একটি বিষয়বস্তু অংশীদারিত্ব চুক্তির অধীনে মেদান টিভিতে প্রথম প্রকাশিত এই নিবন্ধটির একটি সম্পাদিত সংস্করণ এখানে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে৷
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে আজারবাইজানের দম্পতিদের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্যে কপ২৯ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের (কপ২৯) ২৯তম অধিবেশন এই বছর ১১-২২ নভেম্বরের মধ্যে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হবে।
বিধিনিষেধ সত্য কিনা তা নিশ্চিত করার জন্যে মেদান টিভি বেশ কয়েকটি বিয়ের হলের সাথে কথা বলেছে। এবং তারা ছিল. বেশ কয়েকটি বিবাহের হল মেদান টিভিকে নিশ্চিত করেছে যে তাদের আগত আন্তর্জাতিক অতিথিদের আরামের দিকে মনোনিবেশ করতে এবং যানজট রোধ করতে ৮-২২ নভেম্বরের মধ্যে বুকিং প্রত্যাখ্যান করতে বলা হয়েছিল।
মেদান টিভির সাথে সাক্ষাৎকারে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাষ্ট্রের বিয়ের হলগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া উচিত। নাতিগ জাফারলি একটি সাক্ষাৎকারে মেদান টিভিকে বলেছেন:
সেখানে কর্মরতরা দৈনিক শ্রমিক বলে রাষ্ট্রের ১৪ দিনের হারানো রাজস্বের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। মাসের অর্ধেক কাজ না করতে পারলে তাদের অবস্থা কঠিন হয়ে যাবে। দুঃখজনকভাবে , আমি মনে করি না, এই হলের মালিকানা কর্মকর্তা পরিচালকরা এমন অনুরোধ করবে।
জাফরলি আরো বলেন, বিয়ের হলগুলির “ক্ষতিপূরণ দাবি করার অধিকার আছে। শুধু কর সুবিধা সমস্যাটির সমাধান নয়। রাষ্ট্রকেও তাদের হারানো রাজস্ব পরিশোধ করতে হবে।”
কৃষি বিশেষজ্ঞ ওয়াহিদ মহররমলি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তটিকে সামর্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে যুক্তি দিয়েছেন দেশটির এধরনের বৈশ্বিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষমতা সীমিত বলে মানুষের জীবিকার ক্ষতি হচ্ছে। মেদান টিভির সাথে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি প্রশ্ন করেন আজারবাইজানকে কেন এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে:
কপ২৯ এর ফলে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু বিধিনিষেধ চালু হয়েছে। কেন আমাদের স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে দেওয়া হয় না? আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রতিবার, আজারবাইজান বিধিনিষেধ চালু করে। বিয়ের হলের কাজ বন্ধ করলে এসবের মালিক নয়, সেখানে নিযুক্ত লোকজনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আবজাস মিডিয়ার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে আইনজীবী আসাবালি মুস্তাফায়েভ বলেছেন আজারবাইজানের এই জাতীয় পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কোনো প্রাসঙ্গিক আইন না থাকায়, “এটি স্পষ্ট নয় যে [প্রভাবিত ব্যবসার জন্যে] কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। মহামারী চলাকালে সরকার মানুষকে বাড়িতে থাকতে বলে ব্যক্তি ও ব্যবসা উভয়কেই ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কপ২৯-এর সময় সরাসরি ব্যবসাকে প্রভাবিত করা বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে মুস্তাফায়েভের একই ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
সম্ভাব্য ক্ষতিপূরণের বিষয়ে প্রাসঙ্গিক সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি
জুনের শেষে দেশটি পেট্রল, ডিজেল, গণপরিবহন এবং গৃহস্থালীর বর্জ্য পরিবহনের জন্যে শুল্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় মূল্য নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় সংস্থা শুল্ক পর্ষদের মতে, পরিবেশের উপর প্রভাবের কারণে ডিজেল জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি পরিবেশগত। বিশেষজ্ঞরা অন্যভাবে মনে করে সরকারের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে তেল ও গ্যাসের ক্রমবর্ধমান রাজস্ব কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা হলো মূল্যবৃদ্ধিকে “পরিবেশগত সমস্যা” সমাধানের অজুহাত বানানো। এদিকে রাজধানী বাকু ব্যাপক পুনর্গঠনের মধ্যে থাকায় শহরের বাসিন্দারা প্রচণ্ড তাপ, রাস্তা বন্ধের কারণে যানজট ও ধূলাবালু সহ্য করতে হচ্ছে।
স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যদ্বাণী সরকার জ্বালানি খরচ বাড়ালে মৌলিক খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে। এবং সত্যিই বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কৃষকরা বলেছে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি লাঙল চাষ ও পরিবহন থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করে। কৃষি বিশেষজ্ঞ মহররমলি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান কমিটি থে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কৃষকদের খরচ ৬ কোটি মানাত (প্রায় ৪১.৩২ লক্ষ টাকা) বেড়েছে যা আগামী মাসগুলিতে সকোল পণ্য ও পণ্যের খরচ বৃদ্ধি করবে।
রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যান কমিটিও ১১ জুলাই আটা, পাস্তা, লাল মাংস ও ডিমের পাশাপাশি জলপাই তেল, ফলমূল ও শাকসবজির মতো প্রধান খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির রিপোর্ট করেছে৷
রোভশান আগায়েভের মতো অন্যান্য স্বাধীন অর্থনীতিবিদরাও সাম্প্রতিক বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস দিয়েছে। মেদান টিভির সাথে একটি সাক্ষাৎকারে আগায়েভ সামনের শরতে গণপরিবহন ও গ্যাসোলিনে প্রতিটি পরিবারের মাসিক খরচ এক শতাংশ মূল্যস্ফীতিসহ ১০ শতাংশের বেশি অতিরিক্ত হবে বলে মনে করেছেন। আজারবাইজান কেন্দ্রীয় ব্যাংক বর্ধিত শুল্কের ফলে ১.৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি অনুমান করেছে।
নাতিগ জাফরালি মনে করছেন গৃহস্থালি উপযোগের খরচও বেড়ে যাবে। “ব্যয় বাড়ছে, রাজস্ব হ্রাস পাচ্ছে এবং এটা কেবল শুরু। গৃহস্থালীর উপযোগিতাও বাড়তে চলেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে মানাত তার মূল্য হারাবে,” জাফারলি মেদান টিভিকে বলেছেন।
কপ২৯-এর আগে রাজধানী বাকুতে ব্যাপক মেরামত ও পুনর্গঠন চলছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে কথা বলা বাসিন্দারা যানজটের অভিযোগ করে বলেছে এখন সরকারি যানবাহনগুলি রুট পরিবর্তন করায় তাদের নিয়মিত যাত্রার তিনগুণ না হলেও দুগুন দুরত্ব বেড়েছে। অর্থনীতিবিদ জাফারলি মেদান টিভির সাথে অন্য একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন কপ২৯ এর আগে শহরব্যাপী সংস্কার কাজের জন্যে ৪৭ কোটি মানাত (প্রায় ৩,২৫৩ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়। জাফরলি মেদান টিভিকে বলেন, “এই কাজগুলো থেকে বোঝা যায় এই সরকার তার নাগরিকদের সন্তুষ্ট না করে তার আন্তর্জাতিক অতিথিদের উপর একটি ছাপ ফেলার বিষয়ে বেশি যত্নশীল।” আনুষ্ঠানিকভাবে কর্তৃপক্ষ এবং আয়োজক কমিটি এই সংস্কার প্রকল্পের জন্যে বা পুরো অনুষ্ঠানের অর্থায়নের মোট বাজেট বরাদ্দ প্রকাশ করেনি।
কিছু বিশেষজ্ঞের অনুমান অবকাঠামো, হোটেল, পরিবহন, লজিস্টিক, যোগাযোগ ও নিরাপত্তার ব্যয় মিলে কপ২৯-এর পরোক্ষ ব্যয় এক বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১১,৭৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।