ছবিঃ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানে ফিলিপাইন্সের মধ্যাঞ্চল বিধ্বস্ত

Typhoon survivors in Ormoc, Leyte paint the street with a HELP sign. Photo from Facebook of Katreena Bisnar

অরমক, লেয়তে'র টাইফুন আক্রান্তরা রাস্তার উপর চিহ্ন একে সাহায্য চেয়েছেন। ছবিটি ক্যাটরিনা বিস্নার ফেসবুক পাতা থেকে সংগৃহীত।

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়োলানডা (হাইয়ান) ফিলিপাইন্সের ভিসায়াস দ্বীপে আঘাত হেনেছে। এতে করে কয়েক হাজার লোক মারা গেছে এবং বাস্তুহারা হয়েছে। এই মুহূর্তে অনেক শহরের পরিস্থিতি যেহেতু এখনো অজানা, তাই ধরা হচ্ছে আহত, নিহত বা নিখোঁজ লোকের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশী হবে।

টাকলোবান শহর সহ সামার এবং লেয়তে প্রদেশ ইয়োলানডার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকলোবান শহরে একটি ঝড়ো জলোচ্ছ্বাসে তাৎক্ষনিকভাবে অনেক লোক মারা গেছে। এ অঞ্চলে শক্তি ও যোগাযোগ লাইনগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর একটি ইয়োলানডা উত্তর সেবু, পানায়, নেগ্রোস এবং পালাওয়ানেও আঘাত করেছে।

দেশটির ঘুর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত প্রদেশগুলোর অবস্থা সম্পর্কে বিদেশী সম্প্রচার শুনে প্রতিবেদন পেশ করতে প্রধান টুইটার হ্যাশট্যাগ #ইয়োলানডাফ ব্যবহার করা হচ্ছে। ইয়োলানডার ধ্বংসের তীব্রতা বোঝাতে কিছু ছবি নিচে দেয়া হয়েছেঃ

ছবিসূত্রঃ রিয়ান লিম/ স্থানঃ আকাশ থেকে তোলা লিয়েটে ধ্বংসের আলোকচিত্র #ইয়োলানডাফ  

আজ সকালে #টাইফুনইয়োলানডার প্রতিহিংসাপরায়ণতার ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করতে সাহায্য করতে পিএএফ যাযাবর সম্প্রদায় সমগ্র গুইয়ান প্রদেশের পূর্ব সামার জুড়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। 

ছবিঃ #ইয়োলানডাফ ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল ঢেউ টাকলোবান বিমানবন্দরটি গ্রাস করে নেয়ার পরবর্তী অবস্থা; অধিবাসীরা ত্রাণ সামগ্রীর জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে @ইনকোয়ারারডটনেট  

টাকলোবান বিমানবন্দরের রানওয়ে একেবারে পরিষ্কার, তবে বিমানবন্দরটির গঠন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আটকে পড়াদের উদ্ধার এবং জরুরী ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করতে বর্তমানে অবশিষ্ট সম্পদগুলো এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নেয়া হচ্ছে। টাকলোবানের গ্রাউন্ড জিরো। আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন! 

টাকলোবান শহরে সবার জন্য প্রার্থনা করুন। : (আশাহত হবেন না। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সাথে আছেন 🙂 

টাকলোবান থেকে ১০ মেইল দক্ষিণের টানাউয়ানে সমুদ্র থেকে ০.১৪ মেইল দূরে অবস্থিত একটি গির্জা স্থানান্তর কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

লিয়েটের টাকলোবানে #ইয়োলানডাফের কারণে তীরে ভেসে আসা একটি জাহাজের পাশের একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ভেতরে একজন লোক [ছবি] বিশ্রাম নিচ্ছে। 

লিয়েটের ডুলাগে আমাদের রাস্তাগুলোর ছবি। ডানের রাস্তাটির শেষ মাথায় আমাদের বাড়িটি অবস্থিত। #ইয়োলানডাফ   

টাইফুন আক্রান্তরা অরমিক, লেয়তের রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। থুবড়ে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং গাছ দেখা যাচ্ছে। ক্যাটরিনা বিস্নার ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া ছবি।  

কোন উদ্ধারকারী বাহিনী নাই, কোন প্রচার মাধ্যম নাই, কোন সংকেত নাই, কোন ত্রাণ নাই। প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগই বিধ্বস্ত।

বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদেরকে তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে বেঁচে যাওয়া লোকেরা টেলিভিশন রিপোর্টারদের কাছে হাতে লেখা বার্তা পাঠাচ্ছে। এসব বার্তা খুব দ্রুতই তারা অনলাইনে আপলোড করে দিচ্ছে। অতঃপর লিয়েটে প্রতিনিধিদের একটি দপ্তর বেঁচে যাওয়া লোকেদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে একটি তালিকাও তৈরি করেছে। 

নোটটিতে লিখা আছেঃ ভাই, মা এবং বাবা মারা গেছেন। দয়া করে সবাইকে জানান। এখানে কোন বিদ্যুৎ অথবা সংকেত পাঠাবার ব্যবস্থা নেই। আরন আলমাদ্রো। জি এম এ নিউজ থেকে পাওয়া ছবি।  

টুইটারের অন্যান্য প্রতিক্রিয়াগুলোও নিচে দেওয়া হলঃ 

মৃতের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে এবং #ইয়োলানডাফের এই ছবিগুলো সত্যিই খুব হৃদয়বিদারক। আমরা দুঃখিত কারন এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল…

দান হিসেবে প্রদত্ত বস্তু ও ত্রাণ সামগ্রী যেন উপযুক্ত গ্রহীতাদের কাছেই পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদেরকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও চাইতে হবে। #ইয়োলানডাফ

আমাদের কাপড় রাখার আলমারি থেকে কিছু অব্যবহৃত কাপড়চোপড় আমরা টাইফুনে ক্ষতিগ্রস্তদের দান করে দিতে পারি। #ইয়োলানডাফ

যদি টাকলোবানের জনগণ কর্তব্যবিমুখ আচরণ চালিয়ে যেতে থাকে, তবে আমি আশা করি তারা বুঝতে পারবে যে তারা নিজেদেরকে সাহায্য করছে না।

শেষের টুইটটিতে টাকলোবানের একটি শপিং মল লুট করার কথা নির্দেশ করা হয়েছে। সেখানে ঘূর্ণিঝড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা হন্যে হয়ে খাবার এবং পানি খুঁজেছে। পিনয় ব্রো এই আচরণের সমালোচনা করেছেনঃ 

…গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটা আমাকে খুব বেশী হতাশ করেছে যে, আমি খবরে এ ঘটনা নিয়ে একটিও সমালোচনা বা খবর ছাপতে দেখিনি বা পড়িনি। কমপক্ষে এখন পর্যন্ত তো নয়। আমাকে ক্ষমা করবেন। কারন আমি হয়তোবা এই পরিস্থিতিতে করুনাময় বা পরের জন্য সহানুভূতিশীল নই। হয়তোবা আমি টাইফুনে আক্রান্ত এ সকল লুন্ঠনকারীদের আবেগপূর্ণ প্রয়োজন বুঝতে পারছি না। কিন্তু আমি শুধু এটুকুই অনুভব করেছি যে, যা হয়েছে, তা করা ঠিক হয়নি।

কি হতো? যদি আপনি একটি ছোট্ট মুদি দোকানের মালিক হতেন বা এমনকি একই সারিতে থাকা কয়েকটি দোকানের মালিক হতেন। এবং কিছু সময় পরেই আপনি জানতে পারলেন যে লোকজন তালা ভেঙ্গে তাতে ঢুকে পড়েছে এবং সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে? আরে ফিলিপাইনের অধিবাসীরা, আমরা তো আসলে এমনটি নই।

কিন্তু আরনল্ড আলামন বোঝানোর জন্য বলেছেনঃ 

এখন বর্তমানে টাকলোবানে সাময়িকভাবে সামাজিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। আমাদের ভ্রাতৃগণ, যারা এইমাত্র এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন, তাদের প্রতি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমাদের আরেকটু বেশী দয়ালু হওয়া উচিৎ। এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে হয়তোবা এই বিধ্বস্ত শহরের প্রত্যেক অধিবাসীই তাদের পরিবারের কোন না কোন সদস্যকে হারিয়েছে। এখন তারা টিকে থাকার অনুকূল অবস্থা থেকে নিজেদের ছিটকে পরা লোক বলে মনে করছে। এই তথাকথিত লুটের ঘটনাটি এটাই প্রমান করে যে তাদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন পূরণে, দাপ্তরিক শক্তি প্রতিফল লাভ করার প্রতি তাদের আস্থা কতোটা ক্ষীণ। আর টাকলোবানের জনগণের তেজোদ্দীপ্ততার প্রতি তাদের আস্থা কতোটা কম।

Exit mobile version