হিশাম আলমিরা’ত গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসির নতুন পরিচালক

আমরা খুবই উৎসাহের সঙ্গে জানাচ্ছি যে হিশাম আলমিরা’ত গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসি (জিভিএ)-এর নতুন পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন। হিশাম গ্লোবাল ভয়েস সম্প্রদায়ের দীর্ঘ দিনের সদস্য। তিনি মরোক্কো, উত্তর আফ্রিকা এবং অনলাইনে বাক স্বাধীনতা সম্পর্কে লিখেন। এছাড়াও তিনি একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগার এবং লেখক। ২০১০ সালে তিনি তার সহ-রচয়িতা ব্লগ টকমরক্কো.নেট এর সঙ্গে ডয়চে ভেলের ববস- সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতা জেতেন। তারপর তিনি যৌথভাবে মামফাকিঞ্চ প্রতিষ্ঠা করেন যা সম্প্রতি গুগল এবং গ্লোবাল ভয়েসেস কর্তৃক অনলাইন মত প্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থনে প্রদত্ত ব্রেকিং বর্ডার্স পুরস্কার জিতেছে। এছাড়াও তিনি আয়না| المرآة–তে ব্লগ লিখেন এবং @__হিশাম–এ টুইট করেন। উপরন্তু তিনি একজন মেডিক্যাল ডাক্তার হিসেবে ফ্রান্স এবং মরোক্কোতে প্র্যাক্টিস করেন।

হিশাম আলমিরা’ত

হিশাম অনলাইন স্বাধীনতা এবং গ্লোবাল ভয়েস সম্প্রদায় উভয় বিবেচনায় গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যোগদান করেছেন। বিগত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে যে অনলাইন কথাবার্তা বাস্তব জগতে ফলাফল সৃষ্টি করতে পারে: অনলাইন সামাজিক আন্দোলন, ডিজিটাল এক্টিভিজম (সক্রিয়তা), ডিজিটাল-নির্দিষ্ট সাংবাদিকতা এবং লেখা, অডিও এবং ভিডিওতে কন্টেন্টের প্রাচূর্য অনেক দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। বিশেষ করে এটা মধ্যপ্রাচ্য আর উত্তরআফ্রিকার ক্ষেত্রে সত্য। মরোক্কোতে হিশামের ডিজিটাল আন্দোলনে কাজ করার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং তার মেনা (মধ্যপ্রাচ্য সংবাদ সংস্থা)সহ সারা বিশ্বে ডিজিটাল এক্টিভিজম শিক্ষণ ও চর্চা অনুশীলনের ব্যাপক নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ গ্লোবাল ভয়েসেসের এডভোকেসি কার্যক্রমের জন্যে একটি স্বাগত শক্তি হিসেবে গণ্য হবে।

বিশ্বজুড়ে বহু সরকার অনলাইন কথাবার্তার শক্তিকে স্বীকার করে নিয়ে একে জাতীয় আইনের নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি বৃদ্ধি, প্রায়শই অনলাইন মিডিয়াকে অন্যান্য মিডিয়ার জন্যে বিপজ্জনক এবং বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। গ্লোবাল ভয়েসেস এডভোকেসির পাশাপাশি সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার বিভিন্ন সংস্থা যেমন সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি এবং রিপোর্টার্স সান্স ফ্রন্টিয়ার (সীমানাবিহীন রিপোর্টার) এর নথি অনূসারে, বিগত কয়েক বছর ধরে নাগরিক মিডিয়াতে কর্মরত ব্যক্তিরা ঘন ঘন আক্রমণ, সহিংসতা ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। জিভিএ’র প্রকল্প শংকিত কণ্ঠস্বর  গত তিন বছরে নাগরিক মিডিয়া প্রযোজকদেরকে ভীতিপ্রদর্শন, আক্রমণ বা গ্রেপ্তারের ৩৩৩টি মামলা নথিভুক্ত করেছে।

এই পরিস্থিতিতে জিভিএ’র কাজের জন্যে নতুন একটি জরুরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে: অনলাইন কথাবার্তার প্রতি হুমকি নথিভুক্ত করা এবং এর সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়া, বিশেষ ধরনের কথাবার্তার সঙ্গে তৈরী হওয়া ঝুঁকি এবং হুমকি সম্পর্কে ডিজিটাল এক্টিভিস্ট এবং নাগরিক মিডিয়া প্রযোজকদেরকে সচেতন হতে সাহায্য করা এবং তাদের নিজেদের সুরক্ষায় সাহায্য করার মতো টুলস (হাতিয়ার/যন্ত্রপাতি) এবং চর্চা সম্পর্কে জানা।

জিভিএ’র চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো সমর্থন এবং বিশ্বাসের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যাতে আমরা সবাই আমাদের কথাবলার অধিকার রক্ষার জন্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে পাই। আমাদের প্রথম পরিচালক সামি বেন ঘারবিয়ার অধীনে আমাদের কাজের লক্ষ্য ছিল অনলাইন নাগরিক কথাবার্তার জন্যে সাংবাদিক এবং পেশাজীবী মিডিয়া প্রযোজকদের কাজের মতো একইধরনের সুরক্ষা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। প্রথমদিকে সেই কাজের দৃষ্টি হামলা এবং হুমকিগুলো নথিভূক্ত করার মধ্যে বেশিরভাগ নিবদ্ধ ছিল। নথিভূক্তকরণ এখনো গুরুত্বপুর্ণ হলেও আমরা স্বীকার করি যে আমাদের বিশ্বব্যাপী একীভূত একটি ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকার ক্ষমতার উপর অনলাইন কথাবার্তাকে প্রচুর পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করা সরকার বা বেসরকারি সংস্থা এবং ইন্টারনেট পরিচালন সংস্থা নির্ধারিত নীতিমালার উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকবে। ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়সহ এবং নীতিমালা বিষয়ক কাজ চলবে হাতে হাত রেখে।

আমাদের সামনে এই চ্যালেঞ্জগুলো থাকায় হিশামের অভিজ্ঞতার মিশ্রণ,  ধীর-স্থির জ্ঞান এবং কৌশলগত চিন্তাধারা জিভিএ’র ক্ষেত্রে ভাল কাজ করবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি তার সাথে কাজ এবং তার থেকে শেখার খুবই আশা করে আছি এবং তাকে তার নতুন ভূমিকায় স্বাগত জানাই।

Exit mobile version