সোমালিয়ার পান্টল্যান্ডের তরুণ উদ্ভাবক আশার বাহন নির্মাণ করেছে

12418114_1684864778457712_7346453097078162351_n

১৩ বছর বয়স্ক উদ্ভাবক, গুলেদ আদান।

গুলেদ আদান, যার বয়স ১৩ বছর, সে সোমালিয়ার স্বায়ত্বশাসিত অঙ্গরাজ্য পান্টল্যান্ডের এলাকা বুহোদেল তার জন্ম।

সে এক বঞ্চিত সম্প্রদায়ের নাগরিক, গুলদে-এর পিতা যখন মারা যায় তখন সে এক শিশু এবং তার পিতার মৃত্যুর কারণে তাকে তার দুই ভাই-এর দেখাশুনা করতে হয়।

বর্তমানে সে তৃতীয় ধাপে পড়ালেখা করছে।

কঠোর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিক্রান্ত করলেও গুলেদ এবং তার পরিবার সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। গুলেদ ফেলে দেওয়া উপকরণ এবং বাতিল হয়ে যাওয়া অটোমেটিভ ব্যাটারি জোড়া লাগিয়ে খেলনা প্লেন, অস্ত্র সজ্জিত গাড়ি এবং পাখা বানিয়েছে।

গুলেদ-এর জোড়া লাগানো খেলনার ছবি। এই সকল ছবি পান্টল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি তথ্য বিভাগ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে এবং অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।

গুলেদ এমন এক রাষ্ট্র থেকে এসেছে যে রাষ্ট্র প্রায় ৩০ বছর ধরে এক গৃহযুদ্ধ চলছে।

যারা গুলেদ-এর অসাধারণ উদ্ভাবনের প্রশংসা করছে, সোমালিয়ার পান্টল্যান্ডের সরকারের রাষ্ট্রপতি আবদেওয়ালি মোহাম্মদ তাদের মধ্যে অন্যতম।

৪ জানুয়ারী ২০১৫-্‌ গুলেদ পান্টল্যান্ডের সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতি আলি, উপরাষ্ট্রপতি আব্দেহাকিন আবদুল্লাহি হাজি ওমর এবং সংসদের স্পিকার সাথে সাক্ষাৎ করে।

সোমালিয়ার পশ্চিম অংশের চিন্তাধারার অনেকটা বাইরে থেকে পান্টল্যান্ড কখনো সোমালিয়া থেকে আলাদা হওয়ার বা স্বাধীনতার দাবী তোলেনি, বরঞ্চ ১৯৯৮ সালে এটি নিজেকে স্বায়ত্বশাসিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। এ অঞ্চলের নেতারা বারবার উচ্চারণ করে আসছে তাদের চাওয়া হচ্ছে এক সংযুক্ত সোমালিয়া।

সোমালিয়ার পান্টল্যান্ডের সরকার প্রধান আব্দিওয়েলি মোহাম্মদ এবং তার মন্ত্রী পরিষদের সাথে দাঁড়িয়ে গুলেদ। ছবি পান্টল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির তথ্য মন্ত্রণালয় বিভাগ থেকে পাওয়া এবং অনুমতিক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে।

গ্লোবাল ভয়েসেসকে প্রদান করা বিশেষ সাক্ষাৎকারে গুলেদ জানাচ্ছে কি ভাবে তার এই শখের শুরু :

আমি তখন স্কুলের তৃতীয় গ্রেডে পড়ি। স্কুলে এগুলোর কোনটাই শিক্ষা দেওয়া হয় না। যখন আমার অবসর, তখন আমি এই সব কাজ করে থাকি এবং এটি ছিল এর যোগ্য।

গুলেদ এর মা বেগম মারিয়াম হাসানকে যখন এই একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, তখন সে অকপটে এর উত্তর দেয়:

গুলেদের বাবা যখন মারা যায়, তখন আমাকে সামনে এগিয়ে আসতে হয়েছে, সন্তানদের যা প্রয়োজন তা তাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাদের মুখে আহার তুলে দেওয়ার জন্য, তাদেরকে তাদের নিজেদের হাতে ছেড়ে দিয়ে আমাকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছে, আর সে সময় আমাকে গুলেদের পা দুটি বেঁধে রেখে যেতে হত, যাতে সে বাড়ি বের হয়ে যেতে না পারে কিংবা হারিয়ে না যায়। কারণ আমার আয়া রাখার ক্ষমতা ছিল না। যাতে সে ব্যস্ত থাকে তার জন্য আমি তাকে কিছু প্লাস্টিকের সামগ্রী প্রদান করি এবং বলি যেন সে সেগুলো জোড়া দেয়। আমার ধারন, এভাবে তার বিস্ময়কর উদ্ভাবনের শুরু।

সোমালিয়া এমন এক রাষ্ট্র, যা কেবল যুদ্ধ, বিশংঙ্খলা এবং ধবংসের কারণে আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে আসে, সেখানে গুলেদের কাহিনী মানবের সৃষ্টিশীলতা, শৈল্পিক দক্ষতা এবং সৃষ্টিশীলতার স্বাক্ষ্য প্রদান করছে

Exit mobile version