ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুন্জ: দাসত্বমোচন দিবস

আজ দাসত্বমোচন দিবস। একশ তিয়াত্তর বছর পূর্বে পহেলা আগস্টে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুন্জের মানুষ দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছিল এবং বর্তমানেও ক্যারিবিয়ান ব্লগারদের এ বিষয়ে অনেক কিছু বলার আছে।

জামাইকার ব্লগার জেফ্রি ফিলিপস রেগ্গি গায়ক বব মারলির একটি প্রিয় উক্তি দিয়ে এই আলোচনার পটভুমি তৈরি করে দিয়েছেন:

“মানসিক দাসত্ব থেকে তোমাদের মুক্ত কর/ আমরা নিজেরা ছাড়া কেউই আমাদের মনকে মুক্ত করতে পারবে না।” -বব মারলির ‘রিডেম্পশন সঙ’ এর থেকে নেয়া যা মাননীয় মারকুস মসিয়াহ গার্ভির এক বক্তৃতা অবলম্বনে লেখা।

সেন্ট ভিন্সেন্ট এবং গ্রেনাডাইনস থেকে আবেনী লিখছেন:”এটা ভাল যে আমরা এখন এই দিনটি সপ্তাহের প্রথম সোমবার উদযাপন করিনা (যাতে সপ্তাহের মাঝখানে ছুটি না হয়) বরং সহজাত দিনটিকেই করি। আমরা এখন বলতে পারি যে এটি দাসত্বমোচন দিবসের ছুটি, আগস্টের প্রথম সোমবারের ছুটি নয়”। কিন্তু তার মনে এখনও সন্দেহ আছে:

” মাঝে মধ্যে মনে হয় যে আমরা এই দিনটিকে বাদ দিতে পারি কারন এই দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের কারুরই সমস্টিগত সচেতনতা নেই। অনেকের কাছেই এটি অন্য যে কোন ছুটির দিন, যেদিন কোন স্মৃতিচারন বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছাড়াই কাটানো হয়। এটি সত্যিই দু:খজনক তবে কেউ যদি দাসত্বের আসল ভীতিকর অভিজ্ঞতাগুলো থেকে যোজন দুরে থাকে এবং তাদের নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে কোন ধারনা না থাকে তাহলে এমনটি হওয়া বিষ্ময়কর নয়।”

বার্বাডোস থেকে চিজ অন ব্রেড ব্লগ বলছে:

এখন পর্যালোচনা করার সময় এসেছে আমরা জাতি হিসেবে কোন পর্যায়ে এসেছি এবং কোথায় আমাদের যেতে হবে। আমার ভয় হচ্ছে যে আমাদের আরও বন্ধন মোচন করতে হবে।

ত্রিনিদাদ এবং টোবাগোর ব্লগার দ্যা বুক ম্যান সবাইকে উৎসাহিত করছেন দেশের জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত দাসত্বমোচনের ইতিহাসের প্রদর্শনী দেখতে। ত্রিনবাগোনিয়ান ব্লগার এলসেফ ডানকান তার নাউ ইজ ওয়াও ব্লগে বলেছেন:

“আমি বুঝতে পারিনি যে ত্রিনিদাদ এবং টোবাগো হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম দেশ যে দাসত্বমোচন দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষনা করেছে। যদিও দাসত্ব এখনও বর্তমান। এই দাসত্বমোচন দিনে আমি চিন্তা করি আমার জীবনের কোন জিনিষটি আমি মুক্ত করতে পারব।”

এনটিলস ব্লগ জানাচ্ছেন পহেলা আগস্টের এই দিনটি ক্যরিবিয়ান রিভিউ অফ বুকস সাময়িকীর প্রথম প্রকাশ দিবস যা ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোনা ক্যাম্পাস থেকে ১৬ বছর পূর্বে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। ত্রিনিগুরমে.কম এই দিনটি পালনের জন্যে জিভে জল আসা খাবারের মেনু দিয়েছেন।

তবে আবেনী এ দিনটির উদযাপনের উপযুক্ত সার সংক্ষেপ করছেন:

“আমার মনে হয় চ্যালেন্জটি হচ্ছে এই দিনটি নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক কিছু করা। রেলি ও প্রদর্শনী ভাল উদ্যোগ তবে আমাদের এর বাইরে চিন্তা করতে হবে। পহেলা আগস্ট দিনটির মর্ম শিশুদের কাছে তুলে ধরতে হবে। বেলিজের গারিফুনা গোষ্ঠির লোকেরা যে কারনে সেন্ট ভিন্সেন্ট এ আসে, পশ্চিম আফ্রিকার কিছু দেশের লোকেরাও এই দিনটি উদযাপনে আসতে পারে। অনেকেই দাসত্ব নিয়ে কথা বলতে ঘৃনা করে কিন্তু এটি সত্যিই ছিল এবং এই জাতি তার থেকে বেঁচে গেছে। এই জন্যই আমাদের এ দিবসটি উদযাপন করার করার যথেষ্ট কারন রয়েছে।”

- জানিন মেন্দেজ ফ্রান্কো

Exit mobile version