গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীক তার ১,০০০ তম পোস্ট উদযাপন করেছে

মার্চ ২০১১-এ যাত্রা শুরু করার পর, যখন নাটকীয়ভাবে উন্মোচিত অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারনে গ্রীসে ক্রমশ বাড়তে থাকা দুর্ভোগে জীবন কঠিন হয়ে উঠেছে এবং প্রচণ্ড আন্তর্জাতিক সমালোচনার সময়েও, গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীকের পাতায়, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে অনুবাদ করা ১,০০০ তম পোস্টটি প্রকাশিত হয়- যা কিনা ১০ মাসের সামান্য কিছু বেশী সময়ের মধ্যে অর্জিত হয়েছে।

২০ জনের বেশী স্বেচ্ছাসেবী অনুবাদকের একটি দল, যাদের বেশীর ভাগই তরুণ সাংবাদিক, পেশাদার অনুবাদক, এবং একটিভিস্ট, তারা গ্রীক ভাষী নাগরিকদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত কিছু সংবাদ তুলে আনছে।

এই প্রকল্প গ্রীক ভাষী নাগরিকদের জন্য সারা বিশ্বের বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্বলিত কাহিনী তুলে ধরে। এটা বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন অর্থনৈতিক সঙ্কট মানুষের চিন্তা এবং হৃদয়কে গ্রাস করছে, এবং যখন মূলধারার প্রচার মাধ্যম, অর্থনৈতিক সমস্যা ছাড়াও তাদের গ্রহণযোগ্যতাও ক্রমাগত সঙ্কটের মুখে পতিত হচ্ছে। তারা এখন, অর্থিক লাভ প্রদান করে এমন সংখ্যা ছাড়া সকল সংখ্যার আকার ছোট করে আনছে।

গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীক প্রকল্পের লোগো

সেরা লেখা

গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীকের প্রথম অনুবাদ হচ্ছে জন লিয়েবহার্টডসের লেখা পোস্ট “লিবিয়াঃ মোহাম্মদ নাব্বুস-এর জন্য শোক”, যার অনুবাদ করেছিলেন আলেক্সিয়া কালাইৎজি, ২১ মার্চ ২০১১-এ । এটা ছিল আদর্শ এক নাগরিক সাংবাদিকের নিহত হবার ঘটনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা পোস্ট। এর ১,০০০ তম অনুবাদটি ছিল সিলিভিয়া ভিনাসের লেখা পোস্ট “চিলি: এনজিওর রিপোর্টে জানা যাচ্ছে যৌন অপরাধ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে”, যার অনুবাদ করেছিলেন, ভেরোনিকি ক্রিকোনি।

হিটের সংখ্যা অনুসারে এখন পর্যন্ত সেরা পাচটি পোস্ট:

    ১. চিত্রে উন্মোচিত উত্তর কোরিয়া রাজনৈতিক বন্দী শিবিরের অবস্থা

    ২. জাম্বিয়া: পর্ণ ভিডিও, লিঙ্গ, সংস্কৃতি এবং নৈতিকতার বিষয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

    ৩. স্পেন: হাজার হাজার নাগরিক রাস্তায় নেমে এসেছে

    ৪. ফিচার লেখক এবং অনুবাদক আস্টেরিস মাসোরাস

    ৫. থাইল্যান্ড: বক্ষ উন্মোচন করে কিশোরীর নাচে ক্ষোভ

মূলত মোহাম্মদ নাব্বুসের পোস্টের পরে উত্তর কোরিয়ার বন্দী শিবিরের উপর করা পোস্ট একই সাথে প্রধান শব্দ অনুসন্ধানে পরিণত হয়। লেইলা নাচওয়াতির করা প্রথম পোস্ট, যা ইন্ডিগান্ডো নামক বিক্ষোভের উপর, এর অনুবাদটি ছিল একটি রেকর্ড করা সেরা ( অনুবাদ হবার দিনেই, এই লেখায়ে ২১৭ বার হিট হয় যা সকল সময়ের সেরা রেকর্ড) অনুবাদ, যার কারণে গ্রীসের বিক্ষোভকারীরা, দ্রুত স্পেনের নাগরিকদের উদাহরণ অনুসরণ করে।

গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীকের কয়েকজন অনুবাদক

পোস্টের পরিসংখ্যান

পোস্টের সংখ্যার দিক দিয়ে সেরা পাঁচ অনুবাদক হচ্ছেন আস্টেরিস মাসোরাস, ভেরোনিকি ক্রিকোনি, আলেক্সিয়া কালাৎজি, মিরতো ডিমিত্রাকুলা এবং মারজিয়ে লাজায়ু। এখানে বিস্ময়ের কিছু নেই যে, ২০১১ সাল, যে ঐতিহাসিক গণ জাগরণের সাক্ষী, সেই আরব বিপ্লবের কারণে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার উপর অনুবাদ করা লেখাগুলো ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়, যার পরেই জনপ্রিয় ছিল ল্যাটিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উপর করা অনুবাদ গুলো।

স্বাভাবিকভাবে, অনুবাদ করা সকল পোস্টে “নাগরিক প্রচার মাধ্যম” নামক বিষয়টি ছিল, যার সাথে ছিল রাজনীতি ( ৪৩৫), বিক্ষোভ (২৯৮), মানবাধিকার ( ২৭৩) , “ডিজিটাল একটিভিজম” (২৩০) এবং বাক স্বাধীনতা (১৯৪) নামক শব্দগুলো।

২০১১ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীকে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক পোস্ট অনুবাদ হয়েছে। এই মাসগুলোর সবকটিতে অনুবাদের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায় ( জুন মাসে অনুবাদের সংখ্যা ছিল ১৬৯ টি) । আর সে বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে কম পোস্ট অনুবাদ হয়েছে (৪৬ টি)। অনুবাদ হওয়া পোস্টের প্রায় অর্ধেক ছিল সামগ্রিক প্রবন্ধ ( ৪৪৮টি), আর বাকিগুলো ছিল টুকরো টুকরো তাজা সংবাদ।

গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীক, বিশ্বের প্রায় ৯০০ শহর থেকে এতে প্রবেশ করা যায়।

ট্রাফিক(প্রবেশের সংখ্যা)

যাত্রা শুরু করার পর থেকে গ্লোবাল ভয়েসেস গ্রীক নামক সাইটে-এ ১৮,২৯৭ জন প্রবেশ করেছে এবং ৩৮, ৬১০ বার বিভিন্ন পাতায় দেখা হয়েছে। এটা একটা অবিশ্বাস্য সংখ্যা, বিশ্বের ৯১৮ টি শহর থেকে এই পাতায় হিট হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রীসের নাগরিকরা ছড়িয়ে আছে এবং সম্ভবত স্প্যামবট এই সমস্ত উত্তেজনাপূর্ণ হিটের জন্য দায়ী, কিন্তু এই সংখ্যা, তারপরেও অবিশ্বাস্য এবং আশা জাগানিয়া।

তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবেশকারী গ্রীসের নাগরিক (৭৪ শতাংশ), এবং ৬ শতাংশ সাইপ্রাসের নাগরিক, এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, এবং প্রতিবেশী ম্যাসেডোনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে ২ শতাংশ নাগরিক এখানে প্রবেশ করে। নেট ব্যবহারকারী ৪০ শতাংশ নাগরিক তাদের কম্পিউটারে মূল (ডিফল্ট) ভাষা হিসেবে গ্রীক ভাষাকে ব্যবহার করে, যার মানে এখানে প্রবেশ করা নাগরিকদের ৬০ শতাংশ বহুভাষী, যার মধ্যে গ্রীক ভাষাও অর্ন্তভুক্ত।(সাম্প্রতিক দশকে গ্রীসে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে)।

আমাদের কাজ তুলে ধরার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রচার মাধ্যম অত্যন্ত কার্যকর, যদিও আমাদের ২৬ শতাংশ ওয়েব ব্যবহারকারী (রেফারেল) স্বয়ং গ্লোবাল ভয়েসেস থেকে এসেছে। আগ্রহী ২৫ শতাংশ টুইটার থেকে, আর ১৬ শতাংশ এসেছে ফেসবুক থেকে। অন্যদিকে সাইপ্রাস ভিত্তিক সাইপ্রাসনিউজ.ইয়ু নামক সংবাদ সংগ্রাহক পোর্টাল ১৩.১ শতাংশ নাগরিকের প্রবেশের জন্য দায়ী (এখান থেকে নাগরিকরা গ্লোবাল ভয়েসেসে প্রবেশ কর)।

একই রকম দুটি প্রকল্প, গ্লোবাল ভয়েসেস ফ্রেঞ্চ এবং স্প্যানিশ, সরাসরি সকল ট্রাফিক লাভ করে, এই দুটি তথ্যের জন্য আমরা উক্ত সম্প্রদায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। সকল অনুবাদ স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফেসবুকে পোস্ট হয় এবং টুইটারে পরে তা পোস্ট করা হয়, এছাড়াও এর একটি গুগল+ পাতার অস্তিত্ব রয়েছে। সামাজিক প্রচার মাধ্যমের ব্যবহার কি ভাবে আরো উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা পাঠকদের পরামর্শকে স্বাগত জানাই, এছাড়াও টুইটারে, আপনারা আমাদের অনুবাদ অনুসরণ করতে পারেন।

সবশেষে, বর্তমানে গ্রীস, গ্লোবাল ভয়েসেস ইংরেজির জন্য তিনজন লেখক প্রদান করেছে ( আস্টেরিস মাসোরাস, ভেরোনিকি ক্রিকোনি এবং এ্যালেক্সি কালাৎজি), আগামীতে গ্রীস এবং সাইপ্রাস থেকে আরো লেখক আসছে।

Exit mobile version