পরাধীনতা পর্যবেক্ষক প্রতিবেদন: ফিলিপাইন

ছবির সৌজন্যে অমেয়া নাগরাজন

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে। এই অংশটি পরাধীনতা পর্যবেক্ষকের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসা ফিলিপাইন সম্পর্কিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের নির্বাহী সারাংশ। এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

প্রাক্তন স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসকে ১৯৮৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে, ফিলিপাইনে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি পুনরুদ্ধার করা হয়। তার মানে এই নয় যে ফিলিপাইনের জনগণ তখন থেকেই মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পেরেছে।

মার্কোসের নামসর্বস্ব ছেলে ২০২২ সালের মে মাসে ব্যাপক বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা, ভোট কেনা ও নির্বাচনী জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন (নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগে কালিমালিপ্ত)। মার্কোস জুনিয়র তার পিতার মতোই কর্তৃত্ববাদের পথ ধরলেও সেটা আরো ভালভাবে অর্থায়নসহ মিথ্যাতথ্যের তেলযুক্ত ডিজিটাল প্রতারণাপূর্ণ।

গত ছয় বছরে দুতার্তে ও মার্কোস জুনিয়র প্রশাসনের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া আইন প্রণয়নের ফলে ফিলিপাইনের নাগরিক স্থান সঙ্কুচিত হয়েছে। এগুলির মধ্যে ডিজিটাল নজরদারি ও “সন্ত্রাসবাদে উসকানি”র শাস্তির  বিধান সম্বলিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং সকল মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের তাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদানের সিম নিবন্ধন আইন রয়েছে৷

সামরিক আইনের প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই এই দুটি আইন জনগণের মধ্যে একটি শীতল প্রভাব তৈরি করে সকল প্রকার ভিন্নমত দমিয়ে রাখে। ফিলিপাইনে মানহানিকর আইনগুলি সমালোচনা এবং স্বাধীন গণমাধ্যম চর্চাকারীদের বিরুদ্ধে সশন্ত্র। পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুতার্তের অধীন পরিস্থিতির ধারাবাহিকতা হিসেবে নতুন মার্কোস জুনিয়র প্রশাসনের অধীনে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সংস্থার উপর হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ফিলিপাইনের জাতীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন (এনইউজেপি) ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত সংবা্দমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ৩৮টি ঘটনা রেকর্ড করেছে৷

ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের অন্যান্য রূপগুলির মধ্যে সরকারের কল্পিত শত্রুদের লাল-চিহ্নিতকরণ (ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে কমিউনিস্টদের মিত্র দাবির চর্চা) এবং সাইবার আক্রমণ যেমন বিস্তৃত পরিষেবা অস্বীকার (ডিডোস) এবং ওয়েবসাইট অবরোধ করা রয়েছে।

একটি সুশৃঙ্খল ও ভালভাবে তেলযুক্ত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার পাশাপাশি এই কৌশলগুলি ব্যবহৃত হয়। শিক্ষাবিদ জোনাথন ওং এবং জেসন ভিনসেন্ট ক্যাবানেসের ২০১৮ সালের সমীক্ষায় দেশটিকে ডিজিটাল বিভ্রান্তি “রোগ শূন্য” বিবেচনা করা হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে রাজনীতিবিদরা তাদের প্রচারের জন্যে ট্রল ভাড়া করতে লক্ষ লক্ষ পেসো (ফিলিপাইনের মুদ্রা) ব্যয় করে।

রাষ্ট্রপতিত্বের জন্যে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র তার প্রচারণার সময় তার পিতা প্রয়াত স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোস ও তার পরিবারের অর্জিত সম্পদ সম্পর্কে তথ্য বিকৃত করতে সামাজিক গণমাধ্যম মঞ্চ বিশেষ করে টিকটক, ইউটিউব ও ফেসবুকের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করেন। অন্যদিকে তার ট্রলগুলি ১৯৭২ থেকে ১৯৮৬ সালে তার পরিবারকে ক্ষমতাচ্যুত করা পর্যন্ত তার পিতার স্বৈরাচারী শাসনে্র নথি সংশোধনের চেষ্টাকারী এবং তার বিরোধীদের আক্রমণ করতো। বিশ্লেষকদের মতে এই প্রচুর অর্থায়িত মিথ্যাতথ্য প্রচারণার কারণে মার্কোস জুনিয়র রাষ্ট্রপতি পদে জিতেছেন।

বর্তমানে ক্ষমতাসীন মার্কোস জুনিয়র ভিন্নমত দমনের জন্যে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ চর্চা করেন। মানবাধিকার সুরক্ষকরা এই হুমকি এবং আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

পরাধীনতা পর্যবেক্ষক

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে।

ফিলিপাইন প্রতিবেদনের একটি পিডিএফ ডাউনলোড করুন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .