উগান্ডা: কাটাইন প্রজেক্ট গ্রামবাসীদের ব্লগস্ফেয়ারে নিয়ে এসেছে

উগান্ডায় ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ছয় ভাগের সামান্য বেশী, অনেক কম এক সংখ্যা যা উগান্ডার জনসংখ্যার বিশাল অংশকে ব্লগারেন অথবা বিশ্বের ব্লগস্ফেয়ারের জগৎে প্রবেশের সুযোগ দেয় না। তবে একটি গ্রামে “গার্ডিয়ান এবং অবজারভার”- এর কাটাইন প্রজেক্ট বিষয়টি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

২০০৭ এর অক্টোবর থেকে, ২.৫ মিলিয়ান পাউন্ডের (৪ মিলিয়ান ডলারের) কাটাইন প্রজেক্ট নজর রাখছে এএমআরইএফ -এর কাজের উন্নয়নের উপর যা কাটাইনে অবস্থিত। এটি উগান্ডার উত্তর-পুর্বে অবস্থিত একটি উপ প্রশাসনিক গ্রাম্য এলাকা (ভার্চুয়াল ভ্রমণ করুন)। এর বাইরে উগান্ডায় সাধারণ সংবাদ সরবরাহ ও পাঁচটি প্রধান প্রজেক্ট এলাকার উন্নয়নকে অনুসরন করার লক্ষ্যে এই পাঁচটি মুল প্রকল্প এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিডিও ট্রেনিং দেওয়া হয়। কিভাবে তাদের জীবনকে ভিডিও ক্যামেরা ধারন করতে হবে সেই প্রশিক্ষন এখানে দেওয়া হয়।

[ফেব্রুয়ারীতে] কাটাইনের প্রায় ২০ জন লোক সেখানকার মিডিয়া ও রিসোর্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত তিনটি ভিডিও কর্মশালায় অংশ নেয়। এখন তা উপ প্রশাসিনক এলাকা এএমআরইএফ-এর অফিসে গ্রামবাসীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

চারটি ফ্লিপ ভিডিও ক্যামেরা ও ট্রাইপড (ক্যামেরা স্ট্যান্ড) গ্রামের কেন্দ্রে রাখা হয় যাতে তারা এই ক্যামেরা ধার করতে পারে এবং তাদের গল্প বলতে পারে।

এই কেন্দ্রের লক্ষ্য হলো কাটাইন-এর সম্প্রদায়কে তাদের নিজেদের জীবন সমন্ধে কথা বলার একটি বৈশ্বিক স্থাপনা বা প্লাটফর্ম দেওয়া- তার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ তৈরী করা, তাদের চিন্তা, এএমআরইএফ-এ তারা যে কাজ করছে- এবং এর মাধ্যমে তাদের তথ্য প্রযুক্তিতে প্রবেশ এবং এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সুযোগ করে দেওয়া।

ভিডিওর যে ফলাফল তৈরী হয় তা ভিলেজ ভয়েস বা গ্রামের স্বর বিভাগে প্রর্দশন করা হয়। একটি ভিডিওতে কাটাইনের বাসিন্দা জন ওগালো দর্শকদের দেখাচ্ছে তার আদি বাসগৃহ এবং চার্চের সেবা। অন্য ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বাইসাইকেল ট্যাক্সি ড্রাইভার ডেনিস এওয়ালু তার বাইসাইকেল ঠিক করছে, সে তার গ্রাহকদের সাথে দরকষাকষি করছে এবং এর জন্য দিনে তাকে ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) ভ্রমণ করতে হচ্ছে।

ভিলেজ ভয়েস বিভাগ, এ ছাড়াও পাঠকদের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ তৈরী করে দেয় টেক্সট বা লেখার মাধ্যমে। এর একটি পোষ্ট তিনটি স্কুলে যাওয়া মেয়ের গল্প রয়েছে। তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের আশার কথা আলোচনা করছে।

টেরেসা আকুপো:
ভবিষ্যতে আমি রাজনীতি নিয়ে পড়াশুনা করতে চাই এবং আমি আমার এলাকার সংসদ সদস্য হতে চাই। সংসদ সদস্যরা অনেক টাকা আয় করে। তাদের সবাই সম্মান করে।
সুসান আমওয়েসো:
আমার স্বপ্ন হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে একজন স্বাধীন নারী হওয়া। আমি আমার নিজের টাকা নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। সবকিছুর জন্য স্বামীর উপর নির্ভর হতে চাই না।
ম্যাগডালেনা আতাই:
আমার দাদা দাদী আমার পুরো বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে এবং যখন আমি আমার পড়ালেখা শেষ করবো, আমি তাদের উভয়ের জন্য উপহার কিনে দেব। কারন তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াতে পারবে না। উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর আমি নার্সের প্রশিক্ষণ নিব। যে সমস্ত মেয়েরা বেশী শিক্ষা লাভ করতে পারে না তারা এটাই হতে চায়। একজন নার্স সহজেই চাকুরী পায়। টিকে থাকার জন্য একজন নার্স গ্রামে সহজেই একটা প্রাইভেট ক্লিনিক খুলতে পারে।

কাটাইনে ২৫,০০০ বাসিন্দার বাস। তারা উগান্ডার বিদ্যুত সংযোগের বাইরে বাস করে। এটি ভাবা সম্ভব ছিল না যে এই সমস্ত লোকেরা কোনদিন বিশ্বের সবার কাছে তাদের গল্প শোনাতে পারবে।

Exit mobile version