একদল শিল্পী পথচিত্রের মাধ্যমে ফিলিপাইনের সামাজিক দুর্দশা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে

A wall was transformed into a mural echoing the call of human rights groups to stop the militarization of Lumad schools. The Lumad are indigenous peoples in Mindanao, located in the southern part of the Philippines. Photo from the Facebook page of Sim Tolentino

ফিলিপাইনের মানবাধিকার গ্রুপগুলো লুমাডে সেনাবাহিনীর আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে শিল্পীরা দেয়ালে এই ম্যুরাল এঁকেছে। লুমাড’রা দেশটির দক্ষিণাঞ্চল মিন্দানাওয়ের আদিবাসী সম্প্রদায়। ছবিটি সিম টলেন্টিনোর ফেইসবুক পেইজ থেকে নেয়া হয়েছে।

গেরিলা নামের শিল্পীগোষ্ঠীর জন্ম ২০০৮ সালে। ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস বিভাগের শিক্ষার্থীরা এটি প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে কাজ করেছে। পাশাপাশি ফিলিপাইনের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য তুলে ধরেছে।

তবে তারা সবচে’ বেশি পরিচিতি পেয়েছে ম্যানিলা শহরের রাস্তায় রাজনৈতিক বক্তব্য সম্বলিত শিল্পকর্ম উপস্থাপন করার জন্য। গ্লোবাল ভয়েসেস-এর এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপ প্রসঙ্গে শিল্পীগোষ্ঠী পথচিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরেন:

Doing street art is our way of bringing “ART” closer to the masses. Street art is special for us because it's where the purest intention of an artist can be seen. And for every art that we do in the street, we consider it a gift to the people.

পথচিত্রের মাধ্যমে আমরা আমাদের শিল্পকর্মগুলো গণমানুষের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাই। পথচিত্র আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মধ্যে দিয়ে শিল্পী তার সুমহান উদ্দেশ্য সবাইকে দেখাতে পারেন। আমরা আমাদের সব শিল্পকর্ম রাস্তায় করি। জনগণের জন্য এটা আমাদের উপহার।

তাদের অনেক শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে ম্যানিলাজুড়ে। উদাহরণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে রাখা চিত্রকর্মের কথা বলা যায়। সেই চিত্রকর্মে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতির পরিবারের মালিকানাধীন এলাকায় ভূমি সংস্কারের দাবির কথা উঠে এসেছে:

A socio-political work that also was meaningful to a community was our artwork which was exhibited in the Vargas museum titled LUPA (land). Our group had a chance to visit the Hacienda Luisita and talk to the farmers about their struggle for land reform. We were honored to transform their experiences and wishes into a meaningful artwork.

ফিলিপাইনের সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের কাজ রয়েছে। লুপা শিরোনামে সেগুলো ভারগাস জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। জনগণের জন্য এই কাজগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের গ্রুপের একদল শিল্পীর সুযোগ ঘটেছিল হাসিয়েন্দা লুইসিতা যাওয়ার। সেখানে গিয়ে তারা কৃষকদের সাথে কথা বলেছে। ভূমি সংস্কার নিয়ে তাদের সংগ্রামের কথা শুনেছে। আমরা খুব খুশি যে, তাদের সংগ্রামের কথা, তাদের আকাঙ্ক্ষাকে শিল্পে রূপ দিতে পেরেছি।

শিল্পকর্মে হাসিয়েন্দা লুইসিতার কৃষকদের সংগ্রামের কথা তুলে ধরা হয়েছে। কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে ভূমি সংস্কার আইন প্রযোজ্য থাকলেও দেশটির রাষ্ট্রপতির পরিবার নানাভাবে ভূমি দখল করে নিচ্ছে। গেরিলা পেইজ থেকে ছবি নেয়া হয়েছে।

গেরিলা শিল্পীগোষ্ঠীর একটি লক্ষ্য হলো, তাদের শিল্পকর্মে ফিলিপাইনের জনপ্রিয় সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটানো এবং শিল্পকর্মকে গণবান্ধব করা। নিচের শিল্পকর্ম তার একটি উদাহরণ। এবং এতে তাদের উদ্দেশ্য ভালোভাবে উঠে এসেছে।

২০১৫ সালে লুমাডের বাস্তুচ্যুতরা যখন ম্যানিলায় আসে, তখন গেরিলা শিল্পীগোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্যই শিল্পকর্মের মাধ্যমে তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান। শিল্পীরাও মিন্দারাওয়ের আদিবাসীদের ওপর সামরিক আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান। ছবি নেয়া হয়েছে ম্যানিলা টুডে থেকে।

গেরিলা শিল্পীগোষ্ঠী এই শিল্পকর্মের মাধ্যমে তখ্য স্বাধীনতা বিল পাস করার প্রচারাভিযানের প্রতি সমর্থন জানান। রাষ্ট্রপতির অঙ্গীকার সত্ত্বেও বিলটি এখনো কংগ্রেসে আটকে আছে। গেরিলার ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

কুইজন শহরের দেয়াল এটি। গেরিলা শিল্পীগোষ্ঠী শিল্পকর্ম দিয়ে ভরিয়ে ফেলার আগে এর অবস্থা এমনই ছিল। গেরিলার ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

দেয়ালে ফিলিপাইনের বিপ্লবী সময়ের হিরোদের ছবি আঁকা হয়েছে। ১৮৯৬ সালে কাটিপুনান নামের একদল বিপ্লবী স্প্যানিশ উপনৈবিশিকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করেছিল। গেরিলার ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

উচ্চশিক্ষার ওপর রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। তার সমর্থনে গেরিলা শিল্পগোষ্ঠী এই ম্যুরাল চিত্র আঁকে। গেরিলার ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে এই পথচিত্রে দুইজন ছাত্রনেতাকে দেখা যাচ্ছে। ২০০৬ সালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা ভূমি সংস্কার আইন নিয়ে প্রচারাভিযানে নেমেছিল। বর্তমানে এই ঘটনার সাথে অভিযুক্ত এক সেনা অফিসারের বিচার চলছে। দুই ছাত্রনেতা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। গেরিলার ফেইসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

গেরিলা শিল্পীগোষ্ঠী সিনেটে ভোটের সময়ে একটি পোস্টার বের করে। সেখানে তারা জনগণকে ‘জন্তু’ ও ‘দানব’দের ভোট দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে।

ভোটের মৌসুম।

Exit mobile version