ভারতঃ পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের কমিউনিস্ট শাসনের অবসান

আজ, ১৩ মে শুক্রবার, ২০১১ তারিখে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক পরিবর্তন দেখা গেল। রাজ্যের বিরোধী দল সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস পার্টির (টিএমসি) নেত্রী মমতা ব্যানার্জী সকল সংশয়কে ভুল প্রমাণিত করে ক্ষমতার দিকে এগিয়ে গেল, যার ফলে রাজ্যটিতে দীর্ঘ ৩৪ বছরের কমিউনিস্ট শাসনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। চলতি রাজ্যসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জীর দল ২৭৪ আসনের মধ্যে ১৮৬ টি আসনে জয়লাভ করেছে। তার জোটের শরিক দলগুলোর সাথে মিলিতভাবে ২২৭ টি আসনে দখল করে এক সুনির্দিষ্ট, বিশাল জয়ের বার্তা ঘোষণা করছে।

এর সাথে আরো যুক্ত হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে পরাজয়, তিনি ১৬০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন, এবং ফলাফল ঘোষনার পরপরই তিনি পদত্যাগ করে, জনতার রায়কে মেনে নিয়েছেন। দীর্ঘ ১৩ বছরের অপেক্ষার পালা শেষে মমতা ব্যানার্জী পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভা নির্বাচন ২০১১-এর ফলাফল লাভের পর এক তৃণমূল কর্মীর আঙ্গুল উচিয়ে বিজয় চিহ্ন প্রদর্শন করছে। ছবি অরিন্দম-দের, কপিরাইট ডেমোটিক্সের (১৩/৫/২০১১)


সারাটা দিন ধরে শহরটাকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন তা ছুটির আমেজে রয়েছে। রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা ছিল কারণ লোকজন টিভির সামনে আঠার মত বসে থেকে ভোট গণনার তাজা সংবাদ এবং প্রতি মুহুর্তের বিশ্লেষণের উপর নজর রাখছিল। পুরো রাজ্যে জুড়ে বিভিন্ন ধারণা গুঞ্জরিত হচ্ছিল, সে কি এবার পারবে? নাকি এবারো নয়?

দুপুরের মধ্যে ভোটের ফলাফল সুস্পষ্ট হতে শুরু করে। এতে দেখা যায় যে কমিউনিস্ট পার্টি কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয়, তাদের অন্য আরেক ঘাঁটি কেরেলায় ক্ষমতা থেকে অপসারিত হতে যাচ্ছে।

জনতার পছন্দ-পরিবর্তন। ছবি লেখিকার।

এই ঐতিহাসিক সংবাদে নেট নাগরিকরাও মুখরিত হয়ে উঠেছে। এই ফলাফলের প্রেক্ষাপটে দ্রুত এবং অজস্র টুইট আসতে শুরু করে-কেউ কেউ এই বিজয়ে তাকে অভিনন্দন জানায়, এদিকে অন্যরা আশা করছে যে পরিবর্তন ভালোর দিকে যাবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা। তবে অনেকে এই বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে।

@সোয়াতিগস: যারা কেবল একটি দলের শাসন দেখে এসেছে,বাংলার এমন এক প্রজন্মের কাছে তৃণমূলের এক ঐতিহাসিক বিজয়।আমরা আশা করবো যে পরিবর্তন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।

@ইন্ডিয়াইন: মমতা লাল দুর্গ তছনছ করে দিয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের শাসন ভার গ্রহণ করতে যাচ্ছেন,যার ফলে তিনি হবেন এই রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ।

@ সুব্রত_কর: মমতা এবং তৃণমূলকে অভিনন্দন, পশ্চিম বাংলার জনতা এক আশা নিয়ে আপনাদের ভোট দিয়েছে, তাদের আশা হত করবেন না।

@ ফিরোজহক:মমতা ব্যানার্জীকে অভিনন্দন। আমরা পরিবর্তন চাই। আপনি তা দিয়েছেন। দিদিভাই আমরা আপনাকে ভালোবাসি#টিএমসি #বেঙ্গল

@ আররবিশঙ্কর৭: মমতা প্রায় ৩ দশক ধরে চলা বামফ্রন্ট রাজত্বের অবসান ঘটালেন। ভারত-বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। #ডেমোক্রেসি#ওমেনপাওয়ার

@ রামেশসেইস:@দিনিউজআওয়ার-মমতা হচ্ছে পুরোপুরি পরিবর্তন আনার জন্য সেই প্রদেশের সেরা এক ব্যক্তি, যে প্রদেশ লম্বা সময় ধরে “আদি যুগের” ভাষায় কথা বলত।

@ ঘোষশক্তিঃ সবুজ দলের কাছে অবশেষে লাল ভবনের পতন ঘটল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একটি প্রাদেশিক সরকার চালানোর মত প্রয়োজনীয় প্রশাসক তার দলে রয়েছে কি?

@ স্টিভেন ওয়াটসন৫: মমতাকে অভিনন্দন। তবে তিনি এবং তার দলের সদস্য পূর্ণ মেয়াদে পশ্চিম বাংলার মত প্রদেশকে শাসন করতে পারবে কি, আমার সন্দেহ রয়েছে। .

@ অজয়কুমার আজতক: পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন; মমতা কি জনতার প্রচণ্ড আশাকে পুরণ করতে পারবে। বাংলা এতটাই বঞ্চিত যে, প্রথমেই মোহমুক্তি ঘটাতে হবে।

এখন তৃণমুল দলীয় কর্মী এবং শরিক দল আর সমর্থকদের মাঝে আনন্দ এবং উদযাপন চলছে। বামদলের অফিসের মেজাজ বলে দিচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে কাহিনী কি ঘটেছে।

তৃণমূলের এক স্থানীয় অফিসের বাইরের দৃশ্য এবং এই দলটি সিপিআই (এম) নামক দলটিকে ক্ষমতা থেকে অপসারিত করেছে

রেজোওয়ান-ও, এই পোস্টে অবদান রেখেছে
Exit mobile version