- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

রাজনৈতিক কার্টুনে দেখা থাইল্যান্ডের আসন্ন নির্বাচন

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, ইতিহাস, নাগরিক মাধ্যম, নির্বাচন, রাজনীতি, শিল্প ও সংস্কৃতি, Thailand's 2023 election: Continuity or change?
Thai election [1]

সূত্র: স্টেফ – প্রচাতাই, অনুমতিসহ ব্যবহৃত

থাইল্যান্ডের ১৪ মে’র নির্বাচনের আগে সামরিক-সমর্থিত সরকার প্রণীত ২০১৭ সালের সংবিধানে নির্ধারণ করা নিয়মে একটি নির্বাচনে [2] প্রাথমিক ভোটদান ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে৷ জান্তাপন্থী নেতাদের জন্যে সিনেটের আসন নিশ্চিত করা নতুন সাংবিধানিক বিধানের কারণে এই মাসের নির্বাচনটি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নাও করতে পারে বলে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও পর্যবেক্ষণকারীরা উদ্বিগ্ন।

উপরের কার্টুনটি ভোটাররা তাদের ভোট দিলেও ফলাফল পছন্দ না হলে সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপের জন্যে আবার প্রস্তুত হওয়ার একটি দৃশ্য চিত্রিত করে। এটি গত শতাব্দীতে সামরিক বাহিনীর ১২টি সফল অভ্যুত্থানের প্রতিফলন করে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে জেনারেল প্রুয়ুত চান-ও-চার নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানে [3]র পর তিনিই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রয়ে গেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচনের চেষ্টা করছেন।

প্রয়ুত ২৫০ জনের প্রত্যেকটি সিনেটর নিযুক্ত করার পরে ২০১৯ সালে জয়ী হলে তারা তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয়। তার উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রবিত ওংসুওনও প্রার্থী হওয়ায় এবছর তার সমান সংখ্যক ভোট প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই। দুই সপ্তাহ আগে একটি প্রাক-নির্বাচন জরীপে [4] প্রয়ুত ও প্রবিতের দল জনসমর্থনের দিক থেকে বিরোধী প্রার্থীদের পিছনে রয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণায় একটি মূল বিষয় হলো রাজকীয় মানহানি আইন [5] (লেসে-ম্যাজেস্তে বা ফৌজদারি আইনের ১১২ ধারা) সংশোধন বা বাতিল করার প্রস্তাব। বিরোধী বাহিনী জোর দিয়ে বলেছে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে আইনটির সংস্কার ও এর প্রয়োগের ধরন নির্ধারণ করা প্রয়োজন। প্রয়ুত সরকার বিশেষ করে ২০২০  সালে যুব-নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র আন্দোলনে [6]র উত্থানের পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বী ও সক্রিয় কর্মীদের আটক করতে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করেছে।

অনলাইনে স্টেফ [7] নামে বেশি পরিচিত ব্যাংকক-ভিত্তিক শিল্পী স্টিফেন পেরে [7] নতুন সরকারকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে তা উল্লেখ করেছেন। গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে একটি ইমেল সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন:

কর্তৃপক্ষের লেস-ম্যাজেস্তের বাড়াবাড়ি ব্যবহারের কারণে অনেক তরুণ ভোটার মৌলবাদী হয়ে উঠেছে। তাই তাত্ত্বিকভাবে আমরা কিছু পরিবর্তন ও সংস্কার আশা করতে পারি। কিন্তু বাস্তবে শাসনের জন্যে মুভ ফরোয়ার্ড এবং ফেউ থাই দলের প্রত্যাশিত জোটটি সামরিক, অভিজাত ও রক্ষণশীল প্রশাসনকে বিযুক্ত করতে না পারলে আমাদের আরেকটি অভ্যুত্থানের ঝুঁকি নিতে হবে।

মুভ ফরওয়ার্ড [8] এবং ফেউ থাই [9] বর্তমানে বিরোধী দল।

সরকার রাজকীয় মানহানি আইন বাস্তবায়নে আরো আগ্রাসী হওয়ার পরে স্টেফ তার মতো কার্টুনশিল্পীদের অসুবিধার অভিজ্ঞতাগুলি ভাগাভাগি করেছেন:

থাই গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সম্পাদকীয় কার্টুনশিল্পীদের সতর্ক থাকতে হয়। আমরা সামরিক বাহিনী বা লেস ম্যাজেস্তে আইনের সমালোচনা করতে পারলেও আমরা শুধু রাজতন্ত্রের সমালোচনা করতে পারি না, এটি বিশাল একটি ‘না!’ ফলে আমাদের নিজেদেরকে আত্ম-সেন্সর করতে হয় যা কোনো শিল্পী বা রাজনৈতিক কার্টুনশিল্পীর কখনোই ভাল লাগে না।  তবে আমি শেষ পর্যন্ত বলব এটি কোনো বড় বিষয় নয় – কারণ আমরা বলার জন্যে (শেষ পর্যন্ত) কোনো একটা উপায় খুঁজে বের করি।

স্টেফ ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ডে বেসামরিক শাসন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রচারণার চিত্র তুলে ধরছেন।

তার “গণতান্ত্রিক মুরুভূমি পেরিয়ে” শিরোনামের কার্টুনটিতে ব্যাংককের বিশিষ্ট “গণতন্ত্রের স্মৃতিস্তম্ভ [10]“কে একটি মরুভূমিতে জান্তা-অধ্যুষিত সিনেট, সরকারের বিভিন্ন শাখায় সামরিক প্রভাব, বিরোধীদের উপর দমনাভিযান ও সমালোচনা থামানোর জন্যে রাজকীয় মানহানি আইনের ব্যবহারের মতো বিভিন্ন বাধা পেরিয়ে একটি “মরুদ্যানে” (নির্বাচনে) পৌঁছাতে দেখা যায়। এছাড়াও কার্টুনটি ২০২০ সালের বিক্ষোভের সময় জনপ্রিয় তিন আঙুলের সেলাম [11] দিয়ে গণতন্ত্রপন্থী মতাদর্শের জন্যে নিহত বা কারাগারে বন্দী বিক্ষোভকারী ও সক্রিয় কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

স্টেফের কার্টুন: ‘গণতান্ত্রিক মরুভূমি পেরিয়ে’

স্টেফের আরেকটি কার্টুন সামরিক বাহিনীকে গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বকারী একজন জাদুকরের পথ অবরোধ করা একটি টাইটান হিসেবে চিত্রিত করেছে। ছবিটি হলিউডের “দ্য লর্ড অফ দ্য রিংস: দ্য ফেলোশিপ অফ দ্য রিং” সিনেমায় জাদুকর গ্যান্ডালফের মন্দের মূর্ত প্রতীক বালরোগ রাক্ষসের সাথে লড়াইয়ের একটি বিশিষ্ট দৃশ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

তুমি আর জিতবে না? @পিতা_এমএফপি @পিয়াবুতর_এফডাব্লিউপি @সুরানন্দ @প্রচাতাই_ইংরেজি @প্রভিতআর @সান্তিসুদা @পেদ্রোলেত্তি

এদিকে অরুণ ওয়াচরাসাওয়াতের একটি কার্টুন জাতির অবস্থাকে প্রয়ুত ও প্রবিতের নেতৃত্বের ইঙ্গিত দেয়া একটি ভেঙে পড়া বাড়ির সাথে তুলনা করেছে।

খাওসোদ ইংলিশের একটি সহযোগী প্রকাশনা ম্যাটিচনের জন্যে অরুণ ওয়াচরাসাওয়াতের আরেকটি রাজনৈতিক কার্টুনে #থাইল্যান্ডের একটি বাড়ির উপরের তলায় জেনারেল প্রয়ুত ও নীচের তলায় জেনারেল প্রবিত ওংসুওয়ানকে দেখানো হয়েছে। ক্যাপশনে লেখা: “[ক্ষমতার] ৮ বছর।” #থাইল্যান্ডে_কি_ঘটছে

আরেকটি কার্টুনে অভ্যুত্থানের নেতা থেকে সেনা-সমর্থিত সরকারের প্রধানে রূপান্তরিত প্রয়ুত এবং পুনরায় তার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে।

প্রাক্তন জান্তা নেতা জেনারেল প্রয়ুতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে খাওসোদ ইংলিশের সহযোগী পত্রিকা ছুটিরদিনের ম্যাটিচনের জন্যে অরুণ ওয়াচরাসাওয়াতের রাজনৈতিক কার্টুন। উপরের ঘরের ক্যাপশনে “আগে,”  তারপরে মাঝের ঘরে “আজ” এবং নিচের ঘরে “এখন থেকে” লেখা আছে। #থাইল্যান্ড #เลือกตั้ง66 #ประยุทธ์