কোচাবাম্বার গণ পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধিতে বলিভীয় নাগরিকদের প্রতিবাদ

বলিভিয়ার কোচাবাম্বায় একটি বাস। ছবি, মিজহেইল এফ ক্যালে রুইজ-এর।

[সকল লিঙ্ক স্প্যানিশ ভাষার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত]।

গণপরিবহনে চালকেরা বিস্তৃত এক ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে যখন ঘোষণা করা হয় যে একবার যাত্রার মূল্য ১.৭০ থেকে ২.০ বলিভিয়ানোস (০.২০ থেকে ০.২৯ মার্কিন ডলার) করা হচ্ছে।

সকাল বেলায় যখন সংবাদ পাঠকেরা এই সংবাদ প্রকাশ করে, তার কয়েক ঘন্টা পরে বলিভিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহরের গণ পরিবহনের দায়িত্বে নিয়োজিত কোচাবাম্বা পরিবহন সংস্থার কর্মকর্তারা (ইউনিদাদ দে কোচাবাম্বা দে ট্রানজিটো) রাস্তায় নেমে পড়েন এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে যে গাড়ি চালকেরা মূল ভাড়া ১.৭০ বলিভিয়ানোস গ্রহণ করছে। তবে মূল্যবৃদ্ধি ঘোষণার সাথে সাথে স্থানীয়রা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তাদের অসোন্তষ প্রকাশ করা শুরু করে। যেমন, এর এক উদাহরণ, পরিবহন চালকদের বিরোধীতা করে ফেসবুকে এক আন্দোলন শুরু হয়।

লামালাপালাব্রা নামক পত্রিকা থেকে ছবি ডাউনলোড করা হয়েছে (৮৩টি বার প্রদর্শিত হয়েছে)

যে উপাদান প্রচার করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, শহরের গণপরিবহনের সেবা নিয়ে নাগরিকদের সাধারণ ভাবে অসন্তোষ রয়েছে, এতে এই বিষয়টি নির্দেশ করছে যে যদি সেবার মান উন্নত হয়, তাহলে নাগরিকরা তার জন্য বেশী অর্থ প্রদান করতে রাজী। এই প্রচারনার সমর্থকরা যে দাবী করেছে তাতে চালকদের বিষয়েও কিছু দাবী ছিল:

সোশ্যাল নেটওয়ার্কে স্থানীয়রা যে চিত্র এবং বার্তা তুলে ধরছে তা একই সাথে পরোক্ষ ভাবে এই বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে যে যে বাসের চালকেরা খুচরা পয়সা ঠিক মত প্রদান করে না, এটি এমন এক সমস্যা যা ২০১১ সালে বাস ভাড়া বাড়ানোর ফলে শুরু হয়েছে। যেমন এর এক উদাহরণ হচ্ছে, যদি কেউ ২ বলিভিয়ানোস প্রদান করে (০.২৯ মার্কিন ডলার) তাহলে চালকের উচিত তাকে ৩০ সেন্ট প্রদান করা (০.০৪ মার্কিন ডলার) উচিত, তবে ১০ সেন্টের পয়সার ঘাটতি থাকার কারণে চালকেরা নিয়মিত ভাবে কেবল ২০ সেন্ট প্রদান করে থাকে।

ফেসবুক ব্যবহারকারী মিং রোহাস-এর প্রোফাইল পাতার স্ক্রিনশট, যে প্রতিবাদের উপাদান প্রদর্শন করছে (১৪৫ জন তা প্রদর্শন করেছে)।

উপরের এই চার্ট ব্যাখ্যা করছে কিভাবে প্রায় ১০ মাসে “চালকেরা খুচরা পয়সা ফেরত না দিয়ে ৮,০০০ বলিভিয়ানোস বা ১,১৪৯ ডলার তছরুপ (…) করেছে”। এছাড়াও, উক্ত প্রচারণা নাগরিকদের এই সব তথ্য ফটোকপি করতে এবং আরো নাগরিকদের মাঝে তা বিতরণে উৎসাহ প্রদান করছে যাতে আরো অনেকে এই আন্দোলনে যোগ দেয়।

এই সমস্ত উপাদানের প্রতি যে সাড়া পড়েছে তা ইতোমধ্যে দারুণ প্রভাব তৈরী করেছে, প্রদর্শিত এই সমস্ত উপাদানে মন্তব্য করা ছাড়াও, স্থানীয় নাগরিকেরা তাদের নিজস্ব ফেসবুকে এই বিষয়ে প্রতিবাদ করছে। জেসিকা গিল্ডা মোরালেস বেলোট লিখেছে যে:

Como van a exigir si hace poco aumentaron los pasajes y el servicio q dan es pesimo en todo,aumentan asientos improvisados con tal de tener mas pasajeros para cobrar…

কি ভাবে তারা এই দাবী করতে পারে, যেখানে মাত্র কিছুদিন আগেই তারা ভাড়া বাড়িয়েছে। তারা যে সেবা প্রদান করে তা ভয়াবহ। তারা নিজেরাই বাসের মধ্যে কয়েকটি আলাদা ভাবে নতুন করে সিট বসিয়েছে যাতে তারা আরো বেশী যাত্রী উঠিয়ে, তাদের কাছ থেকে টাকা নিতে পারে…

এলসেকোয়েল লিওনার্ড মার্টিনেজ  লিখেছে:

Pero cuando a alguien le falta 10 cts. esos pelotudos le dicen bajate no?                                                                                                                                 

কিন্তু যখন আপনার ১০ সেন্ট কম থাকবে, তারা বলবে বাস থেকে নাম, ওহ?

ইন্টারনেট অনেকে বেশ জোশের সাথে বিষয়টিকে গ্রহণ করেছে, আবার কেউ কেউ দায়িত্বশীল হিসেবে এখনো প্রতিবাদের সাথে নিজেকে চিহ্নিত করছে। এদিকে দেশের বিভিন্ন শহরের কয়েকজন এই বিষয়ে বেশ হাস্যরসাত্মক মনোভাব গ্রহণ করেছে:

এই ছবিটি লামালাপালাব্রা পত্রিকা থেকে নেওয়া। এই ছবিটির শিরোনাম হচ্ছে: লাপাজের একটি রাস্তায় … উপরের এই ছবিটি ১৭২টি লাইক পেয়েছে এবং ৭৪ জন তা প্রদর্শন করেছে। ছবির ভাষা হচ্ছে: ধাক্কা মার, সবুজ বাতি জ্বলেছে, ধাক্কা মার!!!”

গণপরিবহন চালকদের এই ঘোষণার পর,কোচাবাম্বার বাসিন্দারা রাস্তার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এদিকে, চালকেরা মূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কোন চুক্তিতে উপনীত না হতে পারায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট পালন করা শুরু করেছে

যখন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক-এ আন্দোলনের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়,তখন আর্জেন্টিনার পত্রিকা এন(Ñ) এর জন্য সাংবাদিক হোরাসিও বিলবাওকে প্রদান করা সাক্ষাৎকারে ম্যানুয়েল ক্যাস্টেয়াস প্রতিক্রিয়া স্মরণ করা যেতে পারে:

¿Internet puede volver a crear ciudadanos político sociales?
La prueba está en que los movimientos sociales nacen en Internet. Se crean ciudadanos en todo lugar de agregación libre. Y como el único lugar de agregación libre que nos queda es Internet, pues allí están. Pero en cuanto pueden salir a la calle y crear espacios físicos urbanos en los que se tocan los unos a los otros lo hacen, porque somos humanos y el tocarnos es fundamental.

ইন্টারনেট কি রাজনৈতিক এবং সামাজিক সচেতন নাগরিক তৈরী করতে পারে ?
এটি প্রমাণিত যে সামাজিক আন্দোলনের জন্য ইন্টারনেটে। যেখানে কোন মুক্ত সংসদ রয়েছে সেখানেই নাগরিকরা গড়ে ওঠে। আর আমাদের জন্য এখন একমাত্র মুক্ত সংসদের স্থান হচ্ছে ইন্টারনেট, বেশ আর সেই স্থানে তারা রয়েছে। কিন্তু যখনই রাস্তায় বের হয়ে আসতে সমর্থ হয় এবং গ্রামীণ জীবন তৈরী করে, তাতে এমন এক বাস্তব স্থান তৈরী হয়, যেখানে তারা একে অন্যকে স্পর্শ করতে পারে, তারা তা করে, কারণ আমরা মানুষ এবং শারীরিক যোগাযোগ আমাদের জন্য এক মৌলিক শর্ত।

বলিভিয়ায় অবস্থিত আভেনিদা ব্লাঙ্কো গালিন্দো ডে কোচাবাম্বা। ছবি:মিজহেইল এফ ক্যালে রুইজ-এর।

Exit mobile version