চীনঃ গ্রামাঞ্চলে ব্লগিংয়ের আগমন

২০০৪ এর এক বিকালে ২৪ আওয়ার অনলাইনের ৫০ বছর বয়স্ক এবং দপ্তর নির্বাহী হিসেবে কর্মরত ব্লগার ঝ্যাং শিহে বেইজিংয়ের শহরতলীতে একটি হিংস্র হত্যাকান্ড দেখেন। পুলিশের ইমার্জেন্সি হটলাইনের ঠান্ডা ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে তিনি নিজেই ঘটনার বিবরন টুকে রাখেন এবং পরবর্তীতে তা ছবিসহ নিজের ব্লগে প্রকাশ করেন এবং পুলিশদের এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য ভীষনভাবে তিরষ্কার করেছিলেন।

ঝ্যাং এর এই অভুতপূর্ব লেখার উপর করা মন্তব্যগুলো দেখলে সেখানে জোলার এক মন্তব্য দেখা যাবে যিনি ঝ্যাং এর অনেক ছোট আর তার উত্তরসুরি হিসাবে কয়েকবছর পরে নাগরিক রিপোর্টার ব্লগিং এ তার অবদানের জন্য বিখ্যাত হয়েছেন । জোলা লিখেছিলেন, “ব্লগ একমাত্র মাধ্যম যা গতানুগতিক প্রচার মাধ্যমের বিরুদ্ধে দাড়াতে পারে।”

এই মাসের শুরুতে নিজেকে টাইগার টেম্পল নামে অভিহিত করে ঝ্যাং সাইকেল ব্লগিং টুরে বেরিয়েছেন খবর সংগ্রহের জন্যে এবং এ ভ্রমনে তিনি শাঞ্জি, শা'আনজি, ইনার মঙ্গোলিয়া আর নিংজিয়া – ঊত্তর-মধ্য চীনের চারটি দারিদ্রপীড়িত প্রদেশের মধ্য দিয়ে যাবেন। তিনি পথে তার দেখা বিষয়গুলোর ছবি, ভিডিও আর খবর তার ব্লগে দেবেন। এটি মনে হয় তার রাস্তার অপরাধ আর ২০০৮ এর অলিম্পিক ভেনুর নির্মানে প্রাকৃতিক বাধার বিষয়ে সিরিজের পরবর্তী ধাপ।

ঝ্যাং কি শুধু দেখবেন যে ক্রীতদাস দ্বারা চালানো ইটের ভাটা এখনও আছে কিনা? তার প্রধান সমস্যা মনে হচ্ছে যে ফাইল পাঠানোর মত ইন্টারনেট-কাফে(পানশালা) পাওয়া যার বেশি ভাগই নজরের আড়ালে আছে। মনে হচ্ছে তার একটা বড় পরিকল্পনা আছে, ৫০ বছর বয়সীদের বিগ ব্লগিং সংক্রান্ত তার ধারনার পর এখন তিনি জোর দিচ্ছেন নাগরিক রিপোর্টার আর নাগরিকদের জন্য রিপোর্টারের মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয়ে।

টাইগার টেম্পলের ভ্রমন পথ, লাল বিন্দু হচ্ছে বেইজিং এবং কাল বিন্দুটি হচ্ছে শান্জী প্রদেশের জিয়ান।

তার ভ্রমন শুরুর আগের দিন ৯ আগস্ট তিনি পোস্ট করেন ব্লগ ট্যুরের যন্ত্রপাতির একটা ছবির লিস্ট যেখানে ছিল গোর-টেক্স, একটি সনি ভায়ও, ম্যাপ, প্রাথমিক চিকিৎসার সরন্জাম, রেকর্ডিং এর যন্ত্রপাতি, একটি পিতলের তামাক পাইপ আর আরো অনেক কিছু। ভ্রমনের প্রথম অংশের ছবি পাওয়া যাবে এখানে, এখানে এবং ভিডিও পাওয়া যাবে এখানে

ঝ্যাং রেন্ডম ইন্টারভিঊতে অনেক সময় ব্যয় করছেন। ১২ আগস্ট দেখা গেছে তাকে হেবি প্রদেশের পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যেতে। এক গ্রামে এমন এক মেয়ের সাথে তার কথা হয়েছে যে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার হেটে স্কুলে যেত। সে খুশি মনে গর্ব করে বলেছে যে পরের সেমিস্টারে সে স্কুলের কাছে এক আন্টির সাথে থাকবে আর তাই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে সপ্তাহে একদিন বাড়িতে আসলেই হবে।

একই গ্রামে তার সাথে কথা হয় একজন জ্ঞানী বৃদ্ধের সাথে আর যার সাথে তিনি সাম্প্রতিক দেশি আর বিদেশি খবর নিয়ে আলোচনা করেছেন। দুই সপ্তাহ পরে টাইগার টেম্পল কিংবাইকু এর একটি ছোট্ট গ্রামে যান যেখানে তিনি দেখেন যে বিবর্তনের ইতিহাস উপস্থাপনকারী ছোট্ট স্থানীয় জাদুঘরের দরজার সামনে একজন বৃদ্ধা দাঁড়িয়ে আছেন। তার সাথে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে জাপান চীন আক্রমন করার সময়কার জীবনযাত্রা সম্পর্কে তিনি জানতে পারেন। আরও জানতে পারেন যে বৃদ্ধার স্বামী জাদুঘরটি স্থাপন করেছেন, কি করে তিনি পেনশন ছড়া বিধবা হিসাবে বেঁচে আছেন যখন তার সব সন্তান তাকে ছেড়ে গেছে এবং কি করে বাকি জীবন তিনি বাঁচতে চান।

হেবিতে থাকার সময় তিনি প্রথম একটি কয়লার খনি পান যেখানে বাচ্চারা বেআইনি ভাবে কাজ করছে। এখানেই তিনি দেখেন বাথরুমে যে ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে তিনি দেখতে পান যে গ্রীষ্মের গরমে পাহাড়ি রাস্তায় ট্রাফিক বেশি হলে ট্রাক চালকরা কি করেন আর শহরে এক বাচ্চা ধর্ষনকারি যখন যৌনাঙ ক্যান্সার এ আক্রান্ত হন তখন চিকিৎসার সময় ডাক্তার রাগে তার পুরুষাঙ কেটে দেন। এর পর কয়েকবার সে ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে আত্মহত্যার।

তার বেশ কিছু ভালো ছবি, ভিডিও আর বর্ণনা আছে আগস্ট ১৯ পর্যন্ত যখন সে হেবি ছেড়ে (সুন্দর সব ছবি দেয়া আছে) শানজিতে তার অফিসিয়াল ভ্রমন শুরু করেন। এই সপ্তাহান্তে টাইগার টেম্পল মরুভূমি পার হচ্ছেন:

Exit mobile version