আমাদের এই লেখাটি মিশর বিপ্লব ২০১১-এর উপর করা বিশেষ কাভারেজের অংশ।
যদি কোন একটা ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক মিশরের বিপ্লব ‘চক্ষু উন্মোচক’ হিসাবে কাজ করেছে সামাজিক মিডিয়ার ক্ষেত্রে, সেটা হচ্ছে কিভাবে হাজার হাজার মিশরীয় ক্ষুদ্র ব্লগের ওয়েবসাইট টুইটারের সাথে পরিচিত হয়েছে।
তিন মাসের কিছু বেশী সময়ে, মিশরের টুইটার জগত কেবল আকারে বাড়েনি, বরং বিষয়বস্তু আর ভিন্নতার দিক থেকেও বেড়েছে। যা শুরু হয়েছিল একটা সাধারন, কম- পরিসরের গোত্র হিসাবে, সেটি দ্রুত একটা সরব সামাজিক- রাজনৈতিক এলাকায় পরিণত হয়েছে, যেখানে সব কিছু আলোচনার জন্য উন্মুক্ত আছে আর যেখানে আসলে কোন কিছু নিষিদ্ধ বা লাল দাগ টানা নেই।
এইসব আলোচনার বিষয় মিশরের একজন সক্রিয় ব্লগার আর টুইটার ব্যবহারকারী আলা আবদ এল ফাত্তাহকে উজ্জীবিত করেছে (@আলা) দুই জগতের সব থেকে ভালোটা আনতে – টুইটার আর তাহরির স্কোয়ার- একই ছাতার নীচে।
এর ফল হলো টুইট নাদোয়া- সেমিনারের মতো একটা সভা যা সম্পর্কে আব্দ এল ফাত্তাহ একটা ব্লগ পোস্টে মূল কথা তুলে ধরেছেন ‘একই ধরনের লোক, একত্র হচ্ছে’ শিরোনামে।
কায়রোর ধনী এলাকা ডোক্কিতে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট সাপোর্টে ২০১১ এর ১২ জুন এই সমাবেশ হয়। এই পর্যায়ের আলোচ্য বিষয় ছিল ইসলামপন্থীদের নিয়ে।
এরইমধ্যে টুইটারে অনেক সাড়া জাগিয়েছে বিষয়টি যেখানে ইসলামপন্থীদের নিয়ে আলোচনা চলছে – মিশরীয় সমাজে তাদের কিভাবে দেখা হচ্ছে থেকে তারা কিভাবে একটা নাগরিক আর গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পরের মিশরের কল্পনা করছেন এইসব কিছু। এটাই স্বাভাবিক যে আব্দ এল ফাত্তাহ সিদ্ধান্ত নেন টুইটারের কিছু নামকরা ইসলামপন্থীদের আমন্ত্রণের এইসকল বিষয়ে যে ধোঁয়াটে ভাব আছে তা পরিষ্কার করার জন্য।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ইব্রাহিম হুদাইবি, গার্জিয়ানের মুক্ত কলাম লেখক আর মুসলিম ব্রাদারহুদের দ্বিতীয় জেনারেল গাইড (এমবি) হাসান হুদাইবির প্রৌপুত্র, আর সাংবাদিক আব্দেল মোনিম মাহমুদ ও আহমেদ সামির – আগের জন ভূতাপেক্ষ এমবি আর পরের জন এখনো এই দলের সদস্য।
তিন ঘন্টার উপরে বক্তারা মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে তাদের সম্পর্ক আলোচনা করেছেন, মিশরের ব্যাপারে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে তাদের অর্থনৈতিক দৃষ্টি আর এরই সাথে চতুর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন মিশরে এমবি দ্বারা শাসিত সমাজে নাগরিক অধিকারের ব্যাপারে।
টুইটারের ধরনে, বক্তা আর অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ১৪০ সেকেন্ডে সাড়া দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল প্রতি প্রশ্নের (এটা টুইটারের প্রতি টুইটে ১৪০ টা অক্ষর লেখার ব্যাপারটা) আর বক্তাদের জন্য তালি মারার পরিবর্তে, অংশগ্রহণকারীরা তাদের হাত নেড়ে পুনর্বার টুইট বার্তা পাঠানোর (রিটুইট করার) ব্যাপারে আগ্রহ জানিয়েছেন। এর সাথে ভীড়ে ভরা কামরায় একটা বড় স্ক্রিন যেখানে ‘টুইট নাওদা’র জন্য তৈরি করা টুইটারের পাতা দেখানো হয়েছে, যেখানে বক্তব্য, ছবি আর সভার ভিডিও আপডেট করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীরা সভার প্রশংসা করেছেন যেখানে হুসেন আদেল ফাহমির মতো ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন যে:
#টুইট নাদোয়া নতুন আর দারুন প্রচেষ্টা। আমার মত হলো মিশরের ইসলামী ইতিহাস নাগরিক রাষ্ট্রের ধারনার সাথে সংঘাত করতে পারে না।
ডঃ মুস্তাফা হোসেন নাদোয়ার ছবি দিতে গিয়ে সভার সঞ্চালক হিসাবে আব্দেল ফাতাহর অংশগ্রহনের প্রশংসা করেছেন।
#টুইটনাদোয়া তে অনেকে অংশ নিয়েছেন এবং @আলা একজন ভালো সন্চালক। http://twitpic.com/5arcqj
আর মাই জিনির মতো ব্যবহারকারিরা বলেছেন যে:
#টুইটনাদোয়া বড় সাফল্য পেয়েছে, তাহরিরের মূল ভাব ফিরে এসেছে। অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ভিন্নতা আর দারুন আলোচনা! ধন্যবাদ @আলা @মানাল আর সবাইকে
আব্দেল ফাত্তাহ জানিয়েছেন যে আবার এই ধরনের টুইটারের আলোচনা হবে:
দারুন একটা #টুইটনাদোয়া অনুষ্ঠানের জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ, আমরা ইন্টারনেট বিহীন কিন্তু শীঘ্র পরেরটার কথা আলোচনা করবো।
এরপর তিনি আবার ভার্চুয়াল পৃথিবীর কাছে ফিরে যান।
আমাদের এই লেখাটি মিশর বিপ্লব ২০১১-এর উপর করা বিশেষ কাভারেজের অংশ।