পেরুতে বিতর্কিত ‘এনজিও-বিরোধী’ আইন

অলঙ্করণে গ্লোবাল ভয়েসেস

মূলত গ্লোবাল ভয়েসেসের গণমাধ্যম অংশীদার আইএফইএক্সে প্রকাশিত এই নিবন্ধটির সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর হালনাগাদ করেছে গ্লোবাল ভয়েসেস কর্তৃক ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে।

পেরু সরকার ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে একটি বিতর্কিত আইন গ্রহণ করেছে। এটি অসাংবিধানিকভাবে সংগঠন, চিন্তাভাবনা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে বলে সমগ্র অঞ্চলের নাগরিক সমাজ এর নিন্দা করেছে। বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) পাওয়া আন্তর্জাতিক তহবিলের তদারকি জোরদারের উদ্দেশ্যে আইনটি তৈরি করা হয়েছে।

সংস্কারটি সরকারি সংস্থা পেরুর ন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপিসিআই) আইনি কাঠামো পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণকারী এনজিওসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও অনুমোদনের ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে। তাই সংবাদমাধ্যম ও সমালোচকদের অভিযুক্ত “এনজিও-বিরোধী আইন”টিকে “এপিসিআই আইন” বলা হয়।

এটি পাসের আগে আদিবাসী, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা পেরু সরকারকে এই আইনটি কার্যকর না করার অনুরোধ করে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে এই সংস্কার “দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর সহায়তার ক্ষতি করবে এবং অপব্যবহারের প্রতিবেদনকারী ও দুর্বল সম্প্রদায়গুলিকে রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কাজ সীমিত করে” এটি “পরিবেশ, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলিতে সহায়তাকে অত্যন্ত প্রভাবিত করবে।”

সংবাদমাধ্যম ও সমিতি প্রতিষ্ঠান (আইপিওয়াইএস) প্রকাশ্যে আইনটি প্রত্যাখ্যান করে সতর্ক করে দিয়েছে যে এই সংস্কার পেরুর সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে এনজিওগুলির বেসরকারি চরিত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং অন্যান্য লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা্র প্রণীত আইনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। “এই আইনটি একটি পুলিশী রাষ্ট্রের মতো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে,” আইপিওয়াইএস বলেছে।

এই আইন অনুসারে কোনো এনজিও অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত “জনশৃঙ্খলা, নাগরিক সুরক্ষা, জাতীয় প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা” প্রভাবিত করার কোনো কাজ করেছে বলে প্রতীয়মান হলে তার নিবন্ধন বাতিল করা যাবে। আইনটি কোনো বিবেচনা ছাড়াই সকল এনজিওকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের জাতীয় ব্যবস্থার অন্তর্ভূক্ত সত্তা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে।

সংস্কারের চিঠিতে তহবিলের অপব্যবহারের উপর আলোকপাত করা হলেও আইপিওয়াইএস সতর্ক করে দিয়েছে যে এর মূল উদ্দেশ্য আর্থিক জবাবদিহিতা নয় বরং নাগরিক সমাজের আদর্শিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ।

পেরুতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি ক্রমবর্ধমান প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে এই আইনটি কার্যকর করা হয়েছে। দেশে তথ্য অনুসন্ধানের মিশন অনুসরণ করে আন্ত-আমেরিকা সংবাদমাধ্যম সমিতি (আইএপিএ) ২০২৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ক্রমাগত রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংকটের প্রেক্ষাপটে সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার “গুরুতর অবনতি” সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

আইএপিএ প্রতিনিধিদল স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতি ক্রমবর্ধমান বৈরিতা, সমালোচক সাংবাদিকদের বিচারিক নির্যাতন এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আক্রমণের পদ্ধতিগত ব্যবহার উল্লেখ করেছে, যা পেশাগত চর্চার প্রতিকূল পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা ও জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে ক্ষুন্ন করে।

জানুয়ারিতে ইকা অঞ্চলে সাংবাদিক গ্যাস্টন মেডিনাকে হত্যা করা হয়। তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির অভাবসহ কর্তৃপক্ষের সংবাদমাধ্যমে অপরাধটির প্রচার রোধের কথিত চেষ্টা দায়মুক্তির একটি প্রতিফলন ছাড়াও সহিংসতা বৃদ্ধির স্পষ্ট প্রমাণ বটেও।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .