মালয়েশিয়ায় শূকরের ছবি নিষিদ্ধ

মুসলমানদের জন্য শূকরের মাংস খাওয়া হারাম, তা আমরা জানি। কিন্তু তারা কি শূকরের ছবি দেখতে পারবে?

মালয়েশিয়ার স্থানীয় একটি প্রকাশনা সংস্থা বিশ্বাস করে, মুসলমানদের জন্য শূকরের ছবি দেখা হারাম। এজন্য তারা নিউ ইয়র্ক টাইমসের ২২ জানুয়ারি ২০১৪ এর আন্তর্জাতিক সংস্করণের শূকরের দুটি ছবি কালো কালি দিয়ে ঢেকে প্রকাশ করে।

“দেশের বাইরে শূকরের চাহিদা বাড়ছে” শিরোনামের প্রতিবেদনে শূকরের ছবি সংযুক্ত ছিল।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের মালয়েশিয় সংস্করণে কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেয়া বিতর্কিত ছবিটি দেখা যাচ্ছে। ছবিটি মালয়েশিয়ান ইনসাইডারের ওয়েবসাইট থেকে নেয়া হয়েছে।

কেএইচএল প্রকাশনা সংস্থার একজন মুখপাত্র বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে নগ্নতা, ধূমপান এবং আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি প্রদর্শন ‘নিষিদ্ধ'। সেই নীতিতে তারা শূকরের ছবি প্রকাশ করেননি। যদিও মালয়েশিয় সরকার শূকরের ছবি প্রকাশে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছে। এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস ছবি ব্ল্যাক আউট করার ব্যাপারে কিছু জানে না।

মালয়েশিয়ার অনেক নাগরিক এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় আনাক১মালয়েশিয়া উদ্বিগ্ন হয়ে জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার ভবিষ্যত শিশুরা শূকর দেখতে কেমন সেটাই ভুলে যাবে:

আমি দিব্যচোখে দেখতে পাচ্ছি, নিকট ভবিষ্যতের মানুষেরা শূকর দেখতে কেমন তাই জানতে পারবে না। যদি আমাদের মুসলিম শিশুদের সাথে শূকরের দেখা মিলে, তাহলে এটা তাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। কারণ তারা তাদের পাঠ্য বইয়ে এর ছবি কখনো দেখেনি।

শাওন ট্যান মনে করেন, এটা সেলফ-সেন্সরশিপের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে:

এটা সেলফ-সেন্সরশিপ সংস্কৃতি। কেননা, কেউই কোনো ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে চায় না। বিশেষ করে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যেকোনো ধরনের সমস্যা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। সবসময় নির্বিঘ্ন থাকতে চায়।

মেদিহা প্রকাশনা সংস্থাকে মনে করিয়ে দেন, শূকরের ছবি দেখা হারাম নয়:

শূকরের ছবি দেখা হারাম নয়। এটা খাওয়া শুধু হারাম। তবে যদি ছুঁয়ে থাকেন, তাহলে ধুয়ে পবিত্র হওয়া দরকার।

আমরা অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে যাচ্ছি? এরপরে কী? শূকর শব্দটিই কি নিষিদ্ধ করে দিবো?

পত্রিকায় ছবি ব্ল্যাক আউটের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কিলগোর সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, চিলির ‘চুম্বন প্রতিবাদ‘ বিষয়ে লেখা একটি প্রবন্ধের ছবি একই ভাবে ব্ল্যাক আউট করেছিল:

এর আগে নিউ ইয়র্ক টাইমস চিলির শিক্ষার্থীদের ‘চুম্বন প্রতিবাদের’ একটি লেখায় একই কাজ করেছিল। তারা প্রতিবাদে অংশ নেয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর চুম্বনের ছবি কালো বক্স দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল।

মালয়েশিয় জনগণ আবার বেঁচে গেল। করদাতাদের টাকা সৎ ভাবেই খরচ হলো।

Exit mobile version