কম্বোডিয়ায় নির্বাচন: ফেসবুকে ভোট

আগামী ২৮ জুলাই কম্বোডিয়ায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন নিয়ে নেটিজেনরা স্বত:স্ফুর্তভাবে ফেসবুকে নানা আলোচনা করছেন, বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন, নির্বাচনী পরিস্থিতির আপডেট দিচ্ছেন। এদিকে রাজনৈতিক দলগুলো তরুণদের ভোট পেতে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো ব্যবহার করছেন।

মোসেস এনজেথ নামের একজন অ্যাক্টিভিস্ট এবং মানবাধিকার কর্মী এর আগে কম্বোডিয়ার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে বলেছিলেন, তারা বিনোদনের জন্যই শুধু ফেসবুক ব্যবহার করেন। তিনি এখন বলছেন, তার সেই মন্তব্য ভুল ছিল:

কয়েক মাস আগে আমি মিডিয়ায় একটা সাক্ষাত্কার দিয়েছিলাম। সেখানে বলেছিলাম, তরুণরা ফেসবুক ব্যবহার করে শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। আর নিজের আগ্রহের বিষয়গুলোতেই তার কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখে। কিন্তু যেদিন থেকে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হলো, ফেসবুকের তরুণরা আমার ধারণাকে ভুল প্রমাণ করলো। আমি স্বীকার করে নিচ্ছি, তাদের সম্পর্কে আমি ভুল বলেছিলাম। আমি লক্ষ্য করছি, সেইসব তরুণদের সংখ্যা বাড়ছে যারা সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে পরিবর্তন চাইছে। আমি এই তরুণদের নিয়ে গর্বিত, তারা তাদের অধিকার সপক্ষে সরাসরি এসে দাঁড়িয়েছে, তাদের নেতা বেছে নিচ্ছে। আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন।

রাণী নরদম অরুণরাস্মী। তিনি প্রয়াত রাজা নরদম সিহানুকের মেয়ে এবং রয়ালিস্ট পার্টির প্রধান। তিনি নমপেনের ফ্রিডম পার্কে তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছেন। ছবি তুলেছেন থমাস ক্রিস্টোফলেট্টি। স্বত্ব: ডেমোটিক্স (৭/৩/২০১৩)

খেমার ভাষার পত্রিকা আরএফআই-এর সাংবাদিক এবং তরুণ নারী ব্লগার রাচনা ইম মোসেসের সাথে একমত পোষণ করে ফেসবুকে তার উদ্দেশ্যে লিখেছেন:

ফেসবুক এখন নতুনভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণরা একে তাদের রাজনৈতিক ভাবনা শেয়ার করার প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে […] আমার মনে হয়, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের এটা একটা ভালো দিক। এখানে যেমন একেকজনের অভিমত শোনা যায়, তেমনি কম্বোডিয়ায় যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে, সেটাও তুলে ধরে। যদিও বিষয়টি এখনো যথেষ্ট নয়, তবে একদম মন্দও নয়।

কম্বোডিয়ার যেসব নেটিজেন সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক বিতর্ক করছেন, রাচনা তাদেরকে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহবান জানান:

তারা সাধারণত বিরোধীদের ভাবনাকে গালমন্দ করে বক্তব্য শেষ করেন […] তারা বিশ্বাস করে, তাদের স্বাধীনতা আছে একটি দলকে সমর্থন করার। কিন্তু তারা অন্য দলের সমর্থকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। আমি কিছু সময় ফেসবুকের কিছু পোস্টে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি, যেগুলো আমার পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন। আমি বুঝতে পেরেছি যে, সেগুলো মাথা থেকে আসেনি, এসেছে আঙুলের খোঁচা থেকে।

যদিও রাচনা তরুণদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করার বিষয়টি প্রশংসা করে আশা প্রকাশ করেন, এটা কম্বোডিয়ায় মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।

কম্বোডিয়ার ওপেন ইনস্টিটিউটের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ম্যানেজার এবং বারক্যাম্প অনুষ্ঠানের প্রসিদ্ধ আয়োজক চান্ট্রা বে সবসময়ই রাজনৈতিক আলোচনা এড়িয়ে এসেছেন। এবার তিনিই রাজনৈতিক আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন। পোস্ট লেখকের সাথে এক সাক্ষাত্কারে চান্ট্রা তার রাজনীতির প্রতি আগ্রহের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন:

ব্যক্তিগতভাবে আমি রাজনীতি পছন্দ করি না। আমি কোনো রাজনৈতিক দলও করি না। আমি সবসময় মাঝামাঝিতে থাকতে পছন্দ করি। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমার ভোটাধিকার আছে। আছে মতামত শেয়ার করার অধিকারও। কম্বোডিয়ার নানা বিষয় নিয়ে ফেসবুকে আমি প্রায়ই এটা-ওটা পড়ি। আর এর অনেক কিছুই আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

সম্প্রতি, চান্ট্রা ক্ষমতাসীন দলের ১৬৪ উপদেষ্টার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিচার, বিনিয়োগ, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার নিয়ে তারা কেউই সরকারকে সঠিক পরামর্শ দেন নি:

সোভিচেট টেপ মাধ্যমিকে পড়ছেন। তিনি কম্বোডিয়ার সবচেয়ে কমবয়সী ব্লগারদের একজন। তিনি দেশে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব বাড়া প্রসঙ্গে লিখেছেন:

[…] ការចែករំលែកព័ត៌មានជាច្រើននៅលើបណ្ដាញសង្គម មិនមែនទើបតែកើតមានឡើងស្របពេលជិតបោះឆ្នោតឡើយ […] បើតាមខ្ញុំចាំគឺប្រហែលនៅពាក់កណ្ដាល ឬ ចុងឆ្នាំ២០១១ អ្នកប្រើប្រាស់បណ្ដាញសង្គមហ្វេសប៊ុកចាប់ផ្ដើមប្រែប្រួល ដោយផ្ដោតលើការចែករំលែកព័ត៌មាន ព្រោះព័ត៌មានមួយចំនួនពុំត្រូវបានចាក់ផ្សាយពេញលេញតាមបណ្ដាញផ្សព្វផ្សាយដូចជាទូរទស្សន៍ឬវិទ្យុឡើយ។

[…] তথ্য শেয়ার করা এখন ভাইরালে পরিণত হয়েছে। তবে এটা শুধু নির্বাচন আসার কারণেই শুরু হয়নি […] আমার মনে আছে, এই প্রবণতা শুরু হয়েছিল ২০১১ এর মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে এসে। এ সময়ে টিভি, রেডিও এর মতো মূলধারার মিডিয়ায় তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না বলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তথ্য শেয়ার শুরু করেন।

সোভিচেট এখনও খুব তরুণ। ভোটারও হননি। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, ইন্টারনেটে তথ্য শেয়ার হলে আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সাহায্য করবে:

ថ្វីបើខ្ញុំពុំទាន់គ្រប់អាយុបោះឆ្នោតក្ដី (តែនឹងចូលរួមក្នុងអាណត្តិក្រោយមិនឲ្យខាន) ក៏បណ្ដាញសង្គមលើអ៊ីនធឺណិតនោះ បានបង្ហាញឲ្យខ្ញុំយល់ជាក់ច្បាស់អំពីស្ថានការណ៍នាពេលបច្ចុប្បន្ន ដើម្បីត្រៀមខ្លួនដើម្បីជ្រើសរើសគណបក្សមួយដែលខ្ញុំគិត និងសង្ឃឹមថាធ្វើបានប្រសើរសម្រាប់ប្រទេសជាតិ។

যদিও ভোট দেয়ার জন্য আমি খুবই তরুণ (তবে পরের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবো), সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাকে অবগত করতে পারে। তাহলে আমি কোন পার্টিকে বেছে নেব, তার প্রস্তুতি নিতে পারি। আমি মনে করি, এটা আমাদের সমাজের জন্য খুব ভালো হবে।

Exit mobile version