মালয়েশিয়া: প্রেসের স্বাধীনতা কোন দিকে যাচ্ছে?

কোন দেশ বেখাপ্পা হয়ে আছে? তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা, জাম্বিয়া আর মালয়েশিয়ার মধ্যে। ঠিক আছে, ধরে নেই আমি একজন খুঁত ধরা লেখক যে আপনাদের দেশ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানকে অপমান করতে চাচ্ছি আর আপনারা যা জানেন তাই দিয়ে আমাকে প্রভাবিত করতে চাচ্ছেন। তাহলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে মালয়েশিয়া আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ, ভালো উন্নত অবকাঠামো আছে, তুলনামূলকভাবে কম দারিদ্র্যের হার, হ্যা…আপনারা একে বেশ গণতান্ত্রিক ও বলতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই বেখাপ্পা ভাবে আছে মালয়েশিয়া। তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা আর জাম্বিয়ার অনেক নীচে আছে এই দেশটি প্রেস স্বাধীনতার ব্যাপারে

মালয়েশিয়ার সাম্প্রতিক প্রেস স্বাধীনতার ব্যাপার যখন উন্মোচিত হচ্ছে, ৩টি মূল বিষয় দেখা যাচ্ছে:

১) অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে বিরোধী দল সব থেকে বেশী লড়বেন, প্রিন্ট আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে সীমিত স্থান দেয়ার পরে।

২) মিডিয়ার স্বাধীনতাকে সমর্থনের দাবী বা প্রমান দেয়া সত্ত্বেও, সরকার সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন তথ্য আর প্রিন্টিং অ্যাক্ট দিয়ে মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণে।

৩) তথ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর নয় যতক্ষণ ইন্টারনেট এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর বাড়তে থাকা সংখ্যা আর স্বাধীন অনলাইন বিষয়গুলো বড় বিষয়ে ধারণাকে গঠন করবে আর সরকারকে চাপের মধ্যে রাখবে।

এই বছরের প্রথমে যখন সর্বশেষ প্রেস স্বাধীনতার ইনডেক্স প্রকাশ করা হয়, বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানান তাদের নিজেদের দলের অনলাইন তথ্য পোর্টাল আর নিজস্ব ব্লগ দ্বারা। তাদের অনলাইন সমালোচনা বেড়ে যায় যখন সরকার সিদ্ধান্ত দিতে গড়িমসি করে বিরোধীদের নিউজলেটারের অনুমতি নবায়নে, আর ব্যাঙ্গাত্মক রাজনৈতিক কার্টুন নিষিদ্ধ করে যা আর একটা সুযোগ দেয় অসন্তোষ বাড়িয়ে দেয়ার অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে ভাবনা জানানোর। একজন নাগরিক, লাই, জানিয়েছেন:

সরকার যে কারণ দেখিয়েছেন, বিশ্বাস করেন বা না, হচ্ছে যে ‘বিষয়বস্তু মানূষকে প্রভাবিত করতে পারে নেতা আর সরকারের নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য’… কার্টুন মানূষকে বিদ্রোহ করাতে পারে? বাহ! নতুন পাওয়া অস্ত্র?

মজার ব্যাপার হল, অনলাইন মিডিয়া কৌশল বাদ দিয়ে নিষেধাজ্ঞা কে সমালোচনা করার, একটা বিরোধীদল কর্তৃক নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রদেশ আসলে বিরল অবস্থান গ্রহন করে প্রত্যেকের কাছে জনগণের স্বার্থের ব্যাপারটা তুলে ধরে তথ্য স্বাধীনতা বিলকে সংসদে পেশ করার। অনিল বলেছেন একজন সরকারী সংসদ সদস্যকে উল্লেখ করে যে এই বিলটি বাতিল করেছেন:

আজকে একটা ঐতিহাসিক দিন দেশের জন্য – আরো জবাবদিহিতামূলক সমাজের প্রতি আমাদের খোঁজ অব্যাহত থাকবে…

এই বিষয়টি যখন স্বাধীন সংবাদ পোর্টাল আর নাগরিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, গোপাল কৃষ্ণান ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন:

অন্যান্য কণ্ঠের পক্ষে এইসব বড় বড় সাড়া সত্ত্বেও, সরকার অবশ্যই এর অপ্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করবেন (আর রাজনৈতিক পরিণামের কথা তো বাদ দিলাম) স্বাধীন সাংবাদিকতা আর মন্তব্যের স্থান লাগাতারভাবে সীমিত করার। ২০০৯ সাল পর্যন্ত, ধারণা করা হচ্ছে যে মালয়েশিয়ার ৬৫% এর বেশী বাড়িতে ইন্টারনেটের সংযোগ আছে। এর বাইরে, আমরা কেবল এটাই দেখি নি যে গজিয়ে ওঠা অনলাইন সংবাদ আউটলেট আর বিভিন্ন সূত্র আমাদের স্ক্রিনের সীমিত সময়ের জন্য প্রতিযোগিতা করছে, অনলাইন নাগরিক সাংবাদিকতা আর সামাজিক মিডিয়ার একটা বিষ্ফোরন ঘটেছে, যা- অন্যান্য জিনিষের মধ্যে- দেশের মধ্যে একটা নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করেছে।

শেষ পর্যন্ত, প্রেসের স্বাধীনতা এমন কিছু না যা সরকার বা বিরোধী দল ইচ্ছাবশত: সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু এটা নাগরিকদের ব্যাপার যারা দাবি করেন সত্যের আর সাংবাদিক যারা সত্যকে জানাতে চান। যেমন আত্তান বলেছেন:

আমি বলেছিলাম, যাই হোক না কেন, আমরা সাংবাদিকরা হারছি- নাজিবের সরকার সংবাদপত্র সাময়িক বন্ধ করছে, গুয়ান এং (ড্যাপ দলের নেতা) তাদের নিষিদ্ধ করছে আর আনোয়ার আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করছেন।

Exit mobile version