ভারত: গাছের চারা প্রকল্প

মুম্বাইর দুই কর্পোরেট একজিকিউটিভ সতিশ বিজয়কুমার আর রঞ্জিত ওয়ালুঞ্জ একটি সফল অনলাইন আর অফলাইন প্রচারণা শুরু করেছেন মুম্বাই শহরের চেহারা পাল্টাবার জন্য, এটাকে আরো সবুজ করে।

ওয়েলকাম টু মুম্বাই ব্লগে পুষ্পী বলেছেন কেন এই ধরনের প্রকল্পের প্রয়োজন আছে:

মুম্বাই শহরে ধুলা খুব বেশী, কারণ হচ্ছে দূষণ আর জনসংখ্যার আধিক্য। প্রতিদিন নতুন বাড়ি উঠছে আর দু:খজনক হল যে গাছকে কেটে ফেলা হচ্ছে কংক্রীটের আচ্ছাদন দেয়া এই অগ্রযাত্রার জন্য। কিন্তু আপনারা কি বুঝতে পারেন যে অচিরেই শহরটিতে সবুজ প্রকৃতি উধাও হয়ে কেবলমাত্র কংক্রীটের জঙ্গল থাকবে আর সবুজ দেখতে পাবো শুধু যখন আমরা পার্কে যাবো হাঁটতে???

এই ব্লগার আরো বলেছেন:

মুম্বাই শহরে এখন আমরা কেবল দুই ধরনের পাখি দেখি: কাক আর কবুতর, অন্য সব সুন্দর পাখিগুলো কোথায়?

দ্যা স্যাপলিং প্রজেক্ট (পোস্টারে ক্লিক করুন প্রকল্পের ওয়েবসাইটে যেতে)। ছবি ফতুইয়ার সৌজন্যে

সতিশ বিজয়কুমার গত ২৪শে নভেম্বর, ২০০৯ তারিখে তার ব্লগ বোম্বে লিভস এ দ্যা স্যাপলিং প্রজেক্ট (গাছের চারা প্রকল্প) সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন:

আমি আর রঞ্জিত ছোট একটা প্রচারাভিযান করছি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সবার জন্য বিনামূল্যে চারা লাগানো আর বিতরণের।

বিস্তারিত জানার জন্য http://thesaplingproject.com/ সাইটটিতে দেখুন আর চারার লাগানোর জন্য নিবন্ধনের জন্য।

প্রকল্পের ওয়েবসাইটটি জানাচ্ছে যে চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। আর লোকেরা নিম বা অশোক গাছের প্রতিটি চারা স্পন্সর করতে পারেন মাত্র ৪০ ভারতীয় রুপি ( প্রায় ৮৫ সেন্ট) দিয়ে। অংশগ্রহণের জন্য একাধিক চারা লাগাতে হবে জনপ্রতি, অন্তত দুই বছরের জন্য তার দেখাশোনা করতে হবে আর তার বাড়ার খবর সম্পর্কে জানাতে হবে।

চারাগুলো বিতরণের জন্যে তৈরি। ছবি বোম্বে লিভস এর সৌজন্যে

আর এখানে রয়েছে অনলাইন প্রযুক্তির প্রয়োগ। দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে প্রকল্পটি চাচ্ছে যে গাছের মালিকরা অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করুক আর তারা নাগরিক ও অনলাইন সামাজিক মিডিয়া টুলস যেমন টুইটার, ব্লগ, ফ্লিকার আর ইউটিউব ব্যবহার করে এই চারাগুলোর ছবি আর ভিডিও অনলাইনে তুলে দিয়ে এদের বেড়ে ওঠা সম্পর্কে সবাইকে জানাবেন।

এই প্রকল্পটি বিপুল প্রচার পায় ব্লগের মাধ্যমে (বোম্বে লিভস, মায়াভি ওয়ার্লড) আর অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া টুলস যেমন ফেসবুক ব্যবহার করে। এই প্রকল্পের তথ্যগুলো অনেক ব্যবহারকারী টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন:

স্কাইন৩টি: চারা প্রকল্প আজকে ১১টার সময়ে শিবাজি পার্ক (দাদার) এ শুরু হচ্ছে। আরো তথ্য আছে @ http://bit.ly/5P2ham আসুন একটি চারা লাগাই :)।

গোপাল_বি: এটি একটি সবুজ সামাজিক উদ্যোগ আর ব্যবসায়িক দিক দিয়ে একেবারে অলাভজনক। মুম্বাই এর ছেলে মেয়েরা দেখ দ্যা স্যাপ্লিং প্রোজেক্ট।

আপনারা এই টুইটার ঠিকানায় আরো তথ্য পাবেন @ranjit_walunj (@রঞ্জিত_ওয়ালুঞ্জ), @bombaylives (@বোম্বেলিভস) আর টুইটারে হ্যাশট্যাগ #sapling (#স্যাপ্লিং) দিয়ে খুঁজেও।

চারার ঐক্য, ছবি বোম্বে লিভস এর সৌজন্যে

প্রথম চারা বিতরণ উদ্যোগ অনুষ্ঠিত হয় গত ১৯ ডিসেম্বর, শনিবার মুম্বাই এর শিভাজি পার্কে। ডিনএ ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে অনলাইনে প্রায় ২০০ লোক এই প্রচারণায় নিবন্ধন করেছে আর শনিবার ৬০ জনের বেশী স্বেচ্ছাসেবক উপস্থিত ছিলেন।

মুম্বাই মেটব্লগে সতিশ বিজয়কুমার ছবিসহ রিপোর্ট করেছেন:

আমরা সবাই প্রায় ১২০টা চারা বিতরণ করেছি ( নীম, অশোক, ভেষজ লতা) যেসব বন্ধুবান্ধবীরা এসেছে তাদের মধ্যে। এ ছাড়াও দিয়েছি কিছু শিভাজি পার্কের হাউজিং সোসাইটিতে আর সাধারণ মানুষকে।

আমরা স্কাউটস প্যাভিলিয়নেও কিছু চারা লাগিয়েছি।

অনলাইন আর অফলাইনে যারা টুইট, রিটুইট, আর ব্লগ করেছেন এই প্রকল্প সম্পর্কে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আর বিশেষ করে যারা ফেসবুকে অন্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আর এই ব্যাপারে উপস্থিত থেকে প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবী হয়েছেন তাদের প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা।

চারা বোনা হচ্ছে, ছবি বোম্বে লিভস এর সৌজন্যে

প্রকল্পের ফ্লিকার পাতায় আরো ছবি পাওয়া যাবে।

যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের টুইটারে কিছু প্রতিক্রিয়া:

অন্তর্যামী: চারা প্রকল্পে বেশ মজা হচ্ছে। নিম চাষের ব্যাপারে শিখছি।

স্কাইন৩টি: চারা প্রকল্প থেকে বাসায় ফিরেছি, দাদারে কিছু চারা লাগালাম, পরিবেশ বাঁচাতে বাড়ির জন্যে দুটো নিমের চারা এনেছি।

রাহুলকুল: @বোম্বেলিভস @রঞ্জিত_ওয়ালুঞ্জ আমি চারাগুলো বাড়িতে পৌঁছানোর সাথে সাথে লাগিয়েছি!! গর্ব হচ্ছে খুব ভালো একটা উদ্যোগ…#চারা

চারা পরিবহণ হচ্ছে, ছবি বোম্বে লিভস এর সৌজন্যে

সতিশ বলেছেন:

আজকে কেবল শুরু হল, আমরা এই উদ্যোগ আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো মুম্বাইয়ের বিভিন্ন যায়গায় আর অন্যান্য শহরে নিয়মিতভাবে চারা বিতরণ করে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে ২০১০ সালের মধ্যে ১০,০০০ চারা রোপন।

Exit mobile version