ভারতের নির্বাচনে মোদীকে ভোট দেয়নি কেরালা

Bharatiya Janata Party (BJP) supporters were dancing in the streets to celebrate the win of the BJP. Image by Abhisek Saha. Copyright Demotix (21/05/2014)

নির্বাচনে জয়লাভের পর বিজেপি'র সমর্থকরা উল্লাস করছেন। ছবি তুলেছেন অভিষেক সাহা। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (২১/০৫/২০১৪)।

ভারতের নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। ইতোমধ্যে মন্ত্রীপরিষদ গঠনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তবে দক্ষিণের রাজ্য কেরালা মোদীর এই বিজয়-উত্সবে যোগ দেয়নি।

বিজেপি সারাদেশে প্রত্যাশিত আসন পেলেও কেরালার ২০টি সংসদীয় আসনের একটিতেও জেতেনি। যদিও নির্বাচনী প্রচারে মোদী বেশ কয়েকবার সফর করেছিলেন এই রাজ্য। তার এই সফল ভোটারদের মন টলাতে পারেনি।

কেরালার ইতিহাস কখনোই বিজেপির পক্ষে থাকার কথা বলে না। এখান থেকে তারা কখনোই কোনো সংসদীয় আসন পায়নি। এই রাজ্য সবসময় কমিউনিস্টদের ঘাঁটি ছিল। তাছাড়া এখানে বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। তাই এ রাজ্যে বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতি তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।

কেরালার মানুষজন মোদীকে নিয়ে সতর্ক ছিলেন। ২০০২ সালে গুজরাটে হিন্দু-মুসলিম প্রাণঘাতী দাঙ্গায় তার ভুমিকা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে।

কেরালার সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারীরা মোদীর পরাজয়কে উদযাপন করেছেন। টুইটার ব্যবহারকারী সনি কর্ণাটকের নিকটবর্তী রাজ্য ব্যাঙ্গালোরে থাকেন। কেরালার জন্য তিনি গর্বিত বলে মন্তব্য করেছেন:

কেরালা ভোটের ক্ষেত্রে এবারো তার ঐতিহ্য ধরে রাখলো। তারা দল নয়, যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিলেন। মোদীকে প্রত্যাখান করায় একজন মালু হিসেবে গর্ববোধ করছি।

কেরালার বিজয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে কলকাতার কুনজিলা মাসসিল্লামানি হেনরি ফেসবুকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন:

সম্ভবত আমার জীবনে এবারই প্রথম কেরালার রোল মডেলের জন্য বাকী দেশকে অভিনন্দন জানালাম। অন্ধকারের দিন এগিয়ে আসছে। তবে এটা সফল হবে না। কখনোই হবে না।

বিপুল জনতার মাঝে বিজেপির হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে লড়তে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়লেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি তুলছেন নিশার্গ লক্ষী। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (১০/০৫/২০১৪)

তবে কেরালার কিছু বিজেপি সমর্থকের বিজয় উদযাপনের ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। কেরালার গুগল প্লাস ব্যবহারকারী এনজিৎ একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সেখানে মোদীকে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের (আরএসএস) পোশাক পরে আছেন। উল্লেখ্য, আরএসএস হলো একটি উগ্রপন্থী জাতীয়তাবাদী গ্রুপ। এরা মোদীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েছে। ওই ছবির সাথে তিনি মন্তব্য করেছেন:

അഭിനന്ദനങ്ങള്‍. പരംവൈഭവം നേതുമേതത് സ്വരാഷ്ട്രം . അതയിരിക്കട്ടെ നരേന്ദ്ര ഭായി ഒരു സ്വയം സേവകന്‍ എന്ന നിലയില്‍ അങ്ങയുടെ കര്‍ത്തവ്യം.

অভিনন্দন। আমার জন্মভুমি এবার সমৃদ্ধ হবে। আরএসএসের একজন কর্মী হিসেবে আমি আশা করি, আপনি আমাদের দায়িত্বগুলো পালন করবেন।

মোদীর আরেক সমর্থক ডিলবা আসুরান তার গুগল প্লাস অ্যাকাউন্টে যুক্তি দিয়েছেন:

ഇത് മോദിയാണു മക്കളെ. കളി വേറെ. ചരിത്രത്തിലെ ഏറ്റവും വലിയ വിജയവുമായി ബിജെപിയും എൻഡിഏയും ജയിച്ച് കയറുമ്പോൾ ദിൽബൻ ആന്റ് കമ്പനിയുടെ പേരിലും പ്ലസ്സിലെ മോദി ഫാൻസിന്റെ പേരിലും എന്റെ സ്വന്തം പേരിലും അഭിവാദ്യങ്ങൾ അർപ്പിയ്ക്കുന്നു. രാജീവ് ഗാന്ധിക്ക് ശേഷം ഇന്ത്യ കണ്ട തൂത്തുവാരിയ വിജയം തനിക്കാണെന്ന് അവകാശപ്പെട്ടതും മോദി തെളിയിച്ചിരിക്കുന്നു. അബ് കി ബാർ മോദി സർക്കാർ!!

তিনি মোদী। ছোট কপাল নিয়ে আসেননি। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রয়াত রাজীব গান্ধী ছাড়া আর কেউ-ই তার মতো এমন বিপুল জয় পায়নি। আমি-সহ মোদীর সমস্ত সমর্থককে ধন্যবাদ জানাই। এখন সময় মোদী সরকারের।

এদিকে কেরালার মোদী বিরোধী অবস্থান উদযাপন করতে কেউ কেউ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। দিল্লীর আইনজীবী ববি কুনহু ফেসবুকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিজেপির প্রার্থীরা খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন:

আমার অনেক বন্ধুই কেরালা রাজ্যে বিজেপি কোনো আসন না পাওয়ার বিষয়টি উদযাপন করছেন। তাদের জন্য একটা সতর্ক বার্তা- বিজেপি এটার খুব কাছাকাছি চলে গেছে- থারুর ব্যবধান ৯০ হাজারের উপর থেকে ১৪ হাজারের উপরে এসে ঠেকেছে। এবং রাজাগোপাল দ্বিতীয় হয়েছেন। সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কেরালার বামপন্থী এবং কেরালা সোসাইটিসহ মূলধারার রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িকতাকে ভালোভাবে সামলে নেয়ায় সেখানে বিজেপি তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি।

গুগল প্লাস ব্যবহারকারী রাজেশ কুন্নথ একই ধরনের অনুভূতি শেয়ার করেছেন:

കേരളം എന്തോ വലിയ വ്യത്യസ്തത കാണിച്ചു എന്ന് കരുതുന്നത് മൗഡ്ഡ്യമാണു്.. ശക്തരായ രണ്ടു മുന്നണികളിൽ ആയി ജനം വിഭജിച്ചു പോരടിച്ചു നിന്നതിനാൽ ഫാസിസ്റ്റ് രാഷ്ട്രീയത്തോടുള്ള കേരളത്തിന്റെ കൃത്യമായ നിലപാട് വ്യക്തമായില്ലെന്നെ ഞാൻ പറയൂ. ഒരുപക്ഷെ, ഒരു ബിരിയാണി ചെമ്പ് അടുപ്പത്തിരിക്കുന്നതുപോലെ ഉള്ളിൽ , നന്നായി വെന്തു ഫാസിസത്തിന് തിന്നാൻ പാകത്തിൽ ഇരിക്കുകയാണെന്ന് എനിയ്ക്ക് തോന്നുന്നു. ഒരു സിപ് വലിചൂരുന്ന ലാഘവത്തോടെ അവർക്ക് കേരളത്തെ ഒരുപക്ഷെ മാറ്റാൻ കഴിഞ്ഞേക്കും.

কেরালা অন্যরকম কিছু করে ফেলেছে, এইটা যারা ভাবছেন, তারা আসলে গর্দভ। এখানে অন্য দু'টি প্রধান দলের সাথে বিজেপির পার্থক্য তেমন একটা নেই। আমরা উগ্র আচরণকে মিস করছি। একটা পাত্রে খাবার রেখে অপেক্ষা করেন। দেখবেন, সবাই খেতে এসেছে। তালা ভেঙ্গে সব চেটেপুটে খেয়ে সাফসুতরো করতে সম্ভবত এক মুহূর্তমাত্র অপেক্ষা করতে হবে।

Exit mobile version