নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো বাংলাদেশ

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি ক্যাম্পেইনের অংশ হয়ে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সারাবিশ্বের সাথে পথে নেমেছিল বাংলাদেশের হাজারো নারী-পুরুষ। তারা নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করেন। বিশ্বের প্রায় ২০৩টি দেশে এই প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এই ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছিল ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরে।

এই প্রতিবাদ কর্মসূচীর সাথে সংহতি জানিয়ে নারী-পুরুষেরা তাদের প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততা ফেলে ৬৪টি জেলাসহ ঢাকার ৪২টি স্থানে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তারা নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে নানা ধরনের স্লোগান দেন। স্লোগানের মধ্যে ছিল- ‘নারী নির্যাতনের ঘটনায় নীরবতা আর না’; ‘বন্ধনে শৃঙ্খলে আটকে রাখা আর না’।

উদ্যেমে উত্তরণে শতকোটি (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং) ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য ছিল সারাবিশ্ব থেকে এক বিলিয়ন নারী-পুরুষকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচীতে সামিল করা। আর ক্যাম্পেইনের নাম হিসেবে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং রাখা হয়েছে, কারণ জাতিসংঘের তথ্য মতে, সারাবিশ্বের এক বিলিয়ন নারী তাদের জীবত্কালে যৌন ও শারীরিক নিগৃহের শিকার হন।

এখানে ওইদিনের কিছু ছবি দেয়া হলো। ছবিগুলো নেয়া হয়েছে উদ্যেমে উত্তরণে শতকোটি বাংলাদেশ (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং)- এর ফেসবুজ পেজ থেকে।

সংসদ সদস্যদের কর্মসূচীর সাথে সংহতি প্রকাশ।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ গান গেয়ে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানায়।

এদিন গার্মেন্টসের কর্মীরাও রাস্তায় নেমেছিলেন।

ঢাকার বাইরে সিরাজগঞ্জেও কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

কর্মসূচীর সাথে সংহতি জানায় বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ অফিস।

শিল্পকলা একাডেমির কাছে জাগ্রত জনতা।

শিল্পকলা একাডেমিতে সাধনা অনুপ্রেরণামূলক নাচ বিদ্রোহী পরিবেশন করে।

প্রতিবাদ কর্মসূচীতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতনের শিকার নারীদের স্মরণে এবং সাম্প্রতিক সময়ে চলা শাহবাগ আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

আরও ছবি আর গল্প পাওয়া যাবে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং বাংলাদেশ ফেসবুক পাতায় এবং তাদের ব্লগে

নীচে কিছু টুইট বার্তা:

@ওবিআরবাংলাদেশ (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং বাংলাদেশ): সাতমসজিদ রোড আর ৩১টি স্থানে নারীপক্ষের আয়োজনে ওবিআর কার্যক্রম। মোট অংশ নিয়েছে ১৩,০৮৫ জন। ঢাকায় ১৯২৫, সারা বাংলাদেশে ১১,১৬০।

@ওবিআরবাংলাদেশ (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং বাংলাদেশ): বাংলাদেশ জুড়ে আজ বেলা একটায় জেগেছে ৩৮০র ও বেশী সংগঠন এবং ১০ লক্ষেরও বেশী মানুষ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে! #ওবিআর

বাংলাদেশ প্রায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ। দেশটিতে নারী-পুরুষের অনুপাত ১০০:১০৬। ঘরে-বাইরে নারীরা প্রায়ই নানা ধরনের হয়রানি, সহিংসতার শিকার হন। জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ধর্ষণের হার এখানে প্রতি হাজারে ১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। অন্যদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০১ থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত ১৭৪,৬৯১ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা, পাচার, যৌতুকের জন্যে মারধর রয়েছে।

Exit mobile version