পরাধীনতা পর্যবেক্ষক প্রতিবেদন: ক্যামেরুন

ছবির সৌজন্যে অমেয়া নাগরাজন

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে। পরাধীনতা পর্যবেক্ষকের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসা প্রতিবেদনের ধারাবাহিক থেকে ক্যামেরুনের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ ও সেন্সর সম্পর্কে এই লেখাটি চয়িত। এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

ক্যামেরুন ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ আক্রান্ত একটি দেশ। ক্যামেরুন সরকার ইন্টারনেট ও অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার সীমিত করার পাশাপাশি নাগরিকদের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল সরঞ্জামগুলি ব্যবহার করছে।

ক্যামেরুনের গণতন্ত্র ও জনজীবনের উপর প্রযুক্তির বড় প্রভাব রয়েছে। স্মার্টফোন ও সামাজিক গণমাধ্যমের ব্যাপক ব্যবহার রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মীদের আরো কার্যকরভাবে সংগঠিত করতে এবং তাদের বার্তাগুলিকে আগের চেয়ে আরো বেশি মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম করলেও, এটি মিথ্যা- এবং অপতথ্য ছড়ানোর সুযোগও খুলে দিয়েছে যা জাতিগত মেরুকরণ ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা বৃদ্ধি করতে পারে। ইন্টারনেট ঘৃণামূলক বক্তব্যের জন্যে আরো বেশি সামাজিক বিভাজনের দিকে ধাবিত একটি মঞ্চও সরবরাহ করেছে।

সামাজিক গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণের অভাব নাগরিকদের পক্ষে সত্য বোঝা ও সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন করে ব্যক্তিদের মিথ্যা তথ্য ভাগাভাগি ও ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানো সহজ করে তুলেছে। কেন্ডি গিকুন্ডার মতে ইংরেজিভাষী ক্যামেরুনবাসীদের একত্রিত করতে সামাজিক গণমাধ্যমের ব্যবহার হিংসা ও অবিচারকে অপব্যবহার ও উন্মোচনের একটি হাতিয়ার হয়ে ওঠে। ক্যামেরুনে ঘৃণামূলক বক্তব্য রাজনৈতিক ও বস্তুগত উদ্দেশ্য (যেমন, মতামত মেরুকরণ, বিরোধীদের দানবীয় করা, হতাশা ও ঘৃণার অনুভূতি বাড়িয়ে তোলা, এবং হিংসাত্মক পদক্ষেপের আহ্বান) অর্জনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে (গিকুন্ডা)।

এছাড়াও ভুয়া খবরের ব্যাপকতা ও অনলাইন হয়রানি নারীদের প্রকাশ্য আলোচনায় অংশগ্রহণ কঠিনতর করে তুলেছে। এটি জনজীবন ও রাজনীতিতে নারীর প্রতিনিধিত্বকে আঘাত করেছে।

সরকার ইন্টারনেটসহ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত ও নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কিছু আইন ও প্রবিধান বাস্তবায়ন করেছে। ক্যামেরুনের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট মিনপোস্টেল সাইবার নিরাপত্তা ও সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত আইন অনুসারে কেউ মিথ্যা খবর প্রকাশ করলে তার জেল ও জরিমানা হবে। মিথ্যা খবর প্রকাশ জরিমানা ও দণ্ডনীয় বলে এমটিএন এবং অরেঞ্জের মতো মোবাইল ফোন ও ডেটা পরিষেবা প্রদানকারী ব্যবহার করে সরকারের জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এজেন্সির (এএনটিআইসি) পাঠানো বার্তাটি সতর্কবাণীর মতো শোনায়।

রাষ্ট্রের নজরদারি একটি প্রকাশ্য গোপনীয়তা — সরকার ভিন্নমতাবলম্বীদের চিহ্নিত ও লক্ষ্যবস্তু, কার্যকলাপ নিরীক্ষণ, এমনকি অনলাইনে মত প্রকাশের জন্যে জনগণকে গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। ইংরেজিভাষী অঞ্চলে ২০১৭ সালে ইন্টারনেট বন্ধ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় ইন্টারনেট সীমিতকরণ ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের স্পষ্ট হাতিয়ার।

এছাড়াও সরকার অনলাইন মত প্রকাশের জন্যে সাংবাদিক, ব্লগার ও অন্যান্য নাগরিকদের গ্রেপ্তার, আটক বা এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখীসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতা দমন করার জন্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে। সরকার তার নিজস্ব বার্তা প্রচার ও বিরোধী মতামত সেন্সর, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী নিপীড়ন করতে এবং নির্দিষ্ট জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকদের লক্ষ্য করে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।

সরকার জনশান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানকারী, দেশের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও ভাবমূর্তির অভিভাবক, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার মতো যুক্তি ব্যবহার করে তার সুরক্ষক ভূমিকার মাধ্যমে  ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদকে শক্তিশালী করে বলে মনে হয়। ইংরেজিভাষী অঞ্চলে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ইন্টারনেট বিঘ্নের ধারাবাহিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলেও বিপরীতক্রমে, অধিকার গোষ্ঠী, সুশীল সমাজ ও সক্রিয় কর্মীরা স্বাধীনতা ও অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে সরকারি পদক্ষেপের নিন্দা করে।

এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।

পরাধীনতা পর্যবেক্ষক

গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে।

ক্যামেরুন প্রতিবেদনের একটি পিডিএফ ডাউনলোড করুন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .