বাহরাইনঃ নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিরোধীরা রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে

আমাদের এ পোস্ট টি বাহরাইন প্রতিবাদ ২০১১/১২ – এর অংশ

তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এম ও আই) বিরোধীদল, সরকার বিরোধী সমাজের সমাবেশ, মিছিল সংগঠিত করার অনুমতি প্রদান না করা সত্বেও গত ৭ সেপ্টেম্ব্বর, ২০১২ তারিখে তাঁরা মানামার রাস্তায় মিছিল করে। টুইটারে এম ও আই ঘোষণা করে যে ঐ মিছিলটি অনুমোদিত নয় এবং সেখানে অংশগ্রহণ অবৈধ।

আগে রাজধানী মানামাতে এ ধরণের অনেক সমাবেশ সংগঠনের অনুমতি প্রদান করা হয় নি, কারন মন্ত্রণালয়ের প্রেস রিলিজ অনুযায়ী রাজধানী প্রতিবাদের স্থান নয়, যান চলাচলে ধীর গতি, ঐ এলাকার ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষতির কারন দেখিয়ে সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

বিরোধী দল আল অয়েফাক ইসলামি সোসাইটির মহা সচিব শেখ আলি সালমান টুইটে মন্তব্য করেন যে ব্যক্তিগতভাবে বিক্ষোভে অংশ নিতে নিষেধাজ্ঞা তাকে থামাতে পারবে না [আরবি]:

إذا منعت سوف أنزل إلى عاصمتي ماشياً أو في سيارتي من أجل ممارسة حقي في التظاهر السلمي#يوم العاصمة

@অয়েফাকজিএস: যদি আমাকে বারিত করা হয় তবে আমি রাজধানীর দিকে হেটে যাব অথবা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশগ্রহণে আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য গাড়ি নিয়ে রাজধানীর দিকে যাব।

গত শুক্রবার আলি সালমান মানামাতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ছবি- ওয়াইফ্রগ ব্যবহারকারী @২০১২_এটোমা

দুপুরের প্রার্থনার জন্য সালমানই প্রথম মোমিন মসজিদে আসেন, ১৯৯০ এর অশান্ত সময়ে এ মসজিদে বিরোধী নেতারা সমবেত হন, ফলে এ মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ মসজিদে পরিণত হয়।

এমমেশা৮৯ এর আপলোডকৃত এ ভিডিওতে মানামা বিক্ষোভের একটি অংশ দেখা যায়। শ্লোগান গুলোর [আরবি] মধ্যে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, হামাদ [রাজার] পতন এবং আরব বসন্তের জনপ্রিয় শ্লোগান: “জনগণ শাসন ব্যবস্থার পতন চায়।”

বিক্ষোভে সাড়া দিয়ে শত শত লোক মিছিল সহকারে “সরকারি এভেন্যুর” দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় দ্রুতই দাঙ্গা পুলিশ তাঁদের ঘেরাও করে অবস্থান গ্রহণ করে সমাবেশে বাধা প্রদান করে। যদিও মানামার অন্যান্য স্থানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে একাধিক প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। দাঙ্গা পুলিশ  দ্রুত এ সমাবেশগুলোকে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে অন্তরীণদের ছবি বহন করা হয় এবং বিক্ষোভকারীরা সরকার বিরোধী শ্লোগান দিয়ে রাজধানীতে তাঁদের সমাবেশের অধিকার ব্যক্ত করেন। রাজধানীতে প্রবেশের মূল প্রবেশদ্বার পরবর্তীতে আরমার্ড যান অথবা পেট্রল গাড়ি দিয়ে দাঙ্গা পুলিশ প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে, এসময় যান চলাচলকে অন্য সড়কে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ সড়ক ও উন্মুক্ত প্রবেশ দ্বারের ছবি টুইটারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

মানামাতে পুলিশের উপস্থিতি। ছবি- টুইটপিক @এজলিলখলিল

যান বাহন ঘুরপথে পরিচালনার বিষয়ে এম ও আই কোন ঘোষণা দেয় নি। এর পরিবর্তে তাঁরা এক টুইটের মাধ্যমে জানান যে মানামার চারপাশে ট্রাফিক জ্যাম ঐ এলাকার পরিকল্পিত সড়কের সংস্কারের জন্য ঘটেছে [আরবি]:

ازدحام مروري على شارعي الشيخ خليفة بن سلمان والملك فيصل المؤديان للمحرق لوجود منطقة عمل من الإشارة الضوئية الواقعة بالقرب من فندق الريجنسي وحتى الإشارة الضوئية بالقرب من فندق الشيراتون، وجاري العمل على تسهيل الحركة المرورية
@ এম ও আই_ বাহরাইন: মুহাররাক অভিমুখী শেখ খলিফা বি্ন সালমান এবং বাদশাহ ফয়সাল সড়কে যানজট হয়েছে কারন রিজেন্সি হোটেলের সড়ক বাতি থেকে শেরাটন হোটেলের সড়ক বাতি পর্যন্ত রাস্তায় পরিকল্পিত সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। আমরা যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।

সারাদিন ধরেই  সংঘর্ষ ও ছোট ছোট বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। আলি সালমান মসজিদে মাগরেবের নামাজের [সূর্যাস্তের পর প্রার্থনা] সময় দাঙ্গা পুলিশ ধারণা করে যে বিক্ষোভকারীরা আবারও পুনঃ সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে পারে- এ বিবেচনায় তারা মসজিদটি ঘেরাও করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

এম ও আই ঘোষণা করে যে দিন শেষে তারা ছয় জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে। পরবর্তী দিন এম ও আই একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে  জানায় যে সরকারী আইনজীবীর মাধ্যমে বিক্ষোভ আহ্বানের জন্য তারা আল ওয়েফাকের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেছে। যদিও অন্য পাঁচটি বিরোধী সমাজ তাদের সমর্থকদের সামাজিক প্রচারমাধ্যমে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিরোধীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার বিষয়টিতে অনেকেই খুশী নয়। “আল ওয়েফাক বন্ধ কর” # أغلقوا_الوفاق এই শিরোনামে টুইটার হ্যাশট্যাগ চালু করা হয়েছে। বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এদের মধ্যে অন্যতম হলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী শেখ খালিদ আলখলিফা। তিনি টুইট করেন [আরবি]:

على الوفاق ان تحترم سلطة قوانين مملكة البحرين .. و الا فلتريحنا و تذهب بطائفيتها و عنجهيتها الى #كوكب_آخر
@খালিদআলখলিফা: বাহরাইন রাজ্যের আইন ও কর্তৃত্বকে আলওয়েফাকের সম্মান জানানো উচিত, “অন্য জগৎ” – এর প্রতি তাদের ঔদ্ধত্য এবং সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে চলে গিয়ে তারা আমাদের স্বস্তি দিক।

আমাদের এ পোস্ট টি বাহরাইন প্রতিবাদ ২০১১/১২ – এর অংশ

Exit mobile version