- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

হংকং গণগ্রন্থাগারগুলি থেকে রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বই পরিষ্কার করেছে

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, হং কং (চীন), আইন, নাগরিক মাধ্যম, বাক স্বাধীনতা, সেন্সরশিপ, জিভি এডভোকেসী
[1]

হংকং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। উইকিপিডিয়া ব্যবহারকারী ডাব্লিউপিসিপে’র  সৃজনী সাধারণ কৃতজ্ঞতা [2] ৩.০ আনপোর্টেড [2] অনুমতির অধীনে অনুমোদিত। উইকিমিডিয়া [1] সাধারণের মাধ্যমে পাওয়া।

হংকং সরকারের পক্ষ থেকে অসংখ্য সমালোচনা ও আক্রমণের পর দীর্ঘদিনের নিয়োগকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান মিংপাও কর্তৃপক্ষকে অবমাননার অভিযোগে এই মাসে প্রবীণ রাজনৈতিক কার্টুনশিল্পী জুনজিকে বহিষ্কার করে [3]। কিছুক্ষণ পরে নাগরিকরা বিশিষ্ট এই কার্টুনিস্টের সমস্ত বই স্থানীয় গ্রন্থাগার থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার কথা জানতে পারে।

আরো অনুসন্ধানের পরে স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলি আবিষ্কার করে ১৯৮৯ সালের তিয়ানানমেন চত্ত্বর দমনাভিযান [4] সম্পর্কিত প্রায় সমস্ত বই ও ভিডিও তথ্যচিত্রসহ রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের বেশিরভাগ বই গ্রন্থাগারের তাক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

মিংপাও তার রাজনৈতিক কার্টুনশিল্পী জুনজিকে বাদ দেওয়ার পর হংকং সরকার ৪০ বছর ধরে হংকংবাসীদের কাছে থাকা তার কাজগুলি গ্রন্থাগার থেকেও মুছে ফেলছে বলে মনে হচ্ছে:

গণগ্রন্থাগার পরিচালনাকারী অবসর ও সাংস্কৃতিক পরিষেবা বিভাগ, জনসাধারণকে তাদের সেন্সর তালিকা সম্পর্কে অবহিত না করায়  গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলি শুধু গণগ্রন্থাগারের অনলাইন অনুসন্ধান ব্যবস্থার মাধ্যমে তদন্ত করতে পারে। তারা আবিষ্কার করে জুনজি ছাড়াও, নিম্নলিখিত লেখকদের সমস্ত সংগ্রহ স্তুপ থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এখানে আপাতদৃষ্টিতে সরানো সমালোচকদের একটি অসম্পূর্ণ তালিকা রয়েছে:

ভ্রমণ বিবরণী, শিক্ষা সংক্রান্ত বই ও রাষ্ট্রীয় সমালোচকদের লেখা মৌখিক ইতিহাসসহ অসংখ্য অরাজনৈতিক প্রকাশনাও গ্রন্থাগারের তাক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

একটি জাতীয় নিরাপত্তা নিরীক্ষা

মিংপাওর একটি অনুসন্ধান অনুসারে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গ্রন্থাগারর তাক থেকে রাজনীতির প্রায় ৪০ শতাংশ [21] বই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

গত মাসে নিরীক্ষা কমিশন শহরটির গণগ্রন্থাগারের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গণগ্রন্থাগার পরিচালনাকারীকে “প্রকাশ্যভাবে বিরোধাত্মক” বইগুলি পর্যালোচনা জোরদার করে [22] সেগুলি তাক থেকে সরানোর পরামর্শ দিয়েছে।

মিংপাওয়ের তদন্ত অনুসারে একমাসের মধ্যে গ্রন্থাগারগুলি ১৯৮৯ সালের তিয়ানানমেন দমনাভিযান সম্পর্কে অবশিষ্ট ৪৬টি আইটেমের মধ্যে ৪৫টি [21] সরিয়ে ফেলেছে।

বিতর্কের প্রতিক্রিয়ায় শহরটির নিরাপত্তা প্রধান ক্রিস ট্যাং জোর দিয়ে বলেছেন [23] “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা প্রতিটি আলাদা আলাদা বিভাগ ও ব্যুরোর জন্যে উচ্চ গুরুত্বের বিষয়।”

বই শুদ্ধিকরণ এতটাই স্বেচ্ছাচারী যে এমনকি সরকারের নির্বাহী কমিটির সদস্য রনি টংসহ সংস্থাপন্থী কিছু ব্যক্তিত্বও সেন্সরকে সমস্যাযুক্ত বলে মনে করে: 

ইতোপূর্বে জেতো ওয়াহ সম্পর্কে প্রশংসাকারী নির্বাহী কমিটির সদস্য রনি টং জেতোর কোনো আইনবিরুদ্ধ কথা খুঁজে না পাওয়ার কথা বলে “স্ব-সেন্সরের” বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। এছাড়াও তিনি নিজেই বইটির একটি কপি পাওয়ার কথা বলেছেন।

টুইটার ব্যবহারকারী রিকা কেভো দক্ষিণ চীন মর্নিং পোস্টে প্রাক্তন সরকারি সংরক্ষণাগার পরিচালক সাইমন চুয়ের মন্তব্য তুলে ধরেছেন: 

অরাজনৈতিক – নিষিদ্ধ বলে অন্যান্য বিষয়ে #বিশ্বাস অর্জনে অসুবিধা হতে পারে,” বলে তিনি বিশ্বাস নির্মাণে বছরের পর বছর লাগলেও এক মুহূর্তে সেটা ভেঙ্গে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।

হংকংয়ের গণগ্রন্থাগারগুলি তিয়ানানমেন স্কয়ার দমনাভিযান সম্পর্কিত বেশিরভাগ বই সরিয়ে ফেলেছে।

নির্বাসিত রাজনৈতিক কার্টুনশিল্পী আহ তো (টুইটার ব্যবহারকারী @এইচকেপোস্টার৭৭৭ এর মাধ্যমে) চীনা শব্দ কেন্দ্রীয় 中央কে সিসিপি 中共 এবং বই 圖書-এ পরিবর্তনের মাধ্যমে “হংকং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার” এর নাম পরিবর্তন করে “হংকং চীনা কমিউনিস্ট পার্টি পুস্তক কসাইখানা” করে তার সর্বশেষ শিল্পকর্মের মাধ্যমে রাজনৈতিক সেন্সরের নিন্দা করেছেন:

তাক থেকে তুলে ফেলে, নিষিদ্ধ করে, মানুষের মন থেকে আটকানো যাবে না! এরকম নিষেধাজ্ঞা বা মুছে ফেলা মানুষের হৃদয় থেকে কিছু মুছতে পারে না!

অংকন @আহ_তো_হংকং