ, ২০১৪ তারিখ ছিল ইথিওপিয়ান সাংবাদিক রিয়ট আলেমুর কারাবন্দী অবস্থার ১,০০০ তম দিন। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। 

Jailed Ethiopian journalist Reeyot Alemu.Photo source: Facebook page of Free Reyoot Alemu campaign.

কারাদণ্ড প্রাপ্ত ইথিওপিয়ান সাংবাদিক রিয়ট আলেমু। ছবিঃ ফ্রি রিয়ট আলেমুর ফেসবুক পাতা থেকে।  

রিয়ট একজন ইংরেজী শিক্ষক। তিনি ইউনেস্কো প্রদত্ত গুইলারমো কানো ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম পুরষ্কার, দ্যা হেলম্যান/ হামেট পুরস্কার এবং ইন্টারন্যাশনাল উইম্যান্স মিডিয়া ফাউন্ডেশন কারেজ ইন জার্নালিজম পুরস্কার পেয়েছেন। 

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) এর তথ্য অনুযায়ী, ইথিওপিয়ান সরকার রিয়ট এবং এসকিনদার নেগা সহ আরও ১১ জন স্বাধীনভাবে কাজ করা সাংবাদিক এবং ব্লগারকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিয়েছে। তাদেরকে একটি সুদূরপ্রসারী সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে এনে দোষী প্রমাণ করে ২০১১ সাল থেকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। কারাদন্ড প্রদান করা সাংবাদিকদের মাঝে দুইজন সুইডিশ সাংবাদিকও আছেন। একটি উপজাতি সোমালি বিদ্রোহী দলের পক্ষ নিয়ে তাদেরকে সমর্থন করায় এই দুইজন সুইডিশ সাংবাদিককে ১১ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।

ব্লগার বেফেকাদু জেড হাইলু এই ব্লগ পোস্টটিতে কারাবন্দী ইথিওপিয়ান সাংবাদিকদের দুর্দশা বর্ণনা করেছেনঃ

কারাদণ্ডে দন্ডিত করার উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে দোষী লোকটিকে নিজেকে শুধরানোর সুযোগ দেয়া, তবে তাকে পড়াশুনা বা শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করার মধ্য দিয়ে সে উদ্দেশ্য পূরণ করা উচিৎ। কালিটি কারাগারে পড়াশুনা এবং শিক্ষা অর্জন, এ দুইটিরই অনুমতি দেয়া হলেও এই সাংবাদিকেরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তাদের সাথে সাথে অন্যান্য যাদেরকে “সন্ত্রাসের” সাথে জড়িত থাকার অপরাধে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তাদেরকেও এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে না।

এই কারাবন্দীদের বাই পড়তে দেয়া হয় না। এসকিনদার বলেছেন, “বিশেষ করে যে সব বইয়ের শিরোনামে ‘ইথিওপিয়া’ বা ‘ইতিহাস’ শব্দগুলো রয়েছে, সেসব বইগুলো আমাদেরকে পড়তে দেয়া হয় না।” রিয়ট আলেমু এবং ইয়ুবশেট তায়ে, বেকেলে গারবা প্রমুখদের মতো অন্যান্যদের ওয়ার্ডের ক্ষেত্রেও এই কথাটি সত্যি।

স্থানীয় স্বাধীন পত্রিকা এবং ম্যাগাজিনগুলোও সেখানে পাওয়া যায় না; এসকিনদার আমাকে আরও বলেছেন, এমনকি বিবিসি এবং আল জাজিরার মতো খবরের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সেখানে সম্প্রচার করা হয় না। বিশেষ করে, তিনি এবং অন্যান্য কারাবন্দীরা কারাগারের যে অংশটিতে বসবাস করেন, সেখানে এই চ্যানেলগুলো প্রচার করা হয় না।

কারাগারের প্রশাসনের বিরুদ্ধে রিয়ট আলেমু কঠিন সংগ্রাম করার পর এবং প্রচার মাধ্যমগুলোতে এই সত্য প্রকাশিত হয়ে পড়ার পর অবশেষে এখন সেখানে দূরশিক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তথাপি কলেজ থেকে সরাসরি যে বইগুলো তাঁর জন্য পাঠানো হয়, সেগুলোর বাইরে অন্যান্য সম্পূরক বইগুলো পাওয়া এখনো তাঁর জন্য খুব কঠিন হয়ে পরে।

#রিয়টআলেমু হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে টুইটার ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন টুইট করেছেন। তারা তাদের টুইটের মাধ্যমে কারাবন্দী সাংবাদিকদের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। সেসব টুইটের কয়েকটি নিচে তুলে ধরা হলঃ 

@লিসামিসলঃ আশা করি এই বিশ্বও তাঁর জন্য ভাবে! যদিও এখনো কোন প্রচারাভিযান! এমটি দেখিনি। ইথিওপিয়ার সাংবাদিক রিয়ট আলেমু কারাগারে তাঁর ১,০০০ তম দিন অতিবাহিত করছেন। 

ইথিওপিয়ার ইপিআরডিএফ সরকার ক্রমাগত দুর্বলতা এবং মানসিক বৈকল্য দেখাচ্ছে। কেননা রিয়ট আলেমুর মতো সাংবাদিকরা দিনের আলোর মতো সবকিছু প্রকাশ করে দিবেন। তারা সে ভয়ই পায়। তাকে মুক্ত করুন।  

#রিয়টআলেমুঃ তৃতীয় বিশ্বের স্বৈরশাসকেরা কেন নিজের মৃত্যুর চেয়েও সাংবাদিকদের বেশি ভয় পায় ? এটি তাদের দূর্বলতার একটি চিহ্ন। তারা বিচক্ষণতা এবং বিচক্ষণ লোকদের ভয় পায়!  

#ইথিওপিয়া – সাংবাদিক #রিয়টআলেমুর আজ কারাগারে ১,০০০তম দিন। তাকে তাঁর পরিবারের লোকজনদের সাথেও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। @এসজেলামব্রিনিদিস – @ইইউ এ্যাশটন নীরব কেন? 

১৬ মার্চ কারাগারে #রিয়টআলেমুর ১,০০০ তম দিন কাটছে। এটি প্রমাণ করে #ইথিওপিয়া স্বৈরশাসন, অবিচার এবং নিপীড়নের দ্বারা শাসিত হচ্ছে। @আনাগোমেজএমইপি @এমেনেস্টি   

#ইথিওপিয়াঃ #সাংবাদিকতা সন্ত্রাসী কার্যক্রম নয়। মুক্ত সাংবাদিকতায় পুরস্কার প্রাপ্ত সাংবাদিক #রিয়টআলেমু। তাঁর #স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করুন।   

Exit mobile version