এক তরুণ পাকিস্তানি নারীর আশা তার আত্মোপলব্ধির মোটরসাইকেল ভ্রমণ অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে

Zenith ইরফান পাকিস্তানের সামাজিক গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং তার পিতার ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে লাহোর থেকে কাশ্মীরে, পাকিস্তান জুড়ে মোটরসাইকেলয়ে ভ্রমণ করেন। তিনি আশা করেন, তার ব্লগ ও ভিডিও ভবিষ্যতে যারা পাকিস্তানে দুঃসাহসী অভিযানে যেতে চান তাদের উদ্বুদ্ধ করবে এবং লিঙ্গ বৈষম্যের ইতি ঘটাবে। কৃতজ্ঞতা: একটি মেয়ে দুটি চাকা

ইরফান পাকিস্তানের সামাজিক গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং তার পিতার ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে লাহোর থেকে কাশ্মীরে, পাকিস্তান জুড়ে মোটরসাইকেলয়ে ভ্রমণ করেন। তিনি আশা করেন, তার ব্লগ ও ভিডিও ভবিষ্যতে যারা পাকিস্তানে দুঃসাহসী অভিযানে যেতে চান তাদের উদ্বুদ্ধ করবে এবং লিঙ্গ বৈষম্যের ইতি ঘটাবে। কৃতজ্ঞতা: একটি মেয়ে দুটি চাকা

এই নিবন্ধটি ডেভিড লেভেলি বিশ্বের কাছে প্রথম প্রকাশ করেন PRI.org এ ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৬ তে এবং একটি নিবন্ধ বন্টনের চুক্তির অংশ হিসেবে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হল।

স্বাধীনতা কি সে সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা আছে।

কিন্তু তার মধ্যে অন্তত একটি হচ্ছে মোটর সাইকেলে চড়ে – যেকোনদিকে – যতটা দ্রুত বা যতটা দূর আপনার মন যেতে চায় আপনি যাচ্ছেন।

২১ বছর বয়সী মকর রাশির জাতিকা জেনিথ ইরফান, যিনি কিনা পাকিস্তানজুড়ে একটি ঐতিহাসিক মোটরসাইকেল যাত্রা করেছেন, নিজেকে এক স্বাধীন সত্তা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি গত গ্রীষ্মে বেরিয়েছিলেন তার মোটরসাইকেল নিয়ে – বহনযোগ্য কিছু জিনিস নিয়ে, সাথে ছিল এই বিশ্বাস যে তার গল্প ভবিষ্যতে নারীদের দুঃসাহসী অভিযানে যেতে উৎসাহিত করবে এবং পাকিস্তানের লিঙ্গ বৈষম্য দূর করবার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

জেনিথ বলেন তার অকালপ্রয়াত পিতা'র অপূর্ণ ইচ্ছা এ যাত্রা করবার ক্ষেত্রে তাকে অনুপ্রাণিত করেন।

“আমার বয়স যখন ১২ ছিল, আমার মা এবং আমি পুরনো কিছু ছবি দেখছিলাম, পরিবারিক ছবি, এবং আমার মা আমাকে বলেছিলেন যে, ‘তোমার বাবা মোটরসাইকেলে করে সারা বিশ্ব ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন’ এবং মা আমাকে বলছিলেন যে, তার জন্য সেটা কত বড় স্বপ্ন ছিল এবং তিনি তা করতে করতে পারে না, কারণ তিনি স্বল্পায়ু ছিলেন। আর আমার মা এই পাগলাটে বুদ্ধি দেন যে আমি যেন আমার বাবার স্বপ্ন তাড়া করি এবং যেন সেটা আমার বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার হিসেবে নেই … কারণ আমাদের সংস্কৃতিতে আমরা সাধারণত নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার সঙ্গে বাস করি, যেমন বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের আনন্দ ভ্রমণে যেতে অনুমতি দেন না আমাদের চারপাশের সংস্কৃতির কারণে। এটা খুব নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কৃতি।”

সেসকল সাংস্কৃতিক সীমানা বাইরে এসে, এবং মা ও ভাইয়ের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে, জেনিথ ২০১৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে একটা মোটর সাইকেলে চড়ে পাকিস্তান পরিভ্রমণ করেন।

শহরে, যেখানে শিশুরা যন্ত্র এবং ইন্টারনেটে খেলার কৃত্রিম জগতে মগ্ন থাকে, সেখানে কাশ্মীরের পাহাড়গুলিতে উচ্চাভিলাষী আত্মার সন্ধান পাওয়া যায়। এই ছোট্ট পরীরা ২-৩ মাইল দৈনিক হেঁটে কয়েকটামাত্র বর্ণমালা পড়তে যায়। আসলেই যাদের কম আছে, আধ্যাত্মিকভাবে উন্নত হয়, যাদের অনেক আছে তাদের চেয়ে। কৃতজ্ঞতা: একটি মেয়ে দুটি চাকা

“যখন আমি চীন ও পাকিস্তানের সাথে সংযোগকারী খুনযেরাব গিরিপথের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম সেখানে নিরাপত্তা চেকপোস্টের কাছাকাছি এক মানুষ ছিলেন এবং তিনি আমাকে বলছিলেন কেন আমার মোটরসাইকেল চালনা উচিত নয় এবং আমি যেন ঘরে ফিরে যাই। আমি শুধু তার দিয়ে তাকিয়ে হেসে দিয়েছিলাম, যেন তার মন্তব্য আমি উড়িয়ে দিচ্ছি। এই একটিমাত্র নেতিবাচক মন্তব্য আমি পেয়েছিলাম। আমি কোন হুমকি কখনো পাইনি।”

“নবী মুহাম্মদ বলেছেন ‘আমাকে বলো না তুমি কতটা শিক্ষিত, আমাকে বলো তুমি কতটা ভ্রমণ করেছো।’ এই উক্তিটি আমার হৃদয়ে সোজা আঘাত হেনেছে। বইলব্ধ জ্ঞান ও বর্ণনা হয়তো আমাদের কল্পনাশক্তিকে মুক্ত করতে পারে, কিন্তু অভিজ্ঞতার দরজা খুলতে না। ভ্রমণ, গাছ আরোহণ এবং প্রজাপতি ধরা আমাদের সংজ্ঞাবহ ইন্দ্রিয় উন্মুক্ত করে, একজন গ্রামীণ মানুষের সঙ্গে একটি ছোট কথোপকথন, সাদা শিশির ক্ষেত্র থেকে তুলা উঠোনো, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা জানালা খুলে দেয়।”

“মোটরসাইকেল ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বাহন হিসাবে দেখা হয়। তাই আমি আসলে সবাইকে গাড়ির মোটরসাইকেলে ভ্রমণ করতে উৎসাহিত করবো। কারণ মোটরসাইকেলয়ে আপনি আপনি চারপাশের ৩৬০ ডিগ্রী দেখতে পাবেন। আপনি বায়ু, সূর্য দেখতে পারেন এবং আপনি আক্ষরিক অর্থেই শারীরিকভাবে প্রতিটি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, মানসিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে। তাই আমি সবাইকে মোটরসাইকেল ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে নেবার জন্য উৎসাহিত করবো।”

জেনিথ এর মোটরসাইকেল ভ্রমণের একটি ভিডিও দেখুন ফেসবুকে

Exit mobile version