‘জল সংগ্রহ”: আদিবাসী বলিভীয় নারীরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জৈব কৃষি প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে

টিমবয় টিগুয়াজু সম্প্রদায়ের কৃষি-বাস্তুতান্ত্রিক বাগান। ছবি: তারিজার উন্নয়নে আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র (সিইআরডিইটি), বলিভিয়া

একটি গণমাধ্যম চুক্তির অধীনে বলিভিয়ার মুয় ওয়াসো প্রকাশিত রোসিও কোরালেসের নিবন্ধটি গ্লোবাল ভয়েসেসে সম্পাদিত ও পুনঃপ্রকাশিত।

বাজারে যাওয়া, মুদি কেনা ও খাবার তৈরি সহজ কাজ না হলেও বলিভীয় চাকোতে: প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শহুরে কেন্দ্রগুলি থেকে অনেক দূরে জল ছাড়া বসবাস করা আরো বেশি কঠিন কাজ।

এই প্রেক্ষাপট বলিভিয়ার চাকোর বাসিন্দাদের বিশেষ করে এর আদিবাসী সম্প্রদায়ের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বিগত বছরগুলিতে বলিভিয়ার চাকো গুরুতর মাত্রায় খরা আক্রান্ত।

গ্রান চাকো আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া ও ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশজুড়ে বিস্তৃত দক্ষিণ আমেরিকার একটি অঞ্চল। এটি নিজস্ব স্বকীয় বাস্তুতন্ত্র চিহ্নিত সর্বশ্রেষ্ঠ জীববৈচিত্র্যসহ এলাকাগুলির একটি। গুয়ারায়োস, আয়োরিওস, চিকুইতানোস এবং গুরানির মতো বেশ কিছু আদিবাসী সম্প্রদায় এই অঞ্চলে বাস করে।

জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাবিত গ্রান চাকো সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ধ্বংসাত্মক দাবানল ও মারাত্মক খরা আক্রান্ত যা জনগণের জল ও খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ার মতো জলবায়ু সংকটের স্থানীয় প্রতিক্রিয়া হিসেবে দক্ষিণ বলিভিয়ার তরিজা বিভাগের টিমবয় টিগুয়াসুর গুয়ারানি সম্প্রদায় ২০২২ সালে টেকসই খাদ্য উৎপাদনের একটি মডেল বাস্তবায়ন করেছে।

স্বাস্থ্যকর ও আরো পুষ্টিকর খাদ্যের জন্যে এই সম্প্রদায়ের ১২০ জনেরও বেশি গুরানি নারী খাদ্যের জৈব উৎপাদনে নেতৃত্ব দিয়েছে। সম্প্রতি তারা তাদের বাগানে প্রতিদিন কাজ করে আট ধরনের উদ্যানজাত ফসল সংগ্রহ করে পাত্রে ঢেলে দেয় এবং থালায় পরিবেশন করে।

শস্য ব্যবস্থাপনা পরিবার-কেন্দ্রিক ও স্থিতিস্থাপকতা তৈরির উপায় হিসেবে বহুবিধ-চাষের উপর জোর দেয়। জমির টুওকরোগুলিতে প্রতিটি সারিতে বিভিন্ন ধরনের সব্জি রয়েছে।

ফসলের এই বন্টন কীটনাশক ব্যবহার না করেই ৮৭ শতাংশ কীটপতঙ্গ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।

টিমবয় টিগুয়াজু সম্প্রদায়ের কৃষি-বাস্তুতান্ত্রিক বাগান। ছবি: তারিজার উন্নয়নে আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র (সিইআরডিইটি), বলিভিয়া

জল সংগ্রহ পারিবারিক চাষাবাদের মিত্র

উপরন্তু কৃষি উৎপাদনশীল একটি আদর্শের এই প্রস্তাবটি দক্ষ জল ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা ঋতু অনুসারে বৃষ্টির জল সংগ্রহ, সঞ্চয় ও বন্টনে জড়িত।

গর্ত খনন করে বৃষ্টির জল সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পাইপের মাধ্যমে ছিটানো সেচ ব্যবস্থায় বৃষ্টির মতো করে মাটিতে জল বন্টন করা হয়।

“খাবার প্রস্তুত করার জন্যে শাকসবজিতে সম্প্রদায়ের প্রবেশাধিকার ছিল না। একটি কৃষি-বাস্তুতান্ত্রিক উৎপাদন আদর্শ ভিত্তিক এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দেখাতে পেরেছি জলবায়ু সংকট সত্ত্বেও চাকোতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য সংগ্রহ করা সম্ভব, “এই প্রকল্প এবং তারিজার উন্নয়নে আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রের (সিইআরডিইটি) রিকার্ডো পাইতা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে স্বাস্থ্যকর ও টেকসই খাদ্যের বিকল্প উৎপাদন, বন্টন ও ভোগের মাধ্যমে জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে কাজে লাগানো যেতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের একটি উদ্ভাবনী ও কার্যকর অভিযোজিত বিকল্প হিসেবে একটি সহনশীল কৃষি উৎপাদন আদর্শ বাস্তবায়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করেছে জলবায়ু কর্মের কণ্ঠস্বরের (ভিএসি) অংশীদারিত্বে ফুন্দাসিওন এভিনা

বর্তমানে শিক্ষাকেন্দ্র ও অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি এই উৎপাদন আদর্শের প্রতিলিপি করে টেকসই ও কীটনাশকবিহীন খাদ্য উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .