বেন আলীর শাসনের পতনের পর, ২৩ অক্টোবর ২০১১-এ, তিউনিশিয়ার নাগরিকরা নতুন এক সংবিধানের খসড়া তৈরী করার জন্য একটি আইন পরিষদ নির্বাচিত করছে। এখন পাঁচ মাস পরে, আইন সভা প্রস্তাবিত খসড়া আইন যাচাই করে দেখছে। তবে সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদ নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায়, এই কাজটির গতি ধীর হয়ে গেছে এবং ইসলাম ও আরব, এই দুটি পরিচয় এখন দেশজুড়ে বিতর্কের কেন্দ্রে অবস্থান।
ব্লগার মোহাম্মদ এল চেরনি তার ব্লগ, বিডুলেস৮-এ সংবিধানের প্রথম তিনটি অনুচ্ছেদের বিষয়ে এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার পোস্ট-এ [ আরবী ভাষায়], এল চেরনি পরামর্শ প্রদান করেছেন, তিউনিশিয়া একটি সুশীল রাষ্ট্র (সিভিল স্টেটস) হিসেবে নিজের পরিচয় বজায় রাখবে, যার ধর্ম হবে ইসলাম, এবং এই রাষ্ট্রের ভাষা হবে আরবী। তিনি এই ক্ষেত্রে আরো গুরুত্ব প্রদান করেন যে তিউনিশিয়া, তার প্রতিবেশী উত্তর আফ্রিকা, আফ্রিকা, আরব, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং ইউরোপীয় সভ্যতা এবং সংস্কৃতির প্রতি উদার মনোভাব প্রদর্শন করবে। একই অনুচ্ছেদে, এল চেরনি আমাদের তিউনিশিয়ার জাতীয় পতাকার নকশার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সম্ভবত এই উদ্যোগ, সালাফি এক ছাত্র কর্তৃক তিউনিশিয়ার পতাকা নামিয়ে তার বদল সালাফিপন্থীদের পতাকা উঠানোর ঘটনার বিচক্ষণ সতর্ক প্রতিক্রিয়া।
এল চেরনি পরামর্শ প্রদান করছে যে, সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ তিউনিশিয়ার সকল নাগরিকের স্বাধীনতা এবং মর্যাদা রক্ষা করবে। তিনি লিখেছেন:
- শারীরিক নিরাপত্তা এবং সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন নিষিদ্ধ করা।
- বিশ্বাস, মত প্রকাশ, সংবাদপত্র, প্রকাশনা, আন্দোলন, প্রদর্শন, শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যক্রম, রাজনৈতিক দলের সমাবেশ, অ্যাসোসিয়েশন, যৌথতা, এবং সিন্ডিকেট –এর স্বাধীনতা থাকবে, যেখানে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ এবং অঞ্চলের ভিত্তিতে যেন কোন বৈষম্য সৃষ্টি না করা হয়। ঘৃণা, সংঘর্ষ ও দ্বন্দ্বের পরিবেশ পরিহার করে, অথবা স্বাধীনতা এবং সমানাধিকার লঙ্ঘন না করে যেন এ সব শর্ত পালন করা হয়।
সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ তিউনিশিয়ার গণ প্রজাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে বজায় থাকার উপর গুরুত্ব দেবে, যা কিনা দেশে বহুদলীয় বাস্তবতার সৃষ্টি করবে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতার পালা বাদল ঘটাবে। এই বিষয়টি ক্ষমতা এবং গণতন্ত্রের এই সমস্ত ভিত্তি স্তর পাল্টে ফেলার অপরাধমূলক প্রচেষ্টাকে আলাদা করে ফেলবে।
তিউনিশিয়ার রাজনৈতিক জগতে যে তীব্র বৈপরীত্য রয়েছে সেই দৃশ্যমান বিভাজন তিউনিশীয় সমাজের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে এবং এই বিষয়ে সঠিক কর্মকাণ্ডের অভাব রয়েছে, যা পরস্পরের মধ্যে বোঝাপড়া সৃষ্টিতে সাহায্য করে। এর ফলে আরো একবার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সম্প্রদায় রাজনীতিবিদের প্রভাবিত করার জন্য অবস্থান গ্রহণ করছে, যাতে রাজনীতিবিদের তিউনিশিয়ার জন্য সেরা বিকল্প গ্রহণ করে।