সিরিয়ার চিত্রকলার দৃশ্যে ঈদের প্রতিচ্ছবি

সিরিয়ার উঠতি প্রতিভা এবং স্বতন্ত্র কণ্ঠ ঈদ উল আযহা সম্পর্কে তাদের মতামত ভাগাভাগি করেছেন। সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে হতাহত এবং উদ্বাস্তুদের সংখ্যা অবিরত বেড়ে যাওয়াই তাঁরা এই উত্সব উদযাপন করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

অন্য দিকে, সঙ্গীতজ্ঞ অয়ায়েল আল্কাক তার সর্বশেষ ট্র্যাক “ঈদের গান” এ সিরিয়ার ঐতিহ্যগত ফোক গানের পরীক্ষা চালিয়েছেন, যা তাম্মাম আজামের “বিদেশ যাত্রা” শিল্পকর্ম দ্বারা অনুপ্রাণিত।

গানটিতে একটি লাইন বার বার এসেছে। আমরা যেভাবে চলি সেটি তাঁর উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর অনুবাদ নিম্নরুপঃ

কেউ কাউকে প্রতিরোধ করতে পারে না
কারণ, সবাই দুঃখী।
কেউ কাউকে প্রতিরোধ করতে পারে না
কারণ সবাই হারিয়েছে (২ বার)।

কেউ কাউকে প্রতিরোধ করা ছেড়ে দিবে না
সবাই হারিয়েছে এই বিবেচনায়।
কেউ কাউকে প্রতিরোধ করা ছেড়ে দিবে না

সবাই পলাতক এই বিবেচনায়।

গানের এই ট্র্যাকটিতে ঈদের প্রতি সাধারণের নিস্পৃহ মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে এবং কীভাবে সিরিয়ার জনগণ ধৈর্য ধারণ করছে তা ফুটে উঠেছে। যাইহোক, আল্কাক এর গান অন্যান্য সিরিয় শিল্পীদের গাওয়া গানের ধাঁচে তৈরি। নীচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হল:

মাহের এ হুসানের আঁকা। সেখানে লিখা আছে,”আমরা আপনার ঈদ করতে চাই না।” 

অয়াজদি সালেহের আঁকা। শিরোনাম,”যেখানে আমাদের শিশুরা শহিদ হয়েছে, সেখানে কোন ঈদ নয়”।   

উঠতি শিল্পী সেদকি আল ইমাম ঠাট্টার সঙ্গে ঈদ দেখিয়েছেন।

হুসাম আল সাদি একটি ক্যরিকেচার এঁকেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে, বাশার আল আসাদ সিরিয়ার মানচিত্রকে জবাই করছেন।  

সুজান ইয়াসিন এঁকেছেন, “শহীদ এবং ঈদের পোশাক।”

মোহাম্মদ হামাই সিরিয়ার ঈদকে একটি রক্তাক্ত উপহার হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অন্যান্য শিল্পীরা বিরোধের মানবিক দিক মোকাবেলা করেছেন এবং উদ্বাস্তুদের দিকে নজর দিয়েছেন:

হানি আব্বাস উদ্বাস্তু শিবিরের সাথে একটি বড় নগরদোলা এঁকেছেন।

কাফ্রানবেলের অধিবাসীদের মন্তব্য ছাড়া সিরিয়ার শিল্প কলার দৃশ্যগুলো যেন মূল্যহীন। টুইটার ব্যবহারকারী রাকান তাদের সর্বশেষ পোস্টারটি টুইট করেছেন:

#সিরিয়া থেকে ঈদ মুবারক 

যাইহোক, এই ধরনের শিল্পে একটি অন্তর্নিহিত বার্তা রয়েছে। আর তা হচ্ছেঃ সিরিয়ার বেঁচে থাকা জনগণ কষ্টে আছে এবং তাঁদের সাহায্য প্রয়োজন। বিশিষ্ট লেখক আমাল হান্নানো এই ভয়ানক বাস্তবতার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সিরিয়ার মানুষ খুবই সহিষ্ণু। উদাহরণস্বরূপ মাংস, অনেকের জন্য তা কেনা খুবই ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।  

এই বছর #সিরিয়ার অনেকে ঈদের জন্য পশু কোরবানি দিতে পারেন নি। লক্ষাধিক মানুষের কাছে মাংস এখন একটি স্বপ্নের পণ্যে পরিণত হয়েছে। 

নকশার মাধ্যমে শিল্প তৈরির মধ্য দিয়ে সিরিয়া বিপ্লবের মাল্টিমিডিয়া টিম সে সব মানুষের কাছে একটি কারণ জানতে চেয়েছে, যারা সিরিয়ার জন্য তাদের ঈদ কোরবানির করেছে:

সিরিয় বিপ্লব মাল্টিমিডিয়া দলের কাজ, যারা সিরিয়ায় তাঁদের ঈদ আত্তহুতি পাঠানোর জন্য মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ভেড়াটি বলছে, আমাকে সিরিয়ায় পাঠাও। সেখানে আমাকে তাঁদের বেশি প্রয়োজন। 

এমনকি প্রবাসী যারা ​​সিরিয়ার বেদনা অনুভব করেন, তাঁরাও খুব কম উদযাপন করেছেন। ওমর কুপ্তান যেমনটি ব্যাখ্যা করেছেনঃ

আপনি ঈদের জন্য কাপড় কিনতে এমনকি ঈদের সময় যেরকম অনুভূতি আসে তা কিছুতেই পাবেন না, যখন আপনার দেশ কোনোমতে বেঁচে আছে। #সিরিয়া 

অন্যরা দূরত্বকে ভয় করছেনঃ 

বাড়ি থেকে দূরে আরেকটি ঈদ। #সিরিয়া

যাইহোক, হতাশাপীড়িত ব্যক্তি এবং বাস্তববাদীদের মধ্যে থেকে সুন্দর লেখনী এবং উজ্জ্বল রঙে রাঙানো সিরিয়ার জন্য একটি মঙ্গলকামী ঈদ কামনা করা হয়েছে। যদিও, বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটিকেও উপেক্ষা করা হবেঃ 

আব্দো মেকনাসের আঁকা 

এবং এটাও উপেক্ষা করা হবে।


এই পোস্টে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সত্ত্ব তাদের নিজ নিজ মালিকদের। সবগুলো অনুমতিক্রমে ব্যবহৃত।

Exit mobile version