আমেরিকা: নতুন স্কুল বছর শুরু হওয়ার সাথে সাথে নির্বাসনের ভয়

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে একটা প্রস্তাবিত বিল যা প্রায় ৬৫০০০ নথিভুক্ত নয় এমন ছাত্রছাত্রীর সে দেশে থাকার আইনগত অধিকার ঠিক করবে, তা এখনো পাশের অপেক্ষায় যদিও একটি নতুন স্কুল বছর এই মাসে শুরু হচ্ছে।

দ্যা ড্রিম অ্যাক্ট হচ্ছে দুই বছর পুরানো একটি প্রস্তাবিত বিল যা যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস আর সিনেটে আবারও গত মার্চ ২০০৯ এ উপস্থাপিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাচ্চা হিসেবে এসেছে এমন ‘মেধাবী’ ছাত্রদের জন্য এই বিল সুযোগ করে দেবে তাদেরকে শর্তসাপেক্ষে আইনগত ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে।

রাজনীতিবিদরা যখন এ নিয়ে চিন্তা করছেন, ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষার স্বপ্ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখছেন যেখানে নির্বাসনের ভয় থাকছে। কয়েকজন সাহায্য নিচ্ছেন তাদের নির্বাসনের প্রক্রিয়া দেরি করাতে যতক্ষণ না তাদের ভবিষ্যৎ নতুন আইন দ্বারা নিশ্চিত হয়।

“আমি ড্রিম অ্যাক্টের যোগ্য”

জর্জ আলোন্সো

জর্জ –আলোন্সো চেহাদে সম্প্রতি ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। হাজার হাজার কলেজ স্নাতক যারা কাজ খুঁজছেন তাদের মতো সৌভাগ্যবান না হয়ে, আলোন্সো আমেরিকাতে থাকার তার অধিকার নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

আলোন্সো পেরুতে জন্মগ্রহণ করেন আর আট বছর আগে ১৪ বছর বয়সে তার বাবা মার সাথে আমেরিকাতে আসেন। স্নাতক হওয়ার কয়েক মাস আগে, আলোন্সো নিজেকে কঠিন এক পরিস্থিতিতে পেয়েছেন।

ড্রিম অ্যাক্টিভিস্ট.অর্গ নেটওয়ার্কের সমর্থকদের কাছে পাঠানো একটা ইমেইলের মাধ্যমে আলোন্সো ব্যাখ্যা করেছেন:

“২০০৯ সালের ১৪ই মার্চ আমি আর এক বন্ধু পশ্চিম ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই, আর রাতে দেরি করে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি না ফিরে আমরা বন্ধুর ওখানে থাকার সিদ্ধান্ত নেই। সকালে এলাকার সাথে পরিচিত না হওয়ায় আমরা হাইওয়েতে একটা ভুল জায়গায় ঘুরে যাই আর কানাডার সীমান্তের কাছে পৌঁছে যাই। ইমিগ্রেশন আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাকে থামায় আর তখন এটা আবিষ্কৃত হয় যে আমি নথিভুক্ত না।“

২৫শে সেপ্টেম্বর এর মধ্যে আলোন্সোকে পেরুতে ফেরত পাঠানোর কথা। তার ফ্লাইট ১৭ই সেপ্টেম্বর। অন্যান্য অভিবাসী- অধিকার কর্মীর সাহায্য নিয়ে, তিনি প্রচারণা শুরু করেছেন আমেরিকাবাসীর সমর্থনের জন্য। তাদের একটা অনলাইন পিটিশন (আর্জি) আছে, একটা ফেসবুক দল বানানো হয়েছে, আর একটা প্রচারণা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টকে আলোন্সোর ব্যাপারে ফোনে অনুরোধ জানানোর জন্যে।

এই ভিডিওতে, আলোন্সো তার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেছেন কেন তিনি মনে করেন মানুষের উচিত তাকে সমর্থন করা।

একই চ্যানেলে আরো ভিডিও আছে, নিচের এই ভিডিওসহ যেখানে তার সাফল্য গুলো তুলে ধরা হয়েছে:

আর একটা স্বপ্ন থেমে আছে

গত মাসে গ্লোবাল ভয়েসেস এ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে আলবেনিয়ায় জন্ম নেয়া ১৯ বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়া হের্টা লুশো গত ১৯শে আগস্ট নির্বাসনের সম্মুখীন হচ্ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার নির্বাসনের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয় ড্রিম অ্যাক্টিভিস্টদের আন্দোলনের ফলে।

তাকে ৯ই নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে, আর এই সময় তিনি ব্যয় করছেন আরো বেশী আমেরিকাবাসীর সমর্থন পাওয়ার জন্য।

টেক পার্টে, শিক্ষা বিষয়ক ব্লগার মেলানি স্মোলেন হের্টার সমর্থনে লিখেছেন:

“হের্টা আর তার পরিবারের এখনো আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন। তাকে তত্ত্বাবধানের একটা আদেশ দেয়া হয়, আর স্থানীয় ডিএইচএস আফিসে তার মা সহ ৯ই নভেম্বর যেতে বলা হয়, যার মানে সে এখনো বিপদ মুক্ত না। তাকে যে কোন সময়ে আটক করা হতে পারে।

এই শিক্ষিত, সম্ভাবনাময়ী আর উচ্চাকাঙ্খী তরুণী যে একজন ভালো নাগরিক হতে বদ্ধপরিকর আর তার সমাজের জন্য কাজ করবে তাকে নির্বাসিত করা একেবারে খারাপ একটা কাজ হবে, আর লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশী।“

ড্রিম অ্যাক্টের কর্মসূচী: ২৩শে সেপ্টেম্বর

এটা জানার পরে যে হাজার হাজার ছাত্রকে নথিভুক্ত না থাকার কারনে নির্বাসিত করা হতে পারে- ইউনাইটেড উই ড্রিম নেটওয়ার্ক তাদের সমর্থকদের আহ্বান করছে ২৩শে সেপ্টেম্বর একত্র হতে আর স্কুলে ফেরার ড্রিম অ্যাক্ট প্রচারণার ঘোষণায় সামিল হতে।

এই দল আশা করছে দেশব্যাপী কলেজ ক্যাম্পাসে র‌্যালী করে ড্রিম অ্যাক্ট সংবিধানের বিষয়কে তুলে ধরার।

তাদের আগে ২৩শে জুনে ড্রিম অ্যাক্ট স্নাতক দিবসের প্রচারণা সাফল্যমণ্ডিত হয়েছিল, যেখানে ৫০০ জন ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়েছিলেন। তারা বলছেন যে তারা নিশ্চিত যে আর একটা দেশব্যাপী অনুষ্ঠান সফল হবে:

“এইবার, আমরা স্কুলে ফিরে যাচ্ছি কংগ্রেসকে জানাতে যে তারা যে সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে আমরা তার অংশ।“

Exit mobile version