ছবিঃ থাইল্যান্ডের সামেট দ্বীপে তেল ছড়িয়ে পড়েছে

পিটিটি গ্লোবাল কেমিক্যাল প্রাইভেট পরিচালিত একটি পাইপলাইন দিয়ে ২৭ জুলাই তারিখে থাইল্যান্ডের উপকূলে প্রায় ৫০, ০০০ হাজার অপরিশোধিত তেল চুইয়ে পড়ে। এই তেল রাইয়োং প্রদেশের সামেট দ্বীপে গিয়ে পৌঁছায়, যা কিনা এক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।

পিটিটি, ইতোমধ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে এবং অত্র এলাকার পুনর্বাসন সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে:

পিটিটি গ্লোবাল ক্যামিকেল পাবলিক কোম্পানী লিমিটেড এই তেল চুইয়ে পড়ার ঘটনায় তার আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে-এর সমাধানে যারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। আজ, পরো উপকূলে তেল চুইয়ে পড়ার ঘটনা যে প্রভাব তার সমাধান করা হয়েছে এবং জরুরী অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এখন এখনকার পরিবেশের অবস্থা আগের মত ফিরিয়ে আনার জন্য পরবর্তী দফা পরিবেশ উদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করার এক পরিকল্পনা এতে যুক্ত করা হয়েছে।

৪ আগস্ট তারিখে, উক্ত কোম্পানী দাবী করে যে চুইয়ে পড়া তেলের ৯৯ শতাংশ ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে:

ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারন কার্যক্রম আজ, চুইয়ে পড়া তেলের ৯৯ শতাংশ অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছে। তৈলাক্ত সামগ্রী পারো উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ম্যাপ তা পাহুট নামক শিল্পাঞ্চল বন্দরে স্থানান্তর ও বহন করে নিয়ে যাওয়ার কাজে সহায়তা করে রাজকীয় থাই নৌবাহিনী, যা পরীক্ষা, শ্রেণীকরণ এবং ধ্বংসের আগে শিল্প কর্ম বিভাগের পরিপূর্ণ আদর্শিক অনুমোদনের জন্য আরো যাচাই করে দেখা হবে।

গ্রীনপিস, অত্র এলাকায় পরিষ্কার-অভিযান এবং ছড়িয়ে পড়া তেলের ফলে সৃষ্ট প্রভাবের কিছু ছবি পোস্ট করেছে:

গ্রীনপিস থাইল্যান্ডের ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া ছবি

গ্রীনপিস থাইল্যান্ডের ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া ছবি

পরিচ্ছন্নতা অভিযান; ছবি গ্রীনপিস ফেসবুক থাইল্যান্ডের পাতা থেকে নেওয়া

পরিচ্ছন্নতা অভিযান; ছবি গ্রীনপিস ফেসবুক থাইল্যান্ডের পাতা থেকে নেওয়া

পরিচ্ছন্নতা অভিযান; ছবি গ্রীনপিস ফেসবুক থাইল্যান্ডের পাতা থেকে নেওয়া

ছড়িয়ে পড়া তেল পরিষ্কার অভিযানঃ ছবি রিচার্ড ব্যারোর ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া

তেলের আস্তরণ অপসারণ সত্ত্বেও, ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে সামুদ্রিক প্রতিবেশে সৃষ্ট প্রভাবের বিষয়টি নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে:

কোকোনাট ব্যাংককের জানাইয়াশান তানানতাপাপাত লিখেছে কি ভাবে ছড়িয়ে পড়া তেল স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করেছে:

ছড়িয়ে পড়া তেল, ছোট আকারের মাছ ধরার নৌকার উপর নির্ভর যে সমস্ত জেলে পরিবার তাদের উপর, একই সাথে কোহ সামেট দ্বীপের রেস্তরাঁসমূহের সামুদ্রিক খাবার বিক্রির উপর প্রবল আঘাত হানবে,যা আশেপাশের জলসীমায় থেকে আরোহণ করা-এটাই দ্বীপবাসীর আয়ের মূল উৎস… আর স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলো দূষণের শঙ্কায় এসব পণ্য কিনতে অস্বীকার করেছে।

নাটকীয় ভাবে পর্যটকের সংখ্যা কমে আসা, মোটরবাইক এবং ট্যাক্সি ভাড়া ব্যবসার উপর প্রভাব ফেলেছে।

এই বিপর্যয়ের বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য না থাকার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুশীল সমাজের দল একটি বিবৃতি জারি করেছে:

যখন এই দুর্ঘটনা ঘটে, সে সময় পিটিটি জিসি জোর দিয়ে বলে যে পরিস্থিতি ততটা উদ্বেগজনক নয় এবং তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণে পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রতিবেশ ও নাগরিক এবং একে বিনষ্ট করতে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হবে, তার প্রভাব সম্বন্ধে খুব সামান্য তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিবেশ এবং নাগরিকদের উপর -এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্বন্ধে তথ্যের অভাব জনগণকে অন্ধকারে রেখে দিয়েছে, বিশেষ করে যেখানে এর ক্ষতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার মত এক উদ্বেগ রয়ে যাচ্ছে।

পিটিটি এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে তারা এই চ্যালেঞ্জ প্রদান করেছে:

পাইপ লাইন ছিদ্র হয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ, একই সাথে তেলের পাইপ ছিদ্র হয়ে যাওয়ার ফলে তেল চুইয়ে পড়া এবং তা পরিশোধনে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রতিবেশ এবং জনগণের স্বাস্থ্যের উপর কি ধরনের প্রভাব সৃষ্টি হবে সে বিষয়সমূহ জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করতে উক্ত প্রতিষ্ঠান বাধ্য।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান ও তেল নির্গমনের পরিমাণ বের করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য দুষ্কৃতিকারীকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়ায় প্রযোজ্য অপরাধ ধারা প্রয়োগ ও আইনগত প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার।

পরিবেশবাদী দলসমূহের হিসেব অনুসারে থাইল্যান্ডে বিগত তিন দশকে ২০০টি তৈল নির্গমনের মত বিপর্যয়কর ঘটনা ঘটেছে।

Exit mobile version