ইন্টারনেট মীমের মাধ্যমে মায়ানমারে খনির বিরোধীতাকারী এক গ্রামবাসী খুনের প্রতিবাদ

Students in Yangon condemned the killing of a villager who was protesting the operation of a China-backed copper mine project. Photo from the Facebook page of DVB TV News

ইয়াঙ্গুনের ছাত্ররা, চীনের সহায়তায় গ্রহণ করা এক তামার খনি প্রকল্পের পরিচালনার প্রতিবাদকারী গ্রামবাসীর খুনের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। ছবি ডিভিবি টিভি নিউজের ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া।

মায়ানমারের লেটপাডাউঙ্গ–এ, চীনের সয়তায় গ্রহণ করা এক তামার খনি প্রকল্প এলাকায় এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। নিহত বিক্ষোভকারী একজন নারী, আর তার পরিচয় উন্মোচিত হয়েছে, নাম খিন উন, সে স্থানীয় প্রতিবাদকারী দলের এক সদস্যা, যারা উক্ত প্রকল্প এলাকায় ওয়ানবাও খনি কোম্পানির এলাকাটিকে বেড়া দিয়ে ঘেরার বিষয়টির প্রতিরোধ করছিল। গ্রামবাসীরা দাবী করছে যে এই হামলার সময় ওয়ানবাওকে পুলিশ সহায়তা করেছে। তবে এই বিষয়টি পরিষ্কার নয় যে, নিহত এই মহিলা ওয়ানবাও-এর সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মী নাকি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে।

সাগাইন বিভাগের এই তামার খনি প্রকল্প যা ফেব্রুয়ারি ২০১২-এ শুরু, সে সময় গ্রামবাসী এবং মায়ানমারের অনেক দল এর বিরোধিতা করেছিল। খনি এলাকার জমির মালিকদের মধ্যে কেউ কেউ ওয়ানবাও-এর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করে এবং তার বদলে তারা এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পথ বেছে নেয়। এর কোন এক বিক্ষোভে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, জল কামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে এবং অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভকারী একদল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়, উক্ত ঘটনায় ৫০ জন আহত হয়।

বিক্ষোভকারী উক্ত মহিলার নিহত হওয়ার সংবাদ মায়ানমারের অনেককে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। দেশটির প্রাক্তন রাজধানী ইয়াঙ্গুনে, ছাত্ররা তাদের ক্ষোভ প্রকাশে দ্রুত এক সমাবেশের আয়োজন করে। এদিকে সরকার এবং গণ প্রজাতন্ত্রী চীনকে লক্ষ্য করে বিদ্রূপাত্মক মজার মীম প্রকাশ করে নেট নাগরিকরা এই ঘটনায় সাড়া প্রদান করে।

“কনডেসেনডিং ওঙ্কা” (চার্লি এন্ড দি চকোলেট ফ্যাক্টরি চলচ্চিত্রের এক চরিত্র) মীমের মাধ্যমে সোমায়েল সেলেসটিয়াল রাষ্ট্রপতি থিয়েন সিয়েনকে এক বিদ্রুপাত্মক প্রশ্ন করেছে :

উপরে লেখা: যে সকল বড় মানুষ আবার নির্বাচিত হতে চায়, তা হতে পারে যদি কেবল নাগরিকরা একমত হয়।
নীচে লেখা: আমাদের আরো বিস্তারিত জানান, কি ভাবে মাথায় গুলি খেয়ে মরার পরেও একজন নারী আপনাকে ভোট দেবে।

এনগা পাইঙ্গ প্রাথমিক এই সংবাদে বিস্মিত, যে সংবাদে বলা হয়েছে পুলিশ মহিলার পা লক্ষ্য করে গুলি করেছিল, কিন্তু দুর্ঘটনাক্রমে তা মাথায় গিয়ে আঘাত হানে

উপরে লেখা:বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র যা “পায়ে গুলি করলে মাথায় আঘাত করে” এমন বন্দুক আবিষ্কার করেছে’
নীচে লেখা:মায়ানমার

“শেল্টারড সার্বাবান কিড” ব্যবহার করে মিন সাট পাইঙ্গ তাদেরকে নিয়ে একটি মীম তৈরী করেছে, যারা গ্রাম্য এলাকার এই সংগ্রামকে এড়িয়ে যায়।

উপরে লেখা: গুলি খাওয়ার জন্য
নীচে লেখা: সে নিশ্চয়ই বোকার মত কিছু করেছিল

 အင်ဘရန် လတောင် , গ্রামের নাগরিকদের জীবন নিয়ে একটি মীম তৈরী করেছে যারা সরকার যখন ভূমির উপর তার দাবী করতে এগিয়ে আসলে সেই জমির উপর নিজের অধিকার হারিয়ে ফেলে।

উপরে লেখা (মহিলাটি বলছে): আমার মনে হয়, আমরা যদি আমাদের খামার বিক্রি করতে না চাই, তাহলে আমার তার অধিকার রয়েছে?
মাঝখানে লেখা (পুরুষটি বলছে):কি বললে? তোমাদের খামার?
নীচে লেখা (পুরুষটি বলছে): এমনকি চীন চাইলে নায়ে পি দাও [মায়ানমারের রাজধানী] তার কাছে বিক্রি করে দিতে হবে!

စက္ကန်း ကမ္မင်း উপদেশ প্রদান করেছে, পা লক্ষ্য করে গুলি করলে তা মাথায় গিয়ে আঘাত করে এমন বুলেট থেকে কি ভাবে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। আর এই ক্ষেত্রে সে বাজে উপদেশ থিয়েন সিয়েন” নামক বিখ্যাত স্থানীয় মীম ব্যবহার করেছে, যে উপদেশ খুব সাধারণ, কিন্তু দারুণ মজাদার:;

উপরে লেখা: যদি তোমরা আগামীতেও বিক্ষোভ করার কথা চিন্তা কর
নীচে লেখা : দয়া করে হাত উপরে তোলা অবস্থায় বিক্ষোভ করতে এসো

অসমর্থিত এক সংবাদসূত্রে জানা গেছে সেখানে চীনা সশস্ত্র ব্যক্তি এই সংঘর্ষে উপস্থিত ছিল, সোমায়েল সেলেসটিয়াল তার দেশের মর্যাদার বিষয়ে বিস্মিত

উপরে লেখা:নিশ্চিত নই এটা মায়ানমার প্রজাতন্ত্র
নীচে লেখা: নাকি চীন প্রজাতন্ত্রের মায়ান দিয়ান [চীনা ভাষায় মায়ানমার এই নামে পরিচিত]


ওয়ানবো মাইনিং কোম্পানি বিক্ষোভকারীর এই মৃত্যুকে “অর্থহীন” বলে অভিহিত করেছে এবং পুলিশকে এই ঘটনা তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে, তামার এই খনির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে।
Exit mobile version