মৌরিতানিয়া: এক নতুন যুগ?

এক বছর আগের সামরিক অভ্যুত্থান অনুসরণ করে অভ্যুত্থানের নেতা দেশটিতে এক নির্বাচন দেয়। এই নেতার নাম মোহাম্মদ ওউলদ আবদেল আজিজ। মৌরিতানিয়া নামক এই দেশটিতে আগষ্টের শুরুতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও একই সময়ে দেশটি প্রথম আত্মঘাতী বোমা হামলার শিকার হয়। এর মধ্যে দিয়ে বোঝা যাচ্ছে দেশটি বিশাল এক পরিবর্তনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

গত ১২ই আগষ্ট মৌরিতানিয়ায় অবস্থিত শান্তিরক্ষী বাহিনী তাদের কর্মকাণ্ড বাতিল করে এই কারণ উদ্ধৃত করে যে দেশটির নিরাপদ অবস্থান ও নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন

মৌরিতানিয়ার এক শান্তিরক্ষা স্টেশনে কর্মরত শান্তিরক্ষী স্বেচ্ছাসেবিকা তার দৃষ্টিভঙ্গি বেকি’স মৌরিতানিয়ান এ্যাডভেঞ্চারে তুলে ধরেন:

আপনার খেয়াল করেছেন গতবছর থেকে শুরু হওয়া আমার চাকুরি জীবনের শুরু থেকে আমি দেখে আসছি মৌরিতানিয়ায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমার সন্দেহ, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাদের আর মৌরিতানিয়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আজকের দিনটা অবশ্য আমাদের সকলের জন্য এক বেদনাদায়ক দিন, কিন্তু আমি মনে করার চেষ্টা করছি যে এটা একই সাথে ভবিষ্যৎ পুরো বিশ্বের সামনে এক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। আমি (আবার) আমেরিকায় ফিরে যাবো, সম্ভবত পরবর্তী সপ্তাহে। পরবর্তীতে কি হতে পারে তা নিয়ে আমার অনেকগুলো চিন্তা রয়েছে, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে এর সাথে শান্তিরক্ষী বাহিনীকে অনেক কাজে যুক্ত থাকতে হবে। আমি বিস্তারিত সকল কিছু এখানে লিখছি না, কারণ আমি তার সব গুলো জানি না, কিন্তু আপনাদের সকল তাজা সংবাদ জানানোর নিশ্চয়তা দিলাম।

পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে নিউজ ব্লগ নিউজটাইম আফ্রিকা বর্ণনা করছে [ সম্পাদকীয় নোট: এই পোস্ট তুলে ধরার পরে এই পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে]:

দেশটির শান্তি মিশন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জাতির কাছে বিস্ময়কর, কারণ এই জাতির কাছে এই স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সত্যিকারের এক আশাবাদ তৈরি হয়েছিল। এই শান্তিরক্ষী বাহিনী, যার সদর দপ্তর আমেরিকার ওয়াশিংটনে, তা বিশ্বের প্রায় ৭৪ টি দেশে কাজ করছে। এই শান্তিরক্ষাবাহিনীর এই মানবিক কার্যক্রম ইসলামী সাম্রাজ্যের এক বালুকা ভূমিতে; আরো বিশেষ করে বলতে গেলে কৃষি কার্য, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা বিস্তার খাতে চলছে এবং তারা দেশটির শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বড় ধরনের উন্নতি সাধন করেছিল, যদিও দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ পশ্চিমা ধাঁচের শিক্ষার বদলে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা পছন্দ করে। তাদের এই বিদায় সরকারের জন্য এক বড় আঘাত, বিশেষ করে গ্রামের লোকজনের জন্য, যারা এই সমস্ত লোকদের সাথে মিশে গিয়েছিল, তাদের বিনয়ের কারণে। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ ওউলদ আবদেল আজিজ দেশটির নিরাপত্তার খাতিরে যে কোন ভাবে উগ্রবাদীদের সাথে লড়াই চালিয়ে যাবার প্রতিজ্ঞা করেছে।

এই ব্লগার বলে যাচ্ছেন :

এখন নতুন সরকার মনোনয়ন প্রদানের চারদিন পরে একুশ জন মন্ত্রী নিয়ে গঠিত হয়। এই মন্ত্রীসভার বিষয়টি সারা দেশে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রীসভার সকলেই উচ্চশিক্ষিত। বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে তারা উচ্চ মানের ডিপ্লোমা গ্রহণ করেছে।

বিশেষত সারা দেশের আরো আলোচনার বিষয় (অথবা অন্তত ব্লগোস্ফিয়ারে) হচ্ছে, নাহা বিনতে হামদি ওউলদ মোকনাস, সম্প্রতি যাকে সরকার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে; যেমনটা ব্লগার দি মুরস নেক্সট ডোর চিহ্নিত করেছেন:

মিজ. বিনতে ওউলদ মোকনাস প্রথম মহিলা, যিনি আরবীভাষী কোন দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন, তিনি আরো পাঁচজন মহিলার সাথে নিয়োগ প্রাপ্ত হন, যারা মোহাম্মদ ওউলদ আবদেল অজিজের সরকারে যোগ দেন।

ব্লগার এই নিয়োগের বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করছেন:

তার নিয়োগ একই সাথে চাতুর্য পূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়: বিনতে মোকনাসের নিয়োগ তার উত্তরসূরির মতো বাইরের মানুষদের কাছে এক তরতাজা এবং কোমল মুখশ্রী প্রদানের এক প্রচেষ্টা। জেনারেল তার সমর্থকদের অনেকটা নষ্ট করছেন (এ বিষয়ে পরে আরো বিস্তারিত জানানো হবে)। এ ছাড়াও এটা এক নতুন সরকার ও ইসলামী আন্দোলনে মাঝখানে একটি কাঁটা হয়ে রয়েছে, ইসলামী আন্দোলন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পূর্বে (এবং সময়, স্মরণ রাখতে হবে) বিরোধিতা করা আন্দোলন (এ ক্ষেত্রে ইজরায়েল), সরকারের নীতি হচ্ছে রাজনৈতিক সুবিধা লাভ, এই আন্দোলনের চিন্তাকে বিরোধিতা করে এর মধ্যে দিয়ে নিজেকে এই অবস্থা থেকে পরিষ্কারভাবে আলাদা করে ফেলা, বিশেষ করে তার “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে” যুদ্ধের প্রচেষ্টার কারণে, যদিও এই চিন্তা নিশ্চিত ভাবেই এসেছে গত সপ্তাহের আগে সংঘটিত হওয়া আত্মঘাতী হামলার পূর্বে (এবং সম্ভবত তাদের সম্ভাবনাকে মাথায় না রেখেই)।

Exit mobile version