বাংলাদেশের কাছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে হেরেও ইতিহাস গড়লো আফগানিস্তান

Image from the Bangladesh Afghanistan Match from Manuka, Oval. Image By Rezwan

মানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের ছবি। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান।

ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ আফগানিস্তানের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। কারণ এদিন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে দেশটির। এদিন তারা অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় মানুকা ওভাল মাঠে বাংলাদেশের মোকাবেলা করে।

আফগানিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ছিল অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং মেধাবী খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গড়া একটি দল। আর তাই বাংলাদেশ খুব সহজে ১০৫ রানে আফগানিস্তানকে হারিয়ে দেয়। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালালে বহু আফগান প্রতিবেশী পাকিস্তানে পালিয়ে যায়। সেখানেই তাদের ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়। বর্তমানে আফগানিস্তানে সবচে’ জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশও তুলনামূলক নতুন দল। ১৯৯৯ সালে দেশটি বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচ খেলেছিল।

২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয়ের কারণে আফগানিস্তান খেলার শুরুর আগে নিজেদের যথেষ্ট সামর্থ্যবান ভেবেছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এশিয়া কাপের তুলনায় মানুকা ওভাল মাঠের পিচ ছিল পেস ও বাউন্স সহায়ক

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ দেখতে দর্শকদের সারি। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান।

আফগানিম্তান হারলেও খেলার প্রথম দিকে তাদের দর্শকরা খুব উৎফুল্ল ছিলেন। কারণ প্রথম ২৫ ওভারে আফগান বোলাররা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশ চাপের মুখে রেখেছিলেন। চার উইকেটও পড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া রানরেটও ছিল কম। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের ১১৪ রানের পার্টশিপে বাংলাদেশ ২৬৭ রানের স্কোর করে। এদিকে আফগানরা ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায়। প্রথম তিন ওভারে তিন উইকেট পড়ে যায়। রানের খাতায় যোগ হয় মাত্র তিন রান। তারপরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। ৪২.৫ ওভারে ১৬২ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস।

ক্যানবেরায় প্রায় ৭০০০-৮০০০ বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাছাড়া সিডনি ও মেলবোর্ন থেকেও অনেক বাংলাদেশি খেলা দেখতে এসেছিলেন। খেলায় ১০,৯৭২ জন দর্শকের মধ্যে ৯০০০ জনের বেশি ছিলেন বাংলাদেশি। তাই ক্যানবেরার মানুকা ওভাল যেন হয়েছিল একটুকরো বাংলাদেশ

দর্শকদের কিছু ছবি রইলো এখানে:

বাংলাদেশি সমর্থক। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান (১৮/২/২০১৫)।

আফগান সমর্থক। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান (১৮/২/২০১৫)।

বাংলাদেশ দলের লাল-সবুজ জার্সি পরে আছেন একজন সমর্থক। বাংলাদেশের পতাকার রং-ও একই। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান।

আফগান সমর্থকরাও নিজেদের রাঙিয়ে মাঠে গেছেন। ছবি তুলেছেন রেজওয়ান (১৮/২/২০১৫)।

খেলা নিয়ে অসংখ্য মানুষের আলোচনার কারণে সেদিন টুইটারে #সিডব্লিউসি১৫ এবং ‍#বিএএনভার্সেসএএফজি হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছিল।

বিসিবি টাইগারদের জন্য আজকের ম্যাচটা বেশ বড়! দু'দলের খেলোয়াড়দের দেখুন।

টিমের প্রতি ভালোবাসা রইলো। টাইগাররা গর্জে ওঠো। আশা করি, তোমরা সবাই ভালো খেলবে।

আউট! আফগানিস্তান তিন উইকেটে তিন রান। বাংলাদেশি দর্শকরা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে।

উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে বাংলাদেশি সমর্থকরা। আফগানরা এখন পর্যন্ত কোনো বাউন্ডারি মারেনি। ৯ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১৯ রান।

আনন্দে আর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে মানুকা ওভাল।

মানুকা ওভালে টাইগারদের বিজয়ী হতে আর বেশি দেরি নেই। তাই এই সমর্থকরা খুব খুশির মুডে আছেন।

ঐতিহাসিক ম্যাচ শেষে দু'দলের খেলোয়াড়রা হ্যান্ডশেক করছেন।

খেলা শেষ হওয়ার আগেই কাবুলের মার্কিন দূতাবাস আফগানিস্তানকে জয়ী ঘোষণা করে টুইট করে, যা ব্যাপক হাস্যরসের জন্ম দেয়। এই টুইটটি ৩০০ বারের বেশি রিটুইট করা হয়। তাছাড়া ১০০ জনের বেশি টুইটার ব্যবহারকারী এটিকে ফেভারিট টুইট হিসেবে যোগ করেন।

হাহ্! স্বাভাবিক ভাবেই অন্য মার্কিন সংস্থার মতোই কাবুলের মার্কিন দূতাবাস প্রত্যাখানের জগতে বসবাস করছে।

আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ: আমেরিকা আবারো আগেভাগে জয় ঘোষণা করে ফেললো।

তবে অন্য একটি টুইটে মার্কিন দূতাবাস এটিকে “অপরিপক্ব উচ্ছ্বাস” বলে অভিহিত করেছে। যদিও বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস বজায় রেখেছে।

Exit mobile version