মিয়ানমারঃ টাইম ম্যাগাজিনের ভোটে লেডি গাগাকে হারালেন সু চি

Aung San Suu Kyi, photo by Htoo Tay Zar, taken from Wikipedia

অং সান সু চি, ছবিঃ হুতু তাই যার, উইকিপিডিয়া থেকে নেওয়া হয়েছে 

১৭ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে এই দশকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অং সান সু চি। এটা মিয়ানমারের জনগণের জন্য গর্বের মুহূর্ত বয়ে এনেছে, যারা এই নেত্রীর প্রতি আকুন্ঠ সমর্থন জানিয়ে তাঁকে অবিশ্রান্ত ভোট দিয়েছেন। জনগণের পক্ষ থেকে সু চি’র জন্য এটি নববর্ষের উপহার হিসেবেও ধরা হচ্ছে। কারণ এপ্রিলের ১৬ তারিখ দিনটি মিয়ানমারের ক্যালেন্ডারে বছরের প্রথম দিন।

ভোট গণনা শেষে সু চি’র জয়ের পর অনেক লোক ফেসবুকে তাঁদের উল্লাস এবং অনুভূতি শেয়ার করেছেন। এখানে কিছু পোস্ট দেওয়া হয়েছেঃ

হেলেন আয়েকায় লিখেছেন যে এই ‘উপহার’ তাঁর দেশের একতারই ফলাফলঃ

মা, আপনার সন্তানেরা আপনাকে উপহার দিয়েছে, যেটি আমাদের সংহতিরই ফল। সুখী হোন।

তাও উইন ডাউন ভোটারদের কৃতিত্ব দিয়েছেনঃ

উচ্চ স্বরে বলুন কে জয়ী……!!!…J

জোরে একটা হাত তালি দিন কারণ আপনি এটার যোগ্য……

মু জও ও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে এই ভোটে জয়ের তাৎপর্য উল্লেখ করেছেনঃ

সু চি হচ্ছেন মিয়ানমারের জন্য একজন আইকন। মিয়ানমার পুনর্গঠনের জন্য আমাদের প্রেসিডেন্টও একজন প্রতীক। যেকোন ক্ষেত্রে দেশকে কিছু দেবার জন্য আমরা ভোট দিয়েছি। আমাদের জনগণের আত্মজ্ঞান এ থেকে বোঝা যায়। লেডি গাগার ভক্তকুল তাঁকে ভোট দেবার জন্য বিভিন্ন ফ্যান পেজ থেকে জনগণকে উৎসাহিত করেছে। অনুসারীর সংখ্যা, ইন্টারনেট ব্যবহারকারি এবং ইন্টারনেটের গতির মধ্যে বিস্তর ফারাক ছিল। আমি টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিযোগিতায় ভিন্ন ঘরনার দুই জন ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। ( একজন আইকন এবং একজন পপ তারকা; তিনি যদি ওবামা অথবা হিলারি ক্লিনটনের সাথে প্রতিযোগিতা করতেন তাহলে বেশি ভালো হতো।) সেখানে অবশ্যই ভোট দেবার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকবে। কিন্তু অসংখ্যবার ভোট দানের সুযোগ দেবার ক্ষেত্রে টাইম এর উদ্দেশ্য আমরা ভাবতে পারি। কিছু লোক ভাবে এটার দরকার নাই। কিন্তু এটা আমাদের জন্য অনেক কিছু। কারণ অতি সম্প্রতি আমরা বদ্ধ সমাজের বাইরে তাকাবার সুযোগ পাচ্ছি। লেডি গাগার ভক্তরা এবং লোকজন টাইম ম্যাগাজিন দেখে হয়তোবা অবাক হবেন (যদি তাঁরা আইপি পরীক্ষা করেন তবে জানবেন কারা ভোট দিয়েছেন)। আমরা মিয়ানমারের প্রবাসী এবং নিবাসী জনগণ সবাই একটি সন্ধিক্ষণে এসেছি। সবসময় যে মিয়ানমার শব্দটিকে অবজ্ঞা করা হতো, তা এখন স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। নতুন বছর আমরা একটি শুভ সংবাদ দিয়ে শুরু করেছি।

তিনি মিয়ানমারের জন্য আরও কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেছেনঃ

জাতি, শান্তি, উন্নয়ন এবং মিয়ানমারকে সঠিক পথে রাখার জন্য ভবিষ্যতেও আমরা এক থাকব বলে আমি সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি। টাইমের ভোট শেষ হয়েছে কিন্তু আমাদের এখনও জাতি গঠন করা বাকি। এদেশে এটার বয়স মাত্র ২ বছর। আমাদের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অতীতের বছরগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সামনের দিকে এগুতে হবে।

প্রতিযোগিতার আগের দিন এবং রাতে ভোটারদের কিছু অনুভূতি এখানে তুলে ধরা হলঃ

অং সান সু চি'র জন্য এক পরিবারের ভোট প্রদানের ছবি। শেয়ার করেছেন তাও উইন ডাউন। 

ভোটের ফলাফল নিয়মিত হালনাগাদ করেছে ফ্রিডম নিউজ গ্রুপঃ 

লেডি গাগা ৪৬% এবং অং সান সু চি ৫৪%। অং সান সু চি কে ভোট দেওয়ার সময় আছে আর মাত্র দুই ঘণ্টা।

ডেমো ফাত্তি অন্যান্য বার্মিজদের পক্ষে লিখেছেন যারা ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে পারেন না:

আমরা ২০ লক্ষ জনগণ মিয়ানমারের চার কোটি জনগণের পক্ষেও ভোট দিয়েছি, যারা সু চি কে ভোট দিতে চান কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পান না। তাতে কি? চল ভোট দিই, সব্বাই!

মাইকেল যে চু ও তাঁর মতামত দিয়েছেনঃ

লেডি গাগা এবং আমাদের প্রিয় নেত্রী শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চি খুবই কাছাকাছি অবস্থানে যাচ্ছে। দয়া করে সবাই ভোট দিন। আপনাদের সকল বন্ধু এবং পরিবারকেও বলুন।

অং সান সু চি কে ভোট দেওয়া রত এক শিশুর ছবি। শেয়ার করেছেন জও মিন তুন 

একজন ভোটার টিন কো কো লিখেছেনঃ 

তাঁদের ভুলবেন না! যারা সারা রাত ধরে ভোট দিয়েছেন তাঁদের সম্মান দিন।

কাং থান্ট দাবি করেছেন, সু চি যদি ভোটে হেরে যান তবুও তিনি থাকবেন প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়েঃ

ফলাফল যাই হোক না কেন, মা সু চি সর্বদাই তাঁর জনগণের হৃদয়ে থাকবেন।

Exit mobile version