সাইবার স্কাউট: থাইল্যান্ডের ইন্টারনেট পুলিশ?

একজন সাইবার স্কাউট স্বেচ্ছাসেবক

থাইল্যান্ড সরকার তরুণদের আর অন্যান্য ইন্টারনেট জানা লোকদের চাকুরি দিচ্ছেন তাদের ‘সাইবার স্কাউট’ প্রোগ্রামে যোগ দেয়ার জন্য যারা ইন্টারনেটের উপর নজরদারি করবে সেইসব ‘ইন্টারনেট আচরন উদঘাটন করতে যা জাতীয় নিরাপত্তা আর রাজকীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি’। যদিও কয়েক মাস আগে এর ঘোষনা করা হয়েছিল, প্রথম প্রশিক্ষন নেয়া হয় গত ২০-২১ ডিসেম্বর কাসেতসারত বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শাকসিথ সায়াসোম্বুত প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেছেন:

১. সাইবার স্কাউট স্বেচ্ছাসেবকদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা যারা খেয়াল রাখবেন সেইসব [অনলাইন] আচরণের প্রতি যা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসাবে মনে করা হয় এবং রাজকীয় প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা যায়।
২. স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে নীতি আর ন্যায় তুলে ধরা, সঠিক আচরণ নিশ্চিত করা, তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমাজে নীতি আর ব্যক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মিল আর সচেতনতা তৈরি করা।
৩. তথ্য প্রযুক্তির সাবধান আর দায়িত্বশীল ব্যবহারের কথা সমাজের বিভিন্ন স্তরে তুলে ধরা আর সমর্থন আদায়।

এই ব্লগার সাবধান করে দিয়েছেন যে এই প্রোগ্রাম ইন্টারনেট সেন্সরশিপ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে থাইল্যান্ডে। আজকে ১০০,০০০ এর বেশী ওয়েবসাইট থাই কর্তৃপক্ষ ব্লক করে রেখেছেন।

…এটা বেশ পরিষ্কার যে যে কোন মূল্যে বিশ্বস্ততাকে জোর দেয়ার একটি সাধারণ প্রবনতা আর অদেখা ভীতি থেকে রাজকীয় প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার ধারনা একটি হঠাৎ প্রচেষ্টা। আর যেহেতু ইন্টারনেট বেশ অচেনা স্থান, এটা আরো বেশী ভীতিকর ভীতি। তাই এইসব মানসিক আর সাংস্কৃতিক বাধা নির্মান করা হয় ভাড়া নেয়া জনশক্তি দিয়ে আর বিশ্বস্ততার সামাজিক প্রবনতা দিয়ে – অনলাইন আর অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে।

…জ্ঞান নির্ভর একটা সমাজ নির্মানের জন্য, যা সরকার মূলত চাচ্ছেন পেতে। আপনাকে সেই স্বাধীনতা দিতে হবে যে নিজে থেকে এই জ্ঞান যোগাড় করে যাতে নেয়া যায় আর যেন এটা গলা দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়া না হয়।

লিওসিয়া এই প্রোগ্রামের সমালোচনা করেছেন:

এই পুরো প্রক্রিয়া বিরক্তিকর। আপনি অপরিপক্ক তরুণদের সাথে শুরু করবেন আর তারপরে তাদেরকে মানসিক একটা উচ্চাশা দেবেন যাদের কোন মতামত আছে তাদের খুঁজে বের করে উন্মুক্ত করা জন্য।

প্যাট্রিক হেনরি মন্তব্য করেছেন যে এটা গ্রাম্য স্কাউটের উচ্চ প্রযুক্তি সংস্করণ যা তৈরি করা হয়েছিল ১৯৭০ এর দশকে কমিউনিস্টদের খুঁজে বের করার জন্য:

হুম… গ্রাম্য স্কাউটের উচ্চ প্রযুক্তি সংস্করণ? আপনার মনে হতে পারে এই সরকারের করার মতো আরো ভালো কাজ আছে। অরওয়েলের রাজ্যে স্বাগতম।

পলিটিকাল প্রিজনার্স ইন থাইল্যান্ড এই প্রোগ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন:

মেধাবী যারা তারা ফ্যাসিবাদী ইচ্ছার সাথে মিশে গেছে, নজরদারী আর সেন্সরশিপ এর ‘নীতি’ কপচাতে। দারুন। ধন্যবাদ জনাব অভিশিত (থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী)।

কয়েক মাস আগে এই প্রোগ্রামের যখন উদ্বোধন করা হয়, নিকোলাস ফারেল্লি থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে এই প্রোগ্রামের প্রভাবের কথা লিখেছিলেন:

… এটা কিছু মানুষকে বিশ্বাস করাতে সাহায্য করে যে যখন সময় আসবে তখন থাই কর্তৃপক্ষ সমর্থ হবেন দিগন্তে থাকা বিশাল সমালোচনা, ব্যাঙ্গাত্মক আর মুখোমুখি হওয়া ধারাভাষ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে। আমি নিশ্চিত না যে এইসব ব্যবস্থা আসলে কাজের উপযুক্ত হবে আর হতে পারে যে একবার সব কিছু বলা হয়ে গেলে, এটা কিছু থাইল্যান্ডের মূল প্রতিষ্ঠানের বিশ্বস্ততাকে ছোট করে দেখাবে।

টুইটার আর ফেসবুকে কিছু মন্তব্য:

ব্রায়ান জুঙ্গুইওয়াতানাপোর: কি অদ্ভুত ভয়ঙ্কর ধারনা। আমার হাসি পাচ্ছে, আমার কান্না পাচ্ছে।

ফ্রিকিংক্যাট: @এফ_ডিঙ্কুম আমার ভালোলাগা দেখাচ্ছি আমাদের দেশের জন্য যে কষ্টের দায়িত্ব থাই সাইবার স্কাউট ইঁদুরেরা করছে সেই ব্যাপারে।

আনিয়াপি: চমৎকার উপাধি কম চমৎকার একটি প্রচেষ্টার জন্য।

Exit mobile version