
ভিয়েতনামে একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশন “মন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিদের ভারসাম্য বিধান” সেন্সর করা হয়েছে। সূত্র: ভিয়েত তানের ফেসবুক পোস্ট, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।
ভিয়েতনামে কর্মরত প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের মান বজায় রাখা ও দেশে চলমান রাষ্ট্র-সমর্থিত বাক-স্বাধীনতার বিধিনিষেধের মধ্যে তাদের ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভিয়েতনামের সরকার দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ করে অনলাইন গণমাধ্যমে সমালোচনা সেন্সর করেছে এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের চুপ করে দিয়েছে। যেমন মানবাধিকার পর্যবেক্ষক (এইচআরডাব্লিউ) উল্লেখ করেছে, “রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও মানবাধিকার কর্মীরা পদ্ধতিগত হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, হেফাজতে নির্যাতন ও কারাবাসের সম্মুখীন হয়।”
এখন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলি গ্যাঁড়াকলে আটকে পড়ে সরকারি সেন্সরকে সহায়তা অথবা মৌলিক ডিজিটাল ও মানবাধিকার বজায় রাখার মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।
ভিয়েতনামের আইনী উদ্যোগের একটি প্রতিবেদন মেটা/ফেসবুক, গুগল, নেটফ্লিক্স, টিকটক ও অ্যাপলের মতো প্রযুক্তি সংস্থার ভিয়েতনাম সরকারের ব্যবহারকারীদের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ ও ডেটা হস্তক্ষেপের অনুরোধের প্রতিক্রিয়া মূল্যায়ন করেছে। সংস্থাটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি সংস্থাগুলির ব্যবহারকারীদের ডেটাতে অনুপ্রবেশের সরকারি অনুরোধের প্রত্যাখ্যান করলেও বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ অনুরোধের ৯০ শতাংশ সম্মতির হার খুঁজে পেয়েছে।
সরকারের সমালোচনার সেন্সর চিহ্নিত করেছে প্রতিবেদনটি।
আমাদের অনুসন্ধানে বছরের পর বছর ধরে প্রায়সময়ই প্রযুক্তি সংস্থাগুলির ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ভিয়েতনামের সরকারের ভৌগলিক নিষেধাজ্ঞা ও বিষয়বস্তু অপসারণসহ বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ ধারাবাহিকভাবে ৯০ শতাংশের উপরে মেনে চলার মতো একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উঠে এসেছে। একই সময়ে, সীমাবদ্ধ বা সরানো বিষয়বস্তুর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে সুরক্ষিত সরকারি সমালোচনা বলে সরকার ও কিছু প্রযুক্তি কোম্পানি স্বীকার করেছে।
ভিয়েতনামের আইনি উদ্যোগ প্রতিবেদন অনুসারে, বিশেষ করে মেটা ফেসবুকে সমালোচনার অযোগ্য কর্মকর্তাদের একটি গোপন তালিকা বজায় রাখে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষক ভিয়েত তানের পৃথক একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক টো লাম সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তাদের ১০০টিরও বেশি বিষয়বস্তু অবরোধ করা হয়েছিল।
2/3) It details Meta's compliance with government requests to block content critical of Vietnam’s leadership, including political cartoons and discussions of internal power struggles. The report criticizes the lack of transparency and due process in content moderation, urging … pic.twitter.com/k5xGm4R0Ow
— Viet Tan (@viettan) October 2, 2024
২/৩) এটি রাজনৈতিক কার্টুন ও অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াইয়ের আলোচনাসহ ভিয়েতনামের নেতৃত্বের সমালোচনামূলক বিষয়বস্তু অবরোধের সরকারি অনুরোধের সাথে মেটার সম্মতির বিবরণ দেয়। প্রতিবেদনটি বিষয়বস্তু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবের সমালোচনা করেছে …
এটি মেটাকে ভিয়েতনামের জনগণের তথ্যের অধিকার রক্ষায় জন্যে নিম্নলিখিতগুলি বিবেচনা করতে বলে:
ভিয়েতনামের সরকার সক্রিয় কর্মী গোষ্ঠীগুলির সকল বিষয়বস্তুকে ‘সংবেদনশীল’ ও সম্ভাব্যভাবে স্থানীয় আইন লঙ্ঘনকারী বিবেচনা করে বলে মেটাকে আরো ভালভাবে বর্ণনা করতে হবে কখন এটি স্থানীয় ব্যবহারকারীদের জন্যে বিষয়বস্তু সেন্সর বিবেচনা করবে। উদাহরণস্বরূপ, ভিয়েতনামের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ কি যথেষ্ট হবে? নাকি আদালতের আদেশসহ অনুরোধটি করা উচিত? আর যদি অন্তর্নিহিত বিষয়বস্তু শুধু একটি ব্যাপক রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করে, তখন?
“অন্যায় ও স্বেচ্ছাচারী” সরকারি অনুরোধ মেনে চলায় ভিয়েত তানের মেটার সমালোচনা এবারই প্রথম নয়। যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানিটিকে দায়বদ্ধ রাখার জন্যে ভিয়েত তানের অ্যাডভোকেসি পরিচালক মিশেল ত্রান দুক একটি ই-মেইল সাক্ষাৎকারে এই লেখকের সাথে তাদের পরিকল্পনা ভাগাভাগি করেছেন.
আমরা মেটাকে সরকারের অনুরোধে তাদের বিষয়বস্তু অবরোধের প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ করার অনুরোধ জানিয়ে বিষয়বস্তু নামানো ও বিধিনিষেধ তুলে ধরেছি। পরবর্তী পদক্ষেপ হলো ভিয়েতনামী সরকারকে বাক স্বাধীনতা সেন্সরে সহযোগিতার জন্যে মেটাকে দায়বদ্ধ রাখতে কংগ্রেস সদস্যদের জড়িত করা এবং মেটার কর্পোরেট মানবাধিকার নীতি ও বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক উদ্যোগের অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতিবিরোধী সেন্সর কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদনের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো।
নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলে সংস্কার হবে কিনা জানতে চাইলে মিশেল ত্রান দুক দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কুখ্যাত মানবাধিকার ইতিহাস তুলে ধরেন।
আগেরজন ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা আর বর্তমানেরটি একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা। অফিস বদলের পর ভিয়েতনামে মানবাধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে আরো ভালোভাবে সম্মানের তেমন কোনো লক্ষণ নেই। শুধু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপই ভিয়েতনামের এই অধিকারগুলিকে এগিয়ে নিতে পারে।
ভিয়েতনামের আইনি উদ্যোগের প্রতিবেদনে এর জন্যে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির অবৈধ সরকারি অনুরোধ প্রতিহত করে ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষা করতে অনলাইন আলোচনা পরিবর্তনের সাইবার বাহিনী ও ট্রলগুলিকে সরিয়ে মানবাধিকার রক্ষাকারীদের কাজ সমর্থনের সুপারিশ করা হয়েছে৷