টুইটার ব্যবহারকারী @কোম্বু_এস তার নিজের শহর ওনাগাওয়া ত্যাগ করে সেনডাই-এ চলে যান। ওনাগাওয়া, মিয়াগি জেলার একটি শহর।
এখানে ভদ্রমহিলার প্রোফাইল প্রদান করা হল:
সম্প্রতি আমি মিয়াগি এলাকার, ওনাগাওয়ায় যা দেখেছি সেই বিষয়ে টুইট করছি। দয়া করে আমার টুইটারের সময়সূচি দেখুন। আমি বুঝতে পারছি যে সকলেই উদ্বিগ্ন, কিন্তু আমি কেবল যা দেখেছি, কেবল তার কথা জানি, সেই এলাকার কোন তথ্য আমার কাছে জানা নেই যেখানে আমি ছিলাম না, অথবা কোন ব্যক্তির অবস্থা কি তা আমার জানা নেই। আমি এক নাম্বার শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, ওয়ান ডে কেয়ার সেন্টারের দিকে গাড়ি চালিয়ে গেলাম এবং ধ্বংস স্তুপের মধ্যে দিয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের আনতে জেনারেল জিমে গেলাম । http://twitpic.com/photos/kombu_s
নিরাপদে সেনডাই-এ পৌঁছার পর, ১২ মার্চে ফেরার পথে যে সব ছবি সে তুলেছিল, সেগুলো সে পোস্ট করেছে।
দয়া করে নোট করুন যে আমি টুইটারে প্রতি উত্তর করছি না। আমি কেবল যা দেখেছি, তার কথা জানি। আমি একজন সাধারণ ব্যক্তি যে তার পরিবারকে আনবার জন্য গিয়েছিলাম। আমার কাছ কোন তথ্য ছিল না। এমনকি যদি আপনি আমাকে কোন ঠিকানা বা নাম প্রদান করেন, তাহলেও আমার কাছে কোন তথ্য নেই। উক্ত ব্যক্তিটি সেনডাই থেকে এটি টুইট করেছেন। দয়া করে আমার সময়সূচি খেয়াল করুন। #ওনাগাওয়া #সেভ_মিয়াগি_ওনাগাওয়া।
নীচে নির্বাচিত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা কয়েকটি টুইট রয়েছে।
@কোম্বু_এস এর ভূমিকম্প সম্পর্কিত প্রথম টুইট ছিল ১০ মার্চ তারিখে করা:
地震で何回も起きたから眠いよー
ভূমিকম্প রাতে আমাকে আনেক বার জাগিয়ে তোলে, কাজেই আমি এখন ক্লান্ত।
[দয়া করে আবার টুইট করুন], এটি মিয়াগি জেলার ওনাগাওয়া শহর সম্বন্ধে তথ্য। স্থানীয়রা আজ আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে। ঘর ছেড়ে আসা সকল ব্যক্তিরা জেনারেল জিমে আশ্রয় নিয়েছে। মোবাইলের মাধ্যমে কারো সাথে যোগাযোগ করা এখন এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার, যেহেতু সারা শহর জুড়ে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে লাভ নেই, কারণ আপনি সরাসরি তাদের সাথে কথা বলতে পারছেন না। কেবল বিশ্বাস করুন যে তারা ভালো আছে।
আমি আমার নিজের শহর ওনাগাওয়া সম্বন্ধে তথ্য প্রদান করতে চাই। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি, এটিকে যতটা সম্ভব পুনরায় টুইট করুন। যদি আপনি এই ধরনের তথ্য আর পেতে না চান তাহলে আমাকে অনুসরণ করা বন্ধ করুন। যদি আপনি স্থানীয় কোন বাসিন্দা হন, যার কোন প্রশ্ন রয়েছে, তাহলে সরাসরি আমাকে মেইল করুন। আমি যা দেখেছে, তার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দেব।
এই হচ্ছে ওনাগাওয়া স্টেশনের রেললাইন। সাদা এবং সবুজ রেলের কামরাগুলো (কার) একেবারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে (এলিমেন্টারি স্কুল) যে সমাধি কেন্দ্র, সেখানে ভেসে এসেছে।
বিকেলের দিকে আমি জেনারেল জিমে এসে পৌঁছালাম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (জুনিয়র স্কুল) ছাদে ফাটল ধরেছে, কাজেই যারা সেখান থেকে চলে এসেছে, তারা সকলেই জেনারেল জিমে চলে এসেছে। এখানে যথেষ্ট খাবার এবং কম্বল নেই। বেশির ভাগ লোক শুয়ে আছে, একেবারে ভিড়ে পরিপূর্ণ।
দুপুরের দিকে, আমি শুনতে পেলাম যে মিসো সুপের কাপ এবং প্যাকেট জেলি প্রদান করা হচ্ছে। ২-৩ জন ব্যক্তি মিলে তা ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। সেখানে কোন কম্বল নেই। লোকজন সেখানে নিজেদের মুড়ে অবস্থান করছে, দেখে মনে হচ্ছে যেন তা এক পর্দা। আমি ভাবলাম যে, সেখানে যথেষ্ট পরিমান জিনিস সরবরাহ করা হয়নি।#সেভ_মিয়াগি_ওনাগাওয়া#ওনাগাওয়া
কুমানো মন্দির (কুমানো শিরিন) থেকে যখন আমি প্রথম এলাকাটিকে দেখি, আমি নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার চোখ অশ্রুতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং আমার ভেতরে থেকে এক কাষ্ঠ হাসি বের হয়ে এলো। এটা ছিল ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য। তবে যে সমস্ত ব্যক্তিরা এই এলাকা ছেড়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল তারা তাদের শহরের বাইরে অবস্থিত তাদের আত্মীয় এবং বন্ধুদের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল।
এই অবস্থায় আমাদের মোবাইল ফোনগুলো কাভারেজের বাইরে ছিল এবং ১ সেজ আমাদের এলাকায় কাজ করছিল না। রেডিওর মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে তেমন বিস্তারিত ছিল না, এবং আমার হৃদয় যন্ত্রণা কতার হয়ে পড়ে এই কারণে যে আমরা কাউকে জানাতে পারছিলাম না যে ওনাগাওয়ায় আমরা নিরাপদে আছি। আমি জানতাম যে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগের অভাব সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে, কিন্তু দয়া করে আপনারা আপনাদের পরিবারের উপর বিশ্বাস রাখুন।
আমি চিন্তা করলাম যে আমরা ততক্ষণ নিরাপদ যতক্ষণ টিকে থাকার প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ হতে থাকবে: যেমন কম্বল, ঘর গরম করার যন্ত্রপাতি, খাবার, পানি এবং টয়লেট পেপার (বিশ্রামাগারের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে ছিল)। এছাড়াও, আমরা আরো তথ্য চাইছিলাম! টেলিভশন এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার উপযোগী ছিল না।
(ক্রমাগত চলছে) এটা গ্রামীণ এলাকা এবং এখানে অনেক বয়স্ক লোকের বাস। এখানে ভিডিও প্রদর্শন জরুরী কারণ রেডিও বা সংবাদপত্র তাদের জন্য যথেষ্ট নয়, এর কারণ হচ্ছে তাদের অনেক চোখে কম দেখে এবং কানে কম শোনে। জরুরী সংবাদ তালিকা এবং জরুরী অবস্থায় ফোন করার পদ্ধতি বয়স্কদের কাছে বেশ জটিল বলে মনে হয়। অবশ্যই বলা যায়, সেই সময় তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ ছিল না।
আমি আমার দাদি এবং তার বান্ধবীদের কাছ থেকে অনেক ভয়াবহ গল্প শুনেছি। এটা অনেকটা গল্পের মত যা ছড়াতে থাকে, যা একেবারে গ্রামীণ এলাকার আলাদা বৈশিষ্ট্য, আমি এই বিষয়ে টুইট করা থেকে বিরত থাকলাম, কারণ তা ঠিক হত না। আমি মনে করি কল্পনার একটা বড় অংশের মাঝে আতঙ্কের শেকড় গাঁথা থাকে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এই ধরনের আলোচনা ঘটে থাকে।
ওনাগাওয়া হাসপাতাল থেকে, আমি বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তার ছবি তুলি, সে সময় আমি ওনাগাওয়া স্কুলের থেকে মারিনপাল রাস্তার এক ঢালের উপর উঠছিলাম। সে সময় আমি বাস্তবিক ভাবে রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা তাজা মাছের উপর পা ফেলে হেঁটে গিয়েছি।http://twitpic.com/48s41e
এখন আমি তা উল্লেখ করছি, যখন আমি জিমনেসিয়ামের পথে যাচ্ছিলাম, সে সময় পথে আমি সামান্য আগুন জ্বলতে দেখছিলাম। রাত ১১টায় আমি আমার এক বন্ধুর কাছে এই বিষয়ে শুনতে পেলাম, যে বিপদ সত্বেও ওনাগাওয়ায় গিয়েছিল, সে বলল যে, সে লাল বাতি জ্বলতে এবং ধোয়া উঠতে দেখেছে। যদিও সে কিছু একটা করতে চাইছিল, কিন্তু এই পরিস্থিতি কাজের উপযুক্ত নয়। কাজেই সে সেই এলাকা অতিক্রম করল এবং সামনে এগিয়ে গেল।
ওহ! ছবির উপর আমার আঙ্গুল চলে এসেছে। কুমানো মন্দির থেকে ওনাগাওয়া হাসপাতালের দিকে যাবার সময় মন্দিরের সিঁড়িতে এই ঘটনার মুখোমুখি হলাম। রাস্তার ল্যাম্প পোস্টগুলোর গোড়ার অংশ বেঁকে গিয়েছিল।
যদিও এটা দেখাতে পাওয়া খুব কঠিন ছিল, কিন্তু এখানে প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি হেলিকপ্টারের একটা ছবি রয়েছে যেটি ওনাগাওয়া হাসপাতালে নেমেছিল। হাসপাতালের কর্মচারীরা এটিকে গাইড করার চেষ্টা করে, কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে কোন ধরনের ব্যক্তিরা রয়েছে তা আমি দেখতে পাইনি।
যখন আমরা ওনাগাওয়ার দিকে যাচ্ছিলাম, সে সময় প্রাথমিক আশ্রয় কেন্দ্র [বড় বড় আশ্রয় কেন্দ্র যেমন] জিম বা ডাইচি কিন্ডারগার্টেন ছেড়ে আসা ব্যক্তিদের অতিক্রম করছিলাম। সেখানে অনেক বয়স্ক নাগরিক ছিল, কিন্তু লোকজন একে অন্যকে সাহায্য করছিল। পুরুষেরা নারী, শিশু এবং ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বয়স্কদের সাহায্য করছিল। সত্যি এক সুন্দর শহর।#ওনাগাওয়া
আমার মাথার ভেতরে এত অনেক চিন্তা বয়ে যাচ্ছে যে আমি নিশ্চিত নই, আমি সেগুলো সম্বন্ধে বলব কি না, আমি শঙ্কাকে টুইট করছি না, কাজেই এটা আমাকে বিস্মিত করে, যে আসলে কোনটি সেরা কাজ। আমি দ্বিধান্বিত ছিলাম যে আমি কি আসলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কথা উল্লেখ করব [এর আগের এক টুইটে যাদের কথা উল্লেখ করেছি] কিন্তু আমি এই বিষয়ে টুইট করেছি কারণ আমি আশা করি যে তারা এখন নিরাপদে রয়েছে। আমি আপনাদের ভয় এবং শঙ্কা সবাইকে জানালাম। সত্যি দুঃখিত।#ওনাগাওয়া