
আফ্রিকীয় ইউনিয়নের গণমাধ্যমকর্মীদের ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।
গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে আফ্রিকীয় সাংবাদিকরা এই মহাদেশে সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে তাদের মতামত ভাগাভগি করেছে।
গত কয়েক দশকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) উন্নয়ন সাংবাদিকতা পেশাকে বদলে দিয়েছে। মৌলিক ইন্টারনেট ব্যবহার ও সামাজিক নেটওয়ার্কের আধিক্য ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন সাংবাদিকতায় প্রবেশ করছে। চ্যাটজিপিটি, জিরোজিপিটি, ডিএএলএল-ই, নিউ/এস/লিক, মিডজার্নি এবং অডেমিকের মতো সরঞ্জামগুলি সম্পর্কে সকল সাংবাদিকদের সচেতন থাকা উচিত।
তবুও আফ্রিকা বিশ্বের সবচেয়ে কম সংযুক্ত অঞ্চল রয়ে গেছে। সৌদি আরব, সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে ইন্টারনেটে প্রবেশের হার ৯০ শতাংশের বেশি হলেও সবচেয়ে স্পষ্ট ডিজিটাল বিভাজনের আফ্রিকাতে মাত্র ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রায়শই অবকাঠামোগুলি পুরানো, কিছু দেশে সংযোগের খরচ বেশি এবং আমদানি করা প্রযুক্তি আফ্রিকীয় পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপুর্ণ নয়। স্ট্যাটিস্টাতে প্রকাশিত কেবল.সিও.ইউকে সমীক্ষার ফলাফল অনুসারে ১জিবি ইন্টারনেট ডেটার দাম ২০ ডলারেরও (প্রায় ২,২০০ টাকা) বেশি বিশ্বের দশটি দেশের মধ্যে পাঁচটি (সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, বতসোয়ানা, টোগো, সেশেলস ও নামিবিয়া) এই মহাদেশে রয়েছে।
অন্যদিকে ইন্টারনেট বিশেষ করে আফ্রিকায় বিভ্রান্তির ঘটনাকে ইন্ধন জোগাতে পারে।
জাম্বিয়ার লুসাকাতে ১১ থেকে ১৩ মে, ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো ও আফ্রিকীয় ইউনিয়ন (এইউ) আয়োজিত দ্বিতীয় আফ্রিকীয় গণমাধ্যম সম্মেলনে আফ্রিকীয় সাংবাদিকরা তাদের পেশায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনুপ্রবেশ ছাড়াও গণমাধ্যমের স্থায়িত্ব এবং এই মহাদেশের বিষয়ে আলোচনা করেন।
To mark the 30-year anniversary of the #WPFD, Our #AUMediaFellows joined over 300 African editors, journalists and media stakeholders at the #AMC2023 to shape a future of journalism ,by addressing rights of journalists in the age of Pre-Trained Transformed AI. #AUMediaFellowship pic.twitter.com/E4hR4v5bqm
— African Union (@_AfricanUnion) May 16, 2023
#ডাব্লিউএফপিডি’র ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রাক-প্রশিক্ষিত রূপান্তরিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সাংবাদিকদের অধিকারকে মাথায় রেখে সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ গঠনের জন্যে #এএমসি২০২৩তে আমাদের #এইউগণমাধ্যমসহকর্মীদের ৩০০ জনের বেশি আফ্রিকীয় সম্পাদক, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম অংশীজনদের সাথে যোগ দিয়েছে। #এইউগণমাধ্যমসহকর্মিতা
আফ্রিকীয় ইউনিয়ন গণমাধ্যম সহকর্মীদের একটি দলসহ কিছু অংশগ্রহণকারী গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে তাদের মতামত ভাগাভাগি করতে সম্মত হয়েছে। আফ্রিকীয় ইউনিয়ন গণমাধ্যম সহকর্ম হলো ২০২২ সালে এই মহাদেশীয় সংস্থা ও জর্মন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জিআইজেড) চালু করা একটি কর্মসুচি যার লক্ষ্য দ্বন্দ্ব ও সংকটের বাইরে আফ্রিকা সম্পর্কে গল্প বলতে সক্ষম করার জন্যে সাংবাদিক ও বিষয়বস্তু নির্মাতাদের আরো ভালভাবে তৈরি করা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাংবাদিকদের প্রাথমিক ভূমিকা প্রতিস্থাপন করা উচিত নয়
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিঃসন্দেহে সময় বাঁচাতে, অ্যালগরিদমভিত্তিক বিষয় নির্বাচনে, রেকর্ড সময়ের মধ্যে তথ্য বাছাই ও গ্রাফ তৈরিতে সাহায্য করতে পারলেও এই ধরনের অন্যান্য কাজে সকল গণমাধ্যম পেশাজীবীদের তাদের পেশায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিমিত ব্যবহার করা উচিত। ডেইলি ট্রাস্টের নাইজেরীয় সাংবাদিক আফিজ হানাফি ব্যাখ্যা করেছেন:
L'IA est un outil très pertinent pour le journalisme et je pense que chaque journaliste devrait l'adopter pour améliorer son travail. Notez que j'ai dit “améliorer”, ce qui signifie que l'IA ne remplace pas et ne devrait pas remplacer le rôle premier d'un journaliste, qui est de rassembler des faits à l'aide de sources fiables et de reportages sur le terrain. Elle offre des moyens multidimensionnels d'utiliser l'IA et le journalisme de données pour amplifier la narration et produire les impacts souhaités.
সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি খুব দরকারী সরঞ্জাম এবং আমি মনে করি সকল সাংবাদিকদের তাদের কাজের উন্নতির জন্যে এটি ব্যবহার করা উচিত। মনে রাখবেন যে আমি এখানে “উন্নতি” বলেছি। এর মানে হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাংবাদিকদের প্রাথমিক ভূমিকা অর্থাৎ নির্ভরযোগ্য উৎস ও সরেজমিন প্রতিবেদন থেকে তথ্য সংগ্রহ করা প্রতিস্থাপন করবে না এবং করাটাও উচিত নয়। একটি গল্প প্রসারিত করতে এবং পছন্দসই প্রভাব অর্জন করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা সাংবাদিকতা ব্যবহার করার বহুমাত্রিক উপায় রয়েছে।
মিশরীয় গেজেটের বিভাগীয় প্রধান আমিরা সাঈদের মতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি গণমাধ্যমের দৃশ্যপটকে আমূল পরিবর্তন করে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ধরনেরই প্রভাব ফেলেছে।
En ce qui concerne l'aspect positif de l'utilisation de l'intelligence artificielle, elle facilite la collecte d'informations et de données sur certains sujets, la manière de les rendre plus accrocheuses en utilisant la visualisation des données et d'autres outils de l'intelligence artificielle. Vous pouvez créer un podcast en utilisant l'IA. Cela facilite donc le rôle des médias. Cependant il y a un impact négatif en ce qui concerne la diffusion des stéréotypes. Par exemple, si vous demandez à l'IA de collecter des informations sur l'Afrique, elle aura certains types d'études liés à l'Afrique et aux clauses traditionnelles de l'Afrique (…).
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাব মাথায় রেখে বলা যায় এটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ডেটা ও তথ্য সংগ্রহ এবং ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার বিষয়ে সুবিধা দেয়। গণমাধ্যমের ভূমিকা সহজতর করতে আপনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে পডকাস্ট তৈরি করতে পারলেও ছকেবাঁধা প্রচারের সাথে জড়িত এর একটি নেতিবাচক প্রভাব আছে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আফ্রিকার তথ্য সংগ্রহ করতে বললে তাতে আফ্রিকা ও ঐতিহ্যবাহী আফ্রিকীয় ধারার সাথে সম্পর্কিত নির্দিষ্ট ধরনের গবেষণাই থাকবে (…)।
সাংবাদিকদের জন্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রশিক্ষণ অপরিহার্য
তাই গণমাধ্যম পেশাজীবীদের জন্যে প্রথমে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে নিজেকে ঠেলে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। একটি পরিচিতি আবশ্যক, যেমন সাঈদ উল্লেখ করেছেন:
En tant que journalistes et professionnels des médias, nous devons maîtriser les nouvelles technologies. En plus de la presse écrite, les médias numériques sont désormais au premier plan. Aujourd'hui, les gens ont tendance à préférer regarder une vidéo plutôt que de lire un article. Il est donc très important de savoir comment utiliser au mieux ces technologies, surtout l'IA, pour améliorer la qualité de son travail.
সাংবাদিক ও গণমাধ্যম পেশাজীবী হিসেবে আমাদের অবশ্যই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে। ছাপা গণমাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল গণমাধ্যম এখন প্রাথমিক স্থান দখল করে আছে। আজ জনগণ নিবন্ধ পড়ার চেয়ে ভিডিও দেখতে পছন্দ করে বলে আমাদের কাজের গুণমান উন্নত করতে এই প্রযুক্তিগুলি বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোত্তম ব্যবহার জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম দুজনের এই বিষয়ে মিশ্র মতামত থাকলেও রুয়ান্ডার সাংবাদিক ও রুয়ান্ডা পোস্টের প্রতিষ্ঠাতা জনসন কানামুগিরে একটি বিষয়ে জোর দিয়েছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নৈতিক উদ্বেগ তৈরি করে।
Je n'utilise pas l'IA pour créer. Tout auteur qui l'utilise devrait faire savoir aux lecteurs que l'outil a contribué au contenu qu'il produit, et dans quelle mesure. Je dis cela parce que les outils d'IA ont des défauts en ce qui concerne les droits d'auteur du contenu qu'ils génèrent, qu'ils reproduisent des schémas biaisés et qu'ils se trompent dans leurs prédictions sur un certain nombre de choses. Certains outils d'IA ne peuvent être utilisés par les journalistes que pour effectuer des recherches ou pour analyser d'énormes volumes de données. Les utilisateurs devraient toujours être conscients de ces défauts.
আমি লিখতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি না। এটি ব্যবহারকারী লেখককে অবশ্যই তার পাঠকদের জানাতে হবে এই সরঞ্জামটি তার তৈরি বিষয়বস্তুতে কতোটুকু অবদান রেখেছে। আমার এটা বলার কারণ তাদের তৈরি বিষয়বস্তুর কপিসত্ত্ব করার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলি ত্রুটিপূর্ণ। তারা পক্ষপাতদুষ্ট মডেল অনুলিপি করতে গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের ভবিষ্যদ্বাণীতে ভুল করে। সাংবাদিকরা শুধু গবেষণা পরিচালনা বা বিপুল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করতে কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারকারীদের সবসময় এই ত্রুটিগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
জনসন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিরোধী না হলেও তিনি স্বীকার করেন এটির ব্যবহার অনিবার্য এবং সাংবাদিকদের অবশ্যই এর ভেতরে ঢুকতে হবে:
La révolution de l'IA par rapport au journalisme est une question émergente qui n'a pas reçu l'attention qu'elle mérite dans les salles de rédaction en Afrique, et le fait d'avoir l'occasion d'améliorer mes compétences à cet égard, me donne une longueur d'avance.
সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লব একটি উদীয়মান সমস্যা যা আফ্রিকীয় নিউজরুমগুলিতে যথাযথ মনোযোগ পায়নি। এক্ষেত্রে আমার দক্ষতা উন্নত করার সুযোগ থাকা আমাকে একটি সুবিধাজনক স্থানে রাখে।
কেনীয় সম্প্রচার সাংবাদিক ও পডকাস্টকারী সিসিলিয়া মন্ডু বলেছেন:
Grâce à cette rencontre, j’ai appris que l’IA n'est pas toujours factuelle et qu'elle est en quelque sorte “raciste” en raison des algorithmes qui lui ont été imposés. J'utiliserais l'IA pour m'aider à en savoir plus sur la thématique sur laquelle je travaille, et sur ce que je veux écrire, mais je ne dépendrai pas d'elle.
এই সম্মেলনকে ধন্যবাদ যে আমি জেনেছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবসময় বাস্তবসম্মত নয় এবং এটি তার পাওয়া অ্যালগরিদমের কারণে কিছুটা “বর্ণবাদী।” তাই আমি যে বিষয়ে কাজ করছি এবং যা নিয়ে লিখতে চাই সেই বিষয়ে আরো জানতে আমি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করলেও আমি এর উপর নির্ভর করবো না।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিরোনাম তৈরি করা পুরোপুরি শেষ করেনি সেটা স্পষ্ট হলেও বিশেষ করে বড় বড় প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ থাকা আফ্রিকাতে গণমাধ্যমের প্রস্তুতি মূল সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। নৈতিক উপায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জামগুলি গ্রহণ করতে আফ্রিকীয় নিউজরুমগুলি কি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে?