বিরোধী নেতার সাক্ষাৎকার নেওয়ায় পাপুয়া নিউ গিনির রেডিও উপস্থাপক চাকরিচ্যুত

Cullighan Tanda

কুলিঘান টান্ডা। উৎস: ফেসবুক

পাপুয়া নিউ গিনির একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম সংস্থা থেকে একজন বিশিষ্ট রেডিও উপস্থাপকের আকস্মিক বরখাস্তকে গণমাধ্যম গোষ্ঠীগুলি বাকস্বাধীনতার দমন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এফএম১০০ (কালাং বিজ্ঞাপনী লিমিটেড) উপস্থাপক কুলিঘান টান্ডাকে বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ পাপুয়া নিউ গিনির পূর্ব সেপিকের গভর্নর অ্যালান বার্ডের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তিন সপ্তাহের জন্যে বরখাস্ত করা হয়। টান্ডা বরখাস্তের বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে “শৃঙ্খলামূলক বিষয়টি কার্যকরের প্রকৃতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।” পরবর্তীতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এফএম১০০ একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম সংস্থা টেলিকম পিএনজি লিমিটেডের অংশ।

দেশের গণমাধ্যম পর্ষদের সভাপতি নেভিল চোই “সরকারি মালিকানাধীন গণমাধ্যম সংস্থাগুলির জন্যে কাজ করা গণমাধ্যম কর্মীদের থামানো ও দমন চর্চার” নিন্দা করেছেন

একটি মুক্ত, দৃঢ় ও স্বাধীন গণমাধ্যম গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য স্তম্ভ। এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার ভিত্তি। ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের আসনে বসা কারো — বিশেষ করে ক্ষমতাসীন সরকারকে খুশি করে সুবিধা অর্জনের চেষ্টারত তোষামোদকারী সরকারি কর্মচারীদের — কেবল নিজেদের কাজটি দক্ষতার সাথে করা সংবাদকর্মীদের দমন করার কোনো অধিকার নেই।

চোই সমালোচনামূলক প্রতিবেদন পোস্ট করার জন্যে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি সাংবাদিকদের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলি কথা উল্লেখ করেছেন।

ফেসবুকে বার্ড টান্ডার সাথে তার সাক্ষাৎকারে অপবাদজনক বা মানহানিকর কিছু না বলার কথা জোর দিয়ে বলেছেন। তিনি টেলিকম পিএনজি লিমিটেডের ব্যবসা বর্জন করে “পরোক্ষা প্রতিবাদ” করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীগুলোর পদক্ষেপের বিষয়ে আমাদের দেশ যে পথে হাঁটছে তা ভীতিকর।

তাদের ব্যবস্থাপনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে হতাশ, বিশেষ করে আমরা অনুষ্ঠানের আগে তার সিইওর সাথে দেখা করার সময় তিনি আপত্তি জানাতে পারতেন।

আমি এখন সমস্ত পপুয়াবাসীকে সরকারি এজেন্টদের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদের আহ্বান জানাচ্ছি।

এক্স ব্যবহারকারী অ্যাড্রিয়ান এক্স টান্ডার অভিযোগপত্র আপলোড করে এফএম১০০-এর উপর চাপ সৃষ্টিকারী কর্তাদের নাম জানতে চেয়েছেন।

কালাং বিজ্ঞাপনী লিমিটেডের সিইওর আমাদের এই শীর্ষ ব্যক্তিদের নাম জানানো উচিত। তারা কাদের রক্ষা করছেন? কুলিঘানকে  বরখাস্ত করে চাকরিচ্যুত করার পিছনের কারণ জানিয়ে একটি প্রেস বিবৃতি কেন প্রকাশ করা হয়নি? ভয়ঙ্কর সন্দেহজনক কিছু ঘটছে।

প্রশান্তমহাসাগরীয় স্বাধীন্তা ফোরামের সভাপতি রবার্ট ইরোগা বরখাস্তের নিন্দা করে সম্পাদকীয় স্বাধীনতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

প্রক্রিয়াকরণ বা জবাবদিহিতা ছাড়াই তদারকি ও ব্যবস্থাপনাকে সংবাদ কক্ষের সাংবাদিকদের মুখ চেপে ধরে বরখাস্ত করতে দেওয়া যাবে না।

আমরা সাংবাদিকদের সাংবাদিক হতে দিয়ে সম্পাদকীয় স্বাধীনতা পেতে পারি। সমৃদ্ধ গণতন্ত্র, বিশ্বাসযোগ্য সরকার ও সচেতন জনগণকে সত্য জানানো অব্যাহত রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

ফিজির সাংবাদিক জন রাবুয়াতোকা টান্ডার সাথে সংহতি জানিয়েছেন

কুলিঘান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে তার সম্ভাব্য আচরণবিধি লঙ্ঘন চিহ্নিত করতে বললে তাকে বরখাস্ত করা হয়। কোনো ব্যাখ্যা নেই। কোনো স্বচ্ছতা নেই। কেবল মুখ চেপে ধরা ও বিধিনিষেধ। তার বসেরা কেবল “উপরের চাপ”-এর কথা বলেছে।

এটি সাংবাদিকের ছাড়াও পপুয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বাস্তবতা। গল্পের সকল পক্ষের কথা বলার জন্যে পেশাদারদের শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা, গণমাধ্যমে হস্তক্ষেপ যেকোনো সরকারের জন্যে অগণতান্ত্রিক।

যোগাযোগ বিষয়ক স্থায়ী সংসদীয় কমিটি বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপেও তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।

সীমান্তবিহীন প্রতিবেদকের ২০২৫ সালের প্রেস স্বাধীনতা সূচকে পাপুয়া নিউ গিনির অবস্থান ৭৮তম।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .