পোল্যান্ড: কি ভাবে অবৈধ ভিডিও গেমস, চলচ্চিত্র ও সঙ্গীতের সিডি বিক্রয় বন্ধের জন্য লড়াই করতে হবে

অন্য যে কোন দেশের মতো পোল্যান্ডেরও বাজারের এক শক্তিশালী ঐতিহ্য রয়েছে। বিগত শতাব্দিতে এই সমস্ত বাজারগুলোর অবস্থান সামান্য স্খলিত হয়। তবে এখনও আমরা দেখতে পাই এখনও যে কোন বড় শহরের ঐতিহ্য যে এই বাজারগুলোতে খাবার ও প্রাচীন জিনিষ পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে এই সমস্ত বাজার জনপ্রিয় কারণ সেখানেই পাওয়া যায় অবৈধ ভিডিও গেমস, ছবি ও সঙ্গীতের সিডি। এর জনপ্রিয়তার কারণ, এখানে পাওয়া এই সমস্ত জিনিষ খুবই সস্তা।

পোল্যান্ডের একটি সংবাদ পত্রিকার সাইট গ্যাজেটা.পিএল (পোলিশ ভাষায়) একটি লেখা প্রকাশ করেছে যাতে বর্ণিত আছে এই অবৈধ বিক্রয় বন্ধ করার ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ যে চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত। পুলিশ এই অবৈধ বিক্রয়ের উৎস খুঁজে বের করতে হিমসিম খাচ্ছে এবং এই সব বাজারের বিক্রি কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু কেবল মুল্যের আকর্ষণ বিক্রি বাড়ার মূল বিষয় নয়; অনেক সময় আসল সফটওয়ার বা প্রকাশনাগুলো তাদের পণ্যকে অবৈধভাবে বিক্রয়ে এর জন্য উৎসাহ প্রদান করে। এবং ভবিষ্যৎে পণ্যের ব্যাবহারকারীকে এর সর্বোচ্চ ফল পাওয়া থেকে দুরে রেখে নতুন সংস্করন বা আপডেট কিনতে বাধ্য করে। গ্যাজেটা.পিএল ফোরামে এই বিষয়ে এক ব্যাপক আলোচনা হয়।

উক্ত ফোরামের একজন ব্যবহারকারী পাভেল উল্লেখ করেন (পোলিশ ভাষায়) যে সমস্যাটি অনেক বেশী জটিল। কারণ ইন্টারনেট থেকে সফটওয়ার অবৈধভাবে ডাউনলোড বা নামানো সম্ভব:

আপনাদের ভ্রোকলাও এর রবিবাসরিক বাজারে স্বাগত জানাচ্ছি- আমি সেই সমস্ত অবৈধ দোকানের বিপরীতে দাঁড়িয়ে রয়েছি যারা কোন রকম লজ্জা ছাড়াই তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এবং যখন পুলিশ আসে তখন পুরো এলাকা ফাঁকা, আর তাদের টিকিটি মেলে না। সবাই জানে কখন পুলিশ আসছে, সবকিছুই আগের মতো রয়েছে এবং সমস্ত ছবি বা ফ্লিম, গেমস ইত্যাদি ওয়েব সাইট থেকে ডাউনলোড করে বা নামিয়ে একটি ডিভিডিতে রেকর্ড করে নেওয়া যেতে পারে। প্রযুক্তির ভাষায় যাকে বার্ন করা বলে।

আরেকজন ব্যবহারকারী ফিক্সামডিরডাম২ লিখছেন (পোলিশ ভাষায়) যে তিনি অবৈধ সিডির কাজে মুগ্ধ কারন বাজারে আসল কপির চেয়ে যে অবৈধ কপি পাওয়া যায়, তার মান অনেক ভালো:

যারা বৈধ সফ্টওয়্যার কেনে তাদের সফ্টওয়্যারও অবৈধ সফ্টওয়্যারের মত অকার্যকর হতে পারে প্রয়োজনীয় আপডেট কেনা ছাড়া। এর চেয়ে যখন কোন পণ্য আপডেট বা আরো উন্নত করা হয় (সার্ভিস প্যাক দ্বারা) সেটির অবৈধ বা পাইরেট কপি কিনে আমি খুব সহজেই কার্যকর করতে পারি।

ব্যাবহারকারী পি২৪ লিখছেন (পোলিশ ভাষায়) অবৈধ সফটওয়ার ব্যবহারের আরেকটি কারন সম্পর্কে – বৈধ সফটওয়ারের দাম অনেক বেশী।

বাজারে একটি সফটওয়ার প্রোগ্রাম কেনার জন্য ২০ পোলিশ মুদ্রা খরচ করার বদলে আমি সেখানেই হেঁটে যাব যেখানে আমি বিনে পয়সায় এই প্রোগ্রামটি যে কোন সময় ওয়েব থেকে ডাউনলোড করতে পারবো। হয়তো আপনি পুরো প্রোগ্রামটি পাবেন না, কিন্তু যেটুকু পাবেন তাই কাজ করার জন্য যথেষ্ট। পুলিশ এই লড়াইয়ে জিততে পারবে না, হয়তো কিছু যুদ্ধ সে জিতবে। এই লড়াই চলতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত এই আকাশ ছোঁয়া দাম বজায় থাকবে।

ভুলে গেলে চলবে না হোমো গুগলেটিকাস এর কথা (পোলিশ ভাষায়)। তিনি অবৈধ বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আচরণের কথা উল্লেখ করেন:

আমি যতদুর জানি কেউ পাইরেটেড বা অবৈধ কপি করা ব্যাক্তিদের চোর বলে না, এবং এই ভাবে বিক্রি করাকে চুরি বলে উল্লেখ করে না। এ লেখায় যে মন্তব্য করা হয়েছে তা থেকে বিষয়টি পরিস্কার ভাবে উঠে এসেছে।

আরটি-ব্লগুজি একটি বিশেষ লেখা পোষ্ট করেছে (পোলিশ ভাষায়) যেখানে তিনি একই ভাবে উপসংহার টেনেছেন। যদি কোন পণ্যের দাম সামর্থ্যের মধ্যে হয় তাহলে লোকজন আসল জিনিষ কেনাই পছন্দ করবে।

ব্যাক্তিগতভাবে, আমি ওয়েব থেকে ছবি, সঙ্গীত বা বই নামানোর জন্য টাকা দিতেই সুখী বোধ করবো যদি সেগুলো সামর্থ্যের মধ্যে থাকে এবং তাদের দাম যদি খুব বেশী না হয়। যদি আমি কোন যেমন ম্যাগাজিনের সাথে প্রকাশিত ছবির ডিভিডি যে দামে পাওয়া যায় অথবা তার চেয়ে কম দামে পাই তাহলে আমি নতুন বের হওয়া ছবির জন্য আরো বেশী টাকা দিকে রাজী।

সেটা কি সম্ভব? সময়ই এর উত্তর বলে দেবে।

Exit mobile version