ফিলিপাইনস: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের টিভি বিজ্ঞাপন

সামনের বছর ফিলিপাইনসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সারা দেশে নির্বাচনী অফিসগুলোতে প্রার্থীদের সার্টিফিকেট জমা দেবার মধ্যে দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে, নির্বাচনী মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।

ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করা এবং নিজেদের সম্বন্ধে তথ্য জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দাঁড়ানো প্রার্থীদের টিভি বিজ্ঞাপন তৈরি করার দরকার হয়। এবং তা টিভিতে দেখানোর জন্য টাকা প্রদান করার প্রয়োজন। গত কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর ভিডিও বিজ্ঞাপন টিভিতে প্রচার করা শুরু হয়ে গেছে। এই সকল টিভি বিজ্ঞাপন ইউটিউবেও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পিনই পিকস! নির্বাচনে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নামের তালিকা এখানে সরবরাহ করেছেন। শালাপোগস ব্লগ প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এইসব প্রার্থীদের প্রতি সন্তুষ্ট নন:

এখন সকালে উঠার পরপরই নির্বাচনী হাওয়ার গন্ধ আপনার নাকে এসে লাগবে। এতেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, নির্বাচনী মৌসুম ঘনিয়ে আসছে। আপনি রাস্তার সকল কোণে এর ছোঁয়া দেখতে পাবেন। রাস্তায় বের হলেই দেখতে পাবেন রাস্তার উপর নির্বাচনী সঙ্গীত বাজছে। ব্যস্ত লোকেরা প্রার্থীরা তালিকা দেখছে এবং টিভি বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। এবং এখন আসছে সেই সমস্ত লোকেরা… যারা রাষ্ট্রপতি হবার যোগ্য!

২০১০ সালের নির্বাচন নিয়ে আমি ততটা উত্তেজিত নই, কারণ আমি প্রার্থীদের তালিকা ও তাদের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নই। যদিও আমি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েছি, তারপরেও রাজনীতি সম্বন্ধে আমার ততটা ধারণা নেই। তবে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি দেশটির কি রকম যত্ন নিতে পারে, তা নিয়ে আমি চিন্তা করি।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীদের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের তালিকা:

সিনেটর মানি ভিলার বিনয়ী মনোভাবের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন শুরু করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন:

তরুণ সিনেটর চিজ এসকুয়েডেরো একজন অতিমানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

প্রতিরক্ষা সচিব ও প্রশাসক পদপ্রার্থী গিলবার্ট টেওডোরো, সরকারে বুদ্ধিমান ও যোগ্য ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

নোইনোই একুইনো একজন সেনেটর এবং তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পুত্র। তিনি সবচেয়ে তারকা চিহ্ন অর্জন করা রাজনৈতিক “টিভি বিজ্ঞাপন” ও “সঙ্গীত ভিডিও” তৈরি করেছেন।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জোসেফ এস্ত্রাদা একটি বাত প্রতিরোধী বড়ির বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে জানান দিচ্ছেন, তিনি আক্ষরিক অর্থে আবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

ড্যানি আরাও নামের এক পণ্ডিত ব্যক্তি এই সমস্ত বিজ্ঞাপনের উপর এক পর্যালোচনা করেছেন:

এসব বিজ্ঞাপনের চেহারা সুন্দর, কিন্তু তার ভেতরে সারবস্তু বলে কিছুই নেই। এমনকি যদিও তারা প্রকাশ করার চেষ্টা করেছে যে, সত্যি তারা পরিবর্তন ঘটাতে ইচ্ছুক, কিন্তু কোন ভাবেই তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে নি এবং এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিছুই বলার চেষ্টা করেনি।

কেউ একজন হয়তো যুক্তি প্রদর্শন করতে পারে যে, এইসব বিজ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে তারা কেবল জনতার সামনে তাদের পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছে মাত্র। কিন্তু বিষয়টি আরো ভালো হত, যদি তারা একই সাথে তৎক্ষণাৎ বিশেষ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরত, যেমন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দেশটিতে কৃষি সংস্কার ব্যর্থ হবার কারণ?

বারিও সিয়েটে এ ধরনের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন পছন্দ করেন না

আমি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনকে ঘৃণা করি। আমার কাছে এটা অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। তার বদলে এই অর্থ অন্য কোথাও খরচ করা যেত। আমি চাই প্রার্থীরা নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ টাকা অন্য কোন প্রকল্পে ঢালুক, যেন এই টাকা যেন মানুষের কাজে আসে ।

বলা যেতে পারে আমি এখনো আমার পছন্দের প্রার্থী খুঁজে বের করতে পারি নি। আমি আমার ব্যক্তিগত আতশী কাচ দিয়ে পছন্দসই প্রার্থী খোঁজার কাজে ব্যস্ত রয়েছি। যদিও পছন্দসই প্রার্থী বেছে নেবার জন্য রাজনৈতিক টিভি বিজ্ঞাপন রয়েছে। নিজের সম্বন্ধে তথ্য জানানোর এ সব দৃশ্য, নির্বাচকদের সামনে প্রার্থীর নিজের অবস্থান তুলে ধরে। যদি তাদের মধ্য পছন্দসই কেউ একজন থাকত তা হলে ভাল হত, কিন্তু বেশীর ভাগ প্রার্থীর নিজেদের তুলে ধরার এই প্রচেষ্টা ও মুখ বিভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ, যেমনটা আসলে হবার কথা।