ব্লগার আর ক্যাম্বোডিয়ার নারী মিডিয়া সেন্টারের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ পিসেথ মাও তার চিন্তার কথা জানিয়েছেন আর দৃঢ় প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই বিজ্ঞাপনের প্রতি আর একে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ করেছেন। তিনি কোম্পানিকে উৎসাহ দিয়েছেন বরং জনগণের জন্য ভালো একটা বার্তা দেয়ার বিশেষ করে তরুণদের যদি তারা তাদের পণ্যকে তুলে ধরতে চান। তার ব্লগে পিসেথ তার প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে প্রয়োগ করেছেন এই বিজ্ঞাপনকে সরিয়ে নিতে জোর দেয়ার জন্য:
আমাকে আমার প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যবহার করতে দেন: আমি আসলেই সাম্প্রতিক মোবিটেল (সেলকার্ড) এর বিজ্ঞাপনকে সকল টিভি চ্যানেল থেকে নিষিদ্ধ করতে চাই। এর মূল্য কি? তরুণদের উৎসাহিত করা একটা মেয়ের নিতম্বের ছবি তুলে বন্ধুদের সাথে দ্রুত ইন্টারনেটে বিতরন করা? এই বিজ্ঞাপনের প্রযোজক কোনভাবে অস্বাভাবিক হবেন।
তিনি বিজ্ঞাপনের প্রযোজককে পরামর্শ দিয়েছেন:
আপনার ভালো ইন্টারনেট সংযোগকে যদি আপনি তুলে ধরতে চান, তাহলে এমন কিছু কেন ভাবেন না যেমন ”একজন বন্ধু স্কুলে শিক্ষক যা পড়াচ্ছে তার ছবি তুলছে আর অন্য জেলায় কাজে থাকা আর এক বন্ধুকে তা পাঠাচ্ছে।“
তিনি এই কোম্পানির আগের বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের প্রশংসা করেছেন – যেমন অ্যাংকোর ওয়াট নিয়ে প্রচার। পিসেথ বিশ্বাস করেন যে তার পরামর্শ নিয়ে এই কোম্পানি ভালো একটা সমাজ গঠনে উৎসাহ দেবে যেখানে বন্ধুরা একে অপরের সাহায্য করবে আর মানুষকে সুযোগ দেবে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে সংযুক্ত আর যোগাযোগের ভেতরে থাকার।
উল্লেখ্য, অতীতে মোটরসাইকেল কোম্পানির এরকম একটি বিজ্ঞাপন বিতর্কিত হয়েছিল নারীদের অসম্মান করার জন্যে।
অন্য দিকে, সরকার সম্প্রতি একটা টিভি সিরিজ নিষিদ্ধ করেছে, ‘অদ্ভুত প্রেমিক’ নামে যেখানে একজন সুন্দরী নারীকে দেখানো হয়েছে যাকে নিলাম করা হবে বিয়ের জন্য এক মিলিয়ন ডলার দাম দিয়ে শুরু করে। যারা ক্যাম্বোডিয়ার নারীদের মর্যাদা খারাপভাবে দেখতে চান তাদের জন্য এটা সাদরে গৃহিত হতে পারে। তবে, তারাও আছেন যারা এটাকে চলচিত্র প্রযোজকদের প্রকাশের স্বাধীনতায় লাগাম দেয়া মনে করছেন। তারা এটাকে অতীতে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করার সাথে তুলনা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন বৌদ্ধ সন্নাসীকে নিয়ে একটি পপ গান যেখানে সে একটা মেয়ে ছুঁচ্ছে আর চুমা দিচ্ছে আর ‘যেখানে হাতিরা কাঁদে’ নামে একটি রক অপেরা, যেখানে সন্নাসীদের খারাপ আচরন করতে দেখা যায়, এগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সরকার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেছিলেন সামাজিক ঐতিহ্য আর বৌদ্ধ সন্নাসীদের ভাবমূর্তির কথা বলে।
কিছু ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা গ্রহন করা যায়, এই কাজ প্রকাশের স্বাধীনতার নীতির সাথে এক হওয়া দরকার আর সরকারের উচিত বিষয়বস্তুর প্রতি বিচার এক রাখা আর সেই বিষয়বস্তুর মূল লক্ষ্য বিবেচনা করা, এটাকে কেবলমাত্র ভালো সামাজিক ঐতিহ্য আর জাতীয় নিরাপত্তার সাথে তুলনা না করে। এই বিষয়টি অনেক সমালোচকের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়েছে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা তিরস্কার, ভুল তথ্য দেয়া বা সরকারী নীতির ব্যাপারে উত্তেজিত করা হয়েছে এবং তাদের বিদ্রোহ মূলক মতামতের কারনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।