পোল্যান্ড: সোশাল নেটওয়ার্কের প্রতীক চিহ্ন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে

পোল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সোশাল নেটওয়ার্ক বা সামাজিক যোগাযোগ সাইটের নাম নাসজা-ক্লাসা (নাসজা ক্লাসা শব্দের অর্থ, আমাদের শ্রেণীকক্ষ-এই সোশাল নেটওয়ার্কের ধারণা তৈরি হয়েছে স্কুলের একই শ্রেণীর সমগোত্রীয়দের মধ্য সম্পর্ক তৈরির মধ্যে দিয়ে)।

গত বছর এই সাইটটি বেশ কয়েক বার মূলধারার প্রচার মাধ্যমে সংবাদ হয়ে আসে। গত বছরের গ্রীষ্মকালীন সময়ে এটি টেকক্রাঞ্চের মুল সোশাল নেটওয়ার্কের #১৯ নম্বরে অবস্থান নেয়। যার ফলে এর মূল্য ৯০ মিলিয়ান থেকে ৫৫৩ মিলিয়ান ডলারে এসে দাঁড়ায়। এটির পরিমাপক অবস্থান এখন আটকে রয়েছে। একই সময়ে গারইফিন এর এক বাসিন্দা নাসজা ক্লাসার বিরুদ্ধে মামলা করে জয় লাভ করে [পোলিশ ভাষায়]। উক্ত ব্যক্তি আবিষ্কার করে যে এই সোশাল নেটওয়ার্কে কেউ একজন কাল্পনিক বৃত্তান্ত তুলে দিয়েছে, সাথে তার সত্যিকারের ছবি ও তথ্য। অন্য আরেক মামলায় এই সাইটকে এই নিশ্চয়তা প্রদান করার জন্য আইনগত ভাবে অঙ্গীকারপত্র প্রদান করতে হয় [পোলিশ ভাষায়] যে, এর ব্যবহারকারীরা যথাযথ অনুমতি ছাড়া এখানে ছবি উঠাতে পারবে না।

২০০৯ সালের নভেম্বরে যখন এই সোশাল নেটওয়ার্ক তার জন্মের তিন বছর পূর্তি উদযাপন করছে, তখন এই সাইটে ব্যবহারকারীদের পাতা সেন্সরশীপ বা নিষেধাজ্ঞার অধীনে আনা ও তাকে সংশোধন করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে [পোলিশ ভাষায়]। এই নেটওয়ার্কের প্রতি সংশয়ের স্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, যখন কর্মক্ষেত্র, মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ বিভাগ তাদের কর্মচারীদের এই ওয়েবসাইট ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে [পোলিশ ভাষায়], তারা বলছে, এই ওয়েব সাইট অতীতে অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে কাজে লাগত। আজ পোল্যান্ডে সোশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারের উপর এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে [পোলিশ ভাষায়]। এত জানা যাচ্ছে যে দেশটিতে ফেসবুকের ব্যবহার ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তার বিপরীতে নাসজা ক্লাসার ব্যবহার কমে আসছে।

বর্তমান নাসজা ক্লাসার লোগো বা প্রতীক

গতকাল গাজেটা.পিএল নামক দৈনিক এক সংবাদ পোর্টাল এক সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ প্রকাশ করে [পোলিশ ভাষায়]। এতে দৈনিকটি তার পাঠকদের নাসজা-ক্লাসার প্রতীক ব্যবহার নিয়ে তাদের পোর্টাল ব্যবহারকারীদের এক আলোচনা তুলে ধরে। এই প্রতীকে অক্ষর বা চরিত্রগুলো ক্রমাগত বিলীন হতে থাকে। এই নতুন করে নির্মাণ করা ডিজাইন বা প্রতীক বিন্যাস গত কয়েকদিন ধরে দেখানো হচ্ছে। এটি নেটওয়ার্ক এ্যাডমিনিসট্রেটর বা সংযোগ রক্ষকের এক প্রচেষ্টা যা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আউসউইৎস নাৎসী মৃত্যু শিবিরে নির্মিত জাদুঘর থেকে তার প্রতীক চুরির ঘটনাকে পরোক্ষভাবে উল্লেখ করে। গাজেটা.পিএল তাদের এই প্রবন্ধে পরিষ্কার করে তাদের পাঠকদের কথা উল্লেখ করেছে এবং এর সাথে যোগ করেছে যে নাসজা-ক্লাসা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ঘটনার সাথে তার প্রতীক পরিবর্তনের যোগসূত্র থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তবে এই প্রবন্ধটি ভয়াবহ বোকামীপূর্ণ অনুমানের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছে এবং বাস্তবতা হচ্ছে এসব প্রশ্ন ছাপা হয়েছে মূলধারার পত্রিকায়।

আজ ব্যবহারকারী গ্লুপি পোলাজকি বিবৃতি দিয়েছেন [পোলিশ ভাষায়]:

এই ইহুদি বিরোধী পোর্টাল তাদের বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

এফকিউডাব্লিউ নামক আরেক ব্যবহারকারী তার মন্তব্য দ্বারা বিষয়টিকে সমর্থন করেন [পোলিশ ভাষায়]

এটা এখন চলে গেছে। কি ভাবে তার এ রকম ইহুদি বিরোধী পন্থায় বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা করতে পারে!?.. জানতে চাই, কি ভাবে…?

অন্যরা স্বয়ং এই প্রবন্ধটির সমালোচনা করেছে। ওএলএস৮৫ উল্লেখ করেন: [পোলিশ ভাষায়]

কেবলমাত্র এখানে- গাজেটা.পিএল-এর সম্পাদকরা উত্তেজিত। পুলিৎজার পুরস্কার লাভ নিশ্চিত, আমি মনে করি…

সোবার বলেছে [পর্তুগীজ ভাষায়]:

আদর্শের জায়গায় কোন কিছু যুক্ত করা, সব সময় একটা ভালো চাল এবং এরপর তাকে শক্তিশালীভাবে বিশ্বাস করা।

সংখ্যাগরিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এই প্রবন্ধের উপাদান নিয়ে উপহাস করেছে। তারা উল্লেখ করছে যে লোগো বা প্রতীক পরিবর্তনের আরো বেশি যুক্তি পূর্ণ কারণ রয়েছে- এটি বদলানো হয়েছে নতুন করে সাইটিকে ব্রান্ডিং বা পরিচয় জ্ঞাপন করানোর জন্য। টিটাস ব্যাখ্যা করছেন [পোলিশ ভাষায়]:

সত্যিকারভাবে, এটার জন্য প্রয়োজন জোরালো খারাপ ইচ্ছাশক্তি এবং ভেতরে ষড়যন্ত্রের সাথে এনকের মিলিত নতুন সজ্জা, যা কোন প্রতীক চুরির মাধ্যমে ঘটে.. শুরু থেকে এটা দেখা যাচ্ছে যে এই কাজটি ছিল খুব সাধারণভাবে কেবল প্রতীক বদলানোর এক প্রচেষ্টা। এই কাজটি করা হয়েছিল বেশ মজা করে এবং কৌতূহলী উপায়ে।

ব্যবহারকারী অটর অটর এই সমস্ত মন্তব্যের সারাংশ করেছেন এবং বলেছেন [পোলিশ ভাষায়]

এই তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে পোলিশরা কার্যকরভাবে অশিক্ষিত জাতি। তারা প্রচার মাধ্যমের কর্মসূচিতে কি বলা হচ্ছে তা উপলব্ধি করতে পারে না এবং তারা “আমরা এক প্রতীকের পরিবর্তন ঘটাচ্ছি”-র মত এক সাধারণ বার্তা ধরতে পারে না। যদিও এটি বেশ সুন্দরভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে।

স্থানীয় সোশাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ সোজালিস্টিকা দুটি সংযোগ বা লিঙ্ক বের করেছেন [পোলিশ ভাষায়] যাতে ঘোষণা করা যেতে পারে যে, নাসজা-ক্লাসা এনকে.পিএল ডোমেইন নিয়ে নিয়েছে, এটি তার নতুন ব্রান্ডিং বা সাজকে সমর্থন করে।

Exit mobile version