- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

মানবিক ও ডিজিটাল অধিকার সমুন্নত রাখতে থাই রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী আচরণবিধিতে স্বাক্ষর

বিষয়বস্তু: পূর্ব এশিয়া, থাইল্যান্ড, নাগরিক মাধ্যম, নির্বাচন, মানবাধিকার, রাজনীতি, সরকার
Election pledge of parties [1]

রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ গোষ্ঠী ও অন্যান্য অংশীজনের ৩১টি প্রতিনিধি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ও প্রতিশ্রুত নীতি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি প্রচার ও এগিয়ে নিতে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। ছবির কৃতজ্ঞতা মানবাধিকার সংলাপ কেন্দ্র

মূলত একটি অলাভজনক গণমাধ্যম, প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতি সংস্থা এনগেজমিডিয়ায় প্রকাশিত এই নিবন্ধ [1]টি গ্লোবাল ভয়েসেসের সাথে একটি বিষয়বস্তু ভাগাভাগি করার চুক্তির অংশ হিসেবে এর একটি সম্পাদিত সংস্করণ এখানে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে৷

অসংখ্য থাই রাজনৈতিক দল “২০২৩ সালের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের আচরণবিধি” এবং “জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির ২০২৩ সালের প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার” নামে দুটি নথিতে স্বাক্ষরের জন্যে ২০ মার্চ, ২০২৩ তারিখে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আহ্বান করে। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটিতে দলগুলি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা এবং মানবিক ও ডিজিটাল অধিকারের সুরক্ষাসহ সম্মিলিতভাবে তাদের প্রতিশ্রুত নীতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ভাগাভাগি করেছে।

নির্বাচন কমিশন দপ্তর এবং গণতান্ত্রিক সংবিধান পার্টি, শান্তি ও সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, গণতন্ত্র ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক ফাউন্ডেশন, আমরাদেখি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক ২০২৩, উইভিস, প্রাইদি বানোমইয়ং ফাউন্ডেশন, মানবাধিকার সংলাপ কেন্দ্র (এইচডি), নারী রাজনৈতিক নেতৃত্ব কর্মসূচি, সিওএফএসি থাইল্যান্ড, জাতীয় সংবাদমাধ্যম পর্ষদ, থাইল্যান্ডের সাংবাদিক সমিতি, ভোক্তা সংস্থা পর্ষদ এবং থাইল্যান্ডের সরকারি সম্প্রচার পরিষেবাসহ সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম সংস্থাগুলির একটি জোট যৌথভাবে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে।

এনগেজমিডিয়া, এশিয়া সেন্টার [2] এবং চিয়াং মাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ পাবলিক পলিসি [3]র তৈরি রাজনৈতিক দলগুলির চার-দফা ডিজিটাল অধিকার আলোচ্য [4] প্রতিবেদনটি সেখানে উল্লিখিত একইধরনের ডিজিটাল অধিকার সমস্যা সংক্রান্ত আচরণবিধি (সিওসি) এর “নির্বাচনী প্রচারণায় সামাজিক গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ব্যবহার” অংশে অবদান রাখার মতো একটি মূল্যবান সম্পদ।

থাইল্যান্ডের এনগেজমিডিয়া ডিজিটাল অধিকার প্রকল্প কর্মকর্তা প্রপাসিরি সুত্তিসোম অনুষ্ঠানের সময় সাক্ষী স্বাক্ষরদাতা হিসেবে সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করেন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা আচরণবিধিতে স্বাক্ষর করে। গণতান্ত্রিক সংগঠন, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের একটি নেটওয়ার্ক রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণবিধি মেনে চলা এবং নির্বাচনের পর দলগুলির প্রতিশ্রুতি পালন পর্যবেক্ষণ করার জন্যে একটি প্রক্রিয়া তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করবে। লক্ষ্য হলো সহিংসতা ছাড়াই একটি সৎ ও অবাধ নির্বাচন এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক মীমাংসার পথ প্রশস্ত করা।

Signing of pledge by EngageMedia [1]

নির্বাচনী প্রচারাভিযান আচরণবিধি স্বাক্ষরের সময় সাক্ষী স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে থাইল্যান্ডের এনগেজমিডিয়া ডিজিটাল অধিকার প্রকল্প কর্মকর্তা প্রপাসিরি সুত্তিসোম এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক আমরাদেখি’র একজন প্রতিনিধি ছিলেন।

গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রচার

থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের মহাসচিব সাওয়েং বুনমি’র মতে আচরণবিধি স্বাক্ষর হলো সৎ ও সুষ্ঠুভাবে প্রতিনিধি পর্ষদ সদস্যদের নির্বাচন নিশ্চিত করার একটি উৎসাহব্যঞ্জক চিহ্ন। স্বাক্ষরানুষ্ঠানটি নাগরিক সমাজের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ারও ভিত্তি স্থাপন করে যা থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশনের সবার জন্যে গণতন্ত্রকে উন্নীতকরণ মিশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। অনুষ্ঠান চলাকালে সাওয়াং তাদের সমর্থনের জন্যে সংস্থাগুলির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে “প্রতিনিধি পর্ষদ ২০২৩ সদস্যদের নির্বাচনের জন্যে নৈতিকতা” বিকাশে তাদের অবদানকে স্বীকার করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবে।

অনুষ্ঠান চলাকালে গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক জোটের সভাপতি ও প্রাক্তন ইসিটি গোথম আরেয়া বলেছেন একটি স্বচ্ছ, ন্যায্য ও উদ্ভাবনী নির্বাচনের জন্যে কাজ করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থার সহযোগিতার ফলে নির্বাচনী প্রচারণার নীতিমালা ও রাজনৈতিক দলগুলির অঙ্গীকারনামা তৈরি সম্ভব হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারবিধি রাজনৈতিক প্রচারণার জন্যে অনলাইন ও বাস্তব যোগাযোগের একটি স্থান তৈরির লক্ষ্যে “নির্বাচনী প্রচারাভিযানে সামাজিক গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ব্যবহার” এবং “নারী এবং লিঙ্গ-বান্ধব নির্বাচনী প্রচারণা” এর মতো নতুন মানদণ্ডও তৈরি করে। বিধিটি মানুষের মর্যাদা ও অধিকারের প্রতি সম্মানের বিষয়ে নতুন রাজনৈতিক মানও প্রতিষ্ঠা করে।

তদুপরি, প্রচারণার নৈতিকতা শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের কঠোর পর্যবেক্ষণের ভিত্তি স্থাপন করবে। “জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির ২০২৩ সালের প্রতিশ্রুতি”-তে রাজনৈতিক দলগুলি একমত হয়েছে “যারাই সরকার গঠন করুক, কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে সেজন্যে স্থিতিশীলতা তৈরি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে একসাথে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” এর মধ্যে দক্ষিণ সীমান্ত প্রদেশে শান্তি আলোচনা, স্থানীয় এলাকায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, মানবাধিকার ও একত্রীকরণের প্রচার, বিশেষ করে অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস, সুবিধাবঞ্চিত ও বয়স্কদের যত্ন নেওয়া, অনানুষ্ঠানিক কর্মীদের সমস্ত দলকে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যাপক ও যত্নশীলভাবে প্রবেশ করতে উৎসাহিত করা এবং কর্তৃপক্ষের অপব্যবহার রোধে কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

মাহিদোল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবাধিকার ও শান্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন পরিচালক ও গণতান্ত্রিক সংবিধান জোটের প্রতিনিধি একাপন পিন্থাভানিচ রাজনৈতিক দলগুলোর তাদের প্রতিশ্রুতি ও প্রচারাভিযানের বিধি মেনে চলা পর্যবেক্ষণের জন্যে গণতান্ত্রিক সংগঠন, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের একটি নেটওয়ার্কের একত্রে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানটি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নাগরিক প্রযুক্তি উদ্যোগ উইভিসের প্রতিনিধিত্বকারী থানিসারা রুয়াংদেচ “প্রতিশ্রুতি অনুসরণকারী [5]” মঞ্চটিকে তুলে ধরে বলেছেন এটি প্রতিটি পক্ষের প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতি এবং তাদের নীতিমালা ও অঙ্গীকার ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্যে তৈরি করা হয়েছে। কোফ্যাক থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সুপিনিয়া ক্লাংনারং নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক ভুল তথ্য নিরীক্ষণ এবং একটি সত্য-ভিত্তিক রাজনৈতিক যোগাযোগের জায়গা তৈরি করার লক্ষ্যে যৌথ বাস্তব-যাচাই প্রকল্প ফ্যাক্টকোলাবটিএইচ [6] নিয়ে আলোচনা করেছেন। সবশেষে প্রাইদি ব্যানোমিয়ং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও গণতান্ত্রিক সংবিধান জোটের প্রতিনিধি সহযোগী অধ্যাপক আনুসর্ন তামাজাই একটি স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণ ও জাতির উপকারের জন্যে তাদের প্রচারণায় তাদের নীতিমালা ও প্রতিশ্রুতি সমন্বিত করতে উৎসাহ দেন। এর সাথে তিনি গণতান্ত্রিক নীতি ভিত্তিক একটি সংবিধান থাকার গুরুত্ব এবং থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশনের মতো একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনী সংস্থার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।

এখানে [4] চার দফা ডিজিটাল অধিকার আলোচ্যের পুরো পাঠ্য পড়ুন এবং এখানে [7] প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আরো জানুন।