অক্টোবরের ১ তারিখে চীন গণ প্রজাতন্ত্র তার ৬০ তম বার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। এই উপলক্ষ্যে এক তারকা খচিত ছবি, “দি ফাউন্ডিং অফ রিপাবলিক” বা “প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায়” সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখে মুক্তি পেয়েছে। এই ছবি ইন্টারনেটে এক সক্রিয় উত্তপ্ত আলোচনার সৃষ্টি করেছে। চলচ্চিত্রটি নিয়ে এই সমালোচনা নয়, এখানে অভিনয় করা তারকা অভিনেতাদের জাতীয়তা নিয়েই যত আলোচনা তৈরি হয়েছে।
গত আগস্টে পাওয়া কিছু নতুন তথ্যে জানা যায়, ১৭২ জন অভিনেতা/অভিনেত্রী এবং পরিচালক এই চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং এদের মধ্যে ২১ জনের বিদেশী নাগরিকত্ব রয়েছে।
মূল চীন ভূখণ্ডের বিখ্যাত লেখক হান হান (韩寒) এ বিষয় নিয়ে তার ব্লগে আলোচনা করেছেন:
我认为,一个国家,能让这么多艺人转变国籍,这个国家一定是有他的责任的。
আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, যদি কোন একটি দেশ এত গুলো অভিনেতার জাতীয়তা পরিবর্তনের কারণ হয়ে থাকে, তা হলে এর দায় সেই দেশটিকেই নিতে হবে।
জাতীয়তা পরিবর্তন করা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। এটা অনেকটা বিবাহ বিচ্ছেদের মতো: হয়তো দেশটির প্রতি তাদের ভালোবাসা যে ভাবেই হোক হারিয়ে গেছে, অথবা তারা এর চেয়ে ভালো কিছু পেয়েছে। আমরা তাদের বিশেষ নৈতিক অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করতে পারি, কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত চরিত্রে কোন সমস্যা নেই।
সাধারণ চীনা নাগরিকদের জন্য, যারা ভালো করে খেতে পারে না, শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, যাদের বিনোদনের সুযোগ নেই, যারা কারো সাথে উত্তম সম্পর্ক গড়তে পারে না, সন্তান মানুষ করা তাদের জন্য কঠিন, তারা অসুস্থ হয় অথবা মারা যায়, এখানে মূল বিষয়টি হল, তারা কোথাও অভিবাসী হবার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে পারে না। ফলে যখন তারা দেখে যে এই সমস্ত অভিনেতারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে তাদের মধ্যে ঈর্ষা তৈরি হয়।
এই ব্লগ অনেক প্রতি উত্তর সৃষ্টি করেছে। বিষয়টির কঠিন সমালোচনা করে এর মধ্যে বেশ কিছু উত্তর এসেছে।
徐然 2009-08-12 04:56:26: 既然是外国人为什么不在外国发展,跑到中国来碍眼
যদি তারা বিদেশী হয়, তা হলে তারা চীনের বদলে বিদেশে গিয়ে কেন তাদের পেশার উন্নতি ঘটায় না।
এই তালিকায় কেবল শিল্পী সম্প্রদায় রয়েছে। যদি কেউ এর সাথে বিজ্ঞানী, ইত্যাদির নাম যুক্ত করে তা হলে তার ফলাফল আরো অনেক বিস্ময়কর হয়ে দাঁড়াবে। অবাক করার মতো বিষয় হত, যদি ব্যবসায়ীরা বিদেশের নাগরিক হবার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন, আমি ধারণা করি যদি তাদের সে যোগ্যতা থাকত, তা হলে তারাও বিদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণ করতেন।
ঘটনা হচ্ছে, যখন বিদেশীরা এই ছবিতে অভিনয় করার যোগ্যতা অর্জন করে তখন বলতে হয়, প্রশাসন তার নৈতিক নীতি এবং মর্যাদা হারিয়ে ফেলেছে। এর ফলে অন্যরা চীনের নিন্দা করবে।
এর অনেক বিকল্প উত্তরও এসেছে, অনেকগুলো আবার ছদ্মাবরণে, দেখুন:
চীনের চলচ্চিত্রে বিদেশীরা অভিনয় করছে, বিশেষ করে, দি ফাউন্ডেশন অফ রিপাবলিক”-এ, তারা অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের জন্য এই ছবিটি তৈরি করতে এসেছে, চীন তাদের এই কঠোর পরিশ্রমের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানায়।
…..অনেক বেশি কঠোর সমালোচক হবার দরকার নেই। বিদেশী নাগরিকত্ব থাকা মানে এই নয় যে তারা চীনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এই ছবি তৈরির কাজে তারা চীনে ফিরে এসেছে, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চীনের প্রতিনিধিত্ব করতে। তারা চীনের জন্য কিছু করছে…।
飞翔 2009-09-03 12:57:59: 不是不爱这个国家,只是不爱这个制度!
এর মানে এই নয় যে আমরা এই দেশটিকে ভালবাসি না, আসলে আমরা এই দেশের প্রশাসকদের দেশ চালানো পদ্ধতিটি পছন্দ করি না!
অন্যের সমালোচনা করার কোন অধিকার আমাদের নেই। প্রত্যেক ব্যক্তির তার নিজস্ব পছন্দ রয়েছে। বিদেশী নাগরিকত্ব নেওয়া মানে এই নয় যে, তারা চীনের মানুষদের ভালবাসে না।